সাম্প্রতিক

6/recent/ticker-posts

তৈমুর খান

 

 



গুচ্ছ কবিতা 


রক্তদান

 

রোজ রাতে পুরোনো ভালবাসা ডাকে
রোজ রাতে তার কাছে যাই
একটা চাঁদ ক্রমশ ক্ষয় হতে থাকে
চিৎকারগুলি স্তব্ধ হয়
বাঁশি ভেসে যায় জল ঢেউয়ে

অন্ধকারের মুখোমুখি চুম্বন এসে বসে
জমাট মেঘে লুকোনো আকাল
ঠোঁটের পাপড়িতে আলোদাগ
যন্ত্রণা ঘুমায় এখন
পাশ ফেরে লক্ষ্যভ্রষ্ট অনুতাপ

সত্যকে কেউ কি জানতে পারে ?
এখনো রাস্তায় হেঁটে যায় ভালবাসা
যদিও পুরোনো , যদিও সাবেক
পোশাকে আশাকে তাকে চমৎকার লাগে

রক্ত দিতে হয় রোজ রাতে
রক্ত দিতে দিতে বৃদ্ধ হতে থাকি
 


দূর্বার জন্য দশ লাইন


দূর্বাকে চিনতাম আমি
এ দিঘির পাড়ে সে আমারই পড়শিনি
হাসি ছড়িয়ে দিয়ে যেত রোজ
তার হাসিতে হাসত ব়জনী
আমরা কুড়োতাম স্বপ্নে সেই রোদ

দূর্বা এখন শুধু ঘাস
সবুজ রঙের আলতায় বেশ তাকে মানায়
বৃষ্টির ভালবাসা পেলে
নিজেকে নতুন সাজে সাজায়
দূর্বাকে রক্ষা করা আমাদের কাজ

 

সম্বরণ


 কী কী সম্বরণ দরকার ভেবে নিতে হবে

ফুল বাগানের পাশে কুয়ো
আজও তার ধারে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি
জল তুলে নেওয়া উচিত কিনা
ভাবতে ভাবতে তৃষ্ণা বড়ো বিপথগামী
বিকল্প রাস্তার খোঁজে চেয়ে থাকি
দূরের আলোয় কিছু কিছু মোহ
ডাকতে থাকে
ওই কি প্রকৃত আলো তবে
 
আমাদের পৃথিবীর অন্ধকার পথে
 ?
বিকেলে বাঁশিব় সুর
ক্লান্তির উপর মেঘ নামায়
আহা ! নামুক নামুক মেঘ
বৃষ্টিকে পরকীয় পুলক ভেবে নিই
আর ঈশ্বরের পদধ্বনি শুনি


      

     নিমন্ত্রণ


ভেজা গোলাপের মতো তুমি এলে

আমরা তখন দুর্ভিক্ষে পোড়া চাষি
ক্লান্তি আর অবিশ্বাস নিয়ে বসে থাকি
রাত্রির শকুন এসে ডাকে
চাঁদের আলোয় দীর্ঘ হয় মৃত্যুর ছায়া
আমরা তখন প্রতিরাতে মৃত্যুকে ভালবাসি

তোমার গোলাপের মতো ঘ্রাণ ছড়িয়ে গেলে
আমরা প্রথম নিমন্ত্রণ পাই
দূরে কোনও ভোজ সভার আলো জ্বলে ওঠে দেখি
আর থালা ভরে ভরে খেতে দিচ্ছে
কী সুন্দর জ্যোৎস্নামাখা ভাত
 !


      

       ঝিকিমিকি

      
ঝিকিমিকি চলে যাচ্ছে রাস্তায়
তাকে কি ডাকতে পারি
 ?
আমাদের কি ভাষা আছে ডাকার ?

কালি পড়া চোখ , ঘষা ঘষা লণ্ঠনের কাচ
ভালো করে দেখতে পাই না
আলোআঁধারের ডোরাকাটা দাগ

অনুভূতিগুলি সরীসৃপ হয়ে হাঁটে
ঘ্রাণ পাই
বিদ্যুতের মতো ধাঁধা আসে

ঝিকিমিকি চলে যাচ্ছে দুরন্ত শহরে
মৃত গ্রামে ডেকে উঠছে কাক
দূর্বাঘাসে শোক ঝরে পড়ে...

 

 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

2 মন্তব্যসমূহ