ছায়াসখ্য
একটি ঘোমটা মুখ
পেরোচ্ছে নদীপথে
জলে তার বে-রঙিণ ছায়া
থিরথির কাঁপে;
আঁচল হাওয়ায় দোলে
ছায়া ও শরীর পাঠ শেখে-
ভাসমানতার
পথটুকু পেরিয়ে গেলে
কায়া
জল ও বাতাস ফেরে নিজের
নৈঃশব্দ্যে
চিহ্নমাত্রেক নাই।
তেমনই আমাদের সখ্য
দুইটি ক্রেয়নরেখা সমান্তরাল
দেখা হয় অসীমে...
জন্মঋণ
অর্ধ অঙ্গে দৈবঋণ,
বাকি অর্ধে সকলই উসুল
পানপাত্রে মুখ দেখি
স্মিত মূর্চ্ছা সারল্য
কুসুম।
প্রাক জন্ম ছুঁয়ে আসি
শরবিদ্ধ পশুর চিৎকারে
ভ্রষ্টভ্রূণ জ্যোৎস্না
খায়
স্তব্ধ ওই ধান্যচরাচরে।
শ্বাসবায়ু দরজা খোলে
মূলাধারে তীব্র
অধিষ্ঠান
নৈরামণি মহাসুখ -
সহজ পথে হলে নিষ্ঠাবান।
নিজ জন্মে মুখ রাখি
গতপূণ্য মিথ্যা মনে হয়
তনুমধ্যা নষ্টরন্ধ্রে
জন্মদেবী পাতালে তলায়।
সেগুন কাঠের চেয়ার
ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা
সবসময়ে অসীম
একাকী প্রদোষে হাঁটি ,
ঘরে সেই ফিরে আসে
ছুঁড়ে দেওয়া অতি বধ্য তীর
যার গায়ে সরকারী নোটিশ 'বিপজ্জনক বাড়ি'
অনর্গল কথা বলো তুমি
কিছু কিছু কানে ঢোকে, বেশিটা মিলিয়ে যায় ডহরিয়া বাতাসে
আমার বুকের থেকে কি যেন
গড়িয়ে গেছে জঙ্গল মহলের দিকে
হাওয়া বদলের খবর
আসে---
স্বাতন্ত্র্য হারিয়ে
ফেলে সেগুন কাঠের চেয়ার,
প্রভুটির মত হয়ে ওঠে
কঠিন পদার্থের এই
স্বভাব বদলের কথা স্কুলপাঠ্যে লেখা নেই
মাস্টার ভুল ছিল?
জ্বর গায়ে, তবু হেঁটে
যেতে হয় ব্ল্যাকহোলে...
অন্ধ ঠাকুমা ও
কন্যাভ্রূণ
১
সেই যেবার বৃষ্টি হল,
ডুবে গেল কুশুন্ডিকা বেদী...
অন্ধ স্কুলের ঘন্টাঘরে
জবুথবু শরণার্থী ভিড়
ঠাকুমার কাঁথা সেলাই
ফোঁড়
তুলে ধরেছে দৃশ্যকল্প
নিমতিতা ভোর আর হলদে
বরণ নদী
দৃষ্টিহীনা আঙুলে ধরে সোনামুখি সূঁচ
একফোঁড়...বিধবাবেলা,
পাথরের সানকি ভরা মেথি
শাক ঝোলের মত শান্ত সেলাইদুপুর
ফিরতি ফোঁড়ে ফুটে ওঠে
পূর্ববঙ্গ থেকে আসা
পাটভাঙা রোদ
আমার জন্মের পর ঠাকুমা
আর কাঁথাই বোনেনি...
২
ঠাকমা এখন শুধু উলকাঁটা
ধরে
আমার মুঠো গলে পড়ে
যায় উলের বল
সোজা
উল্টো
সোজা
উল্টো
ঘর তোলা
ঘর ফেলা
দূরে মূক ও বধির স্কুলে
ঘন্টা বাজে ধীরে...
0 মন্তব্যসমূহ