হৃদয়ের মৌন স্থপতি
ধর্মগুরু দেখেছেন জাতিস্মর দাঁড়িয়ে বারাঙ্গনা উঠোনে
প্রতি দিন রঙের খেলা বিপ্লব বোধন মাতোয়ারা ধ্বজা---
কোন পাখির ডানায় গরমিল পরিযায়ী সময়ের সাজ
মরণ জয়ী উল্টো জীবন কপালে অমর চুম্বনে বাহুর বাঁধন।
অশরীরী কেউ ছিলনা পোড়া কাঠ চেনে সমুদ্র ঢেউ ভাঙ্গন
চূর্ন স্রোতে কমলিনী পায়ের তালে বাজলো জল নুপুর
কালো হলুদে বসন্ত খোঁজে মায়া হরিণের বাসর সবুজ বরণ
অশান্ত সময় পশু পাখি ফুল পরাগ বাতাসে বিলাপে।
দুর্বোধ্য সময় গুলিয়ে দিচ্ছে পৃথিবীর মাটি জীবন কথা
আশ্চর্য মোহনা জানে স্রোতের টান বোঝে ভাটিয়ালি বাঁশি
অবিশ্বাস্য আলোর শূন্যতায় ডেকেছিল প্রাণের দোসর
একসাথে মাঠ ঘাট গ্রাম শহর হাতে হাত উতল প্রহর।
কপালের ঘামে ভিজেছে মাঠ খসড়া পান্তা ভাতের থালা
অনেক শাসানি দাঁত ঘসটানি কেটেছে কথার কামড়
আল ছুঁয়ে শুয়ে থাকে স্থির চেনা বিষধর বিষধরি
পাড়া জুড়ে ভাঙা সংসারের দিনলিপি বৃষ্টি রোদ শিশির।
তবুও ঘরে ফেরা প্রসন্ন সময় ফুসফুসে কাঁপে মায়া শ্বাস
অংকুরে বেঁচে সকল সংসারী খেলা ঘর উৎসুকে
মহুয়ার গন্ধে সোনা রঙ ধান শিষে কোথাও আশ্রয় উষ্ণতা খোঁজে
তোমার করতলে অর্ঘ্য দধীচি জানে হৃদয়ের মৌন স্থপতি।
জন্ম ব্রত
প্রবাসী পথের রাত জানে হিম বুকে শুয়ে স্বচ্ছ ভাবনা
ছড়ানো সবুজ গাছের শাখায় পাতায় মেঘ মায়া---
সূর্য মাখে রঙ হিরণ্য ছোঁয়ায় সবুজে হলুদে
আলো ঢেউ ভাঙ্গে এমন ও পাতার আড়ালে মানুষের কেউ।
জমানো সকল স্মৃতি অদৃশ্য সকল কথা আঁচল আবেগ
পা ছড়িয়ে রোদের উঠোনে অদৃশ্যে বসে জন্ম জননী
প্রাচীন বটের ঝুরি আগলে আছে বাঁধনে অজস্র যৌবন পিপাসা
আলোর সাথে গাছে গাছে আরণ্যক উৎসবে তখন পাখিদের শ্লোক।
পায়ে পায়ে মাঠ জুড়ে কাদা মাটি হাতে হাতে সবুজ বোনা
আদিম কাদায় তবু নতুন বীজের অক্ষর যন্ত্রণা বাঁচে প্রতিদিন
রাজার দাপট জানে সকল মাটির মানুষ খাদ্য জোগানিয়া
সর্বস্বান্ত সময়েও কাঁসার থালায় পান্তা মাখে সকাল নরম রোদ।
ছায়ার মায়ায় তখনও সময় নাকি মধুময় তবুও ভয়ার্ত চোখ
শহর গ্রাম সান্ধ্য আড্ডা চোলাই মহুয়া মদ্যপ ক্ষুধা
বনের আনন্দে জীবন এখানেই লুকিয়ে পৃথিবীর জন্ম ঢিবি
ভেতরে তেমনি আদিম উষ্ণতায় বন ঘরে বেঁধেছে মায়া প্রাণ।
দু'চোখে গুহাচিত্র খেলছে ঋতুকাল আঁধার বাতাসে ফাল্গুন
আদিকালের হাতে ফেলে গেছি সর্বস্ব আঁধার ঘরে বিনীত জন্মব্রত।
স্বপ্ন আলো
কালো পিচ রাস্তায় ছড়িয়ে কিছু রক্ত ফুল সংলাপ
বসন্তে বিবাগী সময় দেখে বিক্ষত অযুত যৌবন
নিঃশব্দ শহীদ জানেনা তারও ভাষা ছিলো মানুষের
অন্তর্লীন সময় কোথাও মুখ ঢাকে মাতৃত্বের ছায়া
চেনা শব্দেরা শাদা জুঁই ফুল ঘিরে ধরে শরীর ও সংহতি।
জীবীকার খোঁজ বোঝেনা হৃদয় জড়ানো শিশু
হা আল্লা, হা ঈশ্বর, কবর শ্মশানে কি খেলার মহড়া হবে
আত্ম দগ্ধ প্রাচীন গাছেরা বোঝে শেকড়ের টান
সম্মিলিত কলরব জানে অনুচ্চারিত সকল যন্ত্রণা
ক্ষমতার বেচাকেনা মন্দির মসজিদ গীর্জা ঘণ্টা ঘরে।
তবুও তো জলছবি রোদ মাখে আলো ছায়া রঙ
মৌন সময় ভাঙে ঘেরাটোপ অন্তরঙ্গ হাতের ছোঁয়ায়
সিঁদুর ছুঁয়ে চন্দন কপাল ঢাকা রুদ্ধ সময় ডাকে
অপেক্ষা বোঝে বিনিদ্র চোখ জানে যন্ত্রণার রাত
মহাবোধি জানে বিষণ্নতায় শুকিয়ে কাঠ গরম ভাত।
প্রবাসী আকাশ জানে মুক্তি ভাসে পাখির ডানায়
রহস্যময়ী বোনে সোনালী কুয়াশা জাল নিপুণ কৌশলে
কখনো সখনো ধর্মতলা ডোরিনা ক্রশিং গঙ্গা ডেকে আনে
বিবর্ণ দুপুর জানতো রাস্তায় লুটোবে দিগন্তের রঙ
বৃদ্ধা মা ফেরায়নি কখনো ছেলের স্বপ্ন আলো ডাক।
0 মন্তব্যসমূহ