সাম্প্রতিক

6/recent/ticker-posts

চিরঞ্জীব হালদার



স্মৃতি কথা (১ম পর্ব )


ডাক্তারবাবু --ডাক্তারবাবু মা'র গালটা কেমন বেঁকে গেছে!
ডা:-আমি কি করব। চুমু খেতে যাব?
ছেলে:-না মানে। মা গালটা বন্ধ করতে পারছে না।
ডা:-গালে মাছি ঢুকিয়ে দে।আপনি বন্ধ হয়ে যাবে।
ছেলে:-মা কিছুতেই নিচের চোয়াল বন্ধ করতে পারছে না।
ডা:- আগে ১০০ টাকা ভিজিট আন তারপর কথা বলব।
ছেলে:- বাবা তো বাড়ি নেই।এলেই হয়ে যাবে।দয়া করে যদি আসেন।এই পায়ে পড়ছি।

অবশেষে অনেক মিনতির পর রাজি হলেন।এ সময় ডাক্তারই ভগবান। বেশ গলা উঁচু করে রাজ্যের বিরক্তি নিয়ে অহংকারী উটের মত গট গট করেআমার পিছন পিছন গৃহমুখী। তেনার রসভঙ্গ হয়েছে নো ট্রামের কলটা অন্যের হাতে ভজিয়ে মাঝ পথে বোগীর হিতসাধনে। কি ব্যাজার। কি ব্যাজার। তখন গোধূলির শাঁখ ঘন্টা। জানান দিচ্ছে সন্ধ্যার মন্দ্র আবাহন। তবুও রাতেভিতে এমন গন্ডগাঁয়ে ডাক্তার পাওয়া আর ভগবান পাওয়া এক। সময়টা সাতের দশক। চিনের ভগবান আমার ভগবান। গ্রামে দুই ডাক্তার। একজন এল এম এফ। অন্যজনা এম বি বি এস।দু'জনের সমান হাতযশ। প্রায় সমান পসার।আশেপাশে গ্রামের ৫/৬ হাজার মানব শররীরে আলিক্ষিত ঈশ্বর অবশ্য দু'জনেরই দড়কোচা মারা ব্যবহার। দর্শনে একজন কৃষ্ণকায় শয়তান বিকাশ রায় অন্যজনা ঠোঁটব্যঁকা হারাধন। রোগবালাই বড় বালাই। ঠেকা পড়লেই হাতে ধরো, পায়ে না ধরে উপায় কি।আর তেনাদের যত মস্করা রোগীর পরিবারে সাথে।যত আপনি তাড়াতাড়ি করবেন মস্করা আর সময়পাত আনুপাতিক বেড়ে যাবে। শ্লেষ আর কান্ডজ্ঞানের মাত্রা সীমা ছাড়িয়ে রোগীর বাড়ির লোকের হাড় আর সুষুম্না ভেদের জন্য যেন এদের ভাত ঘুমও হয়না। MBBS রোগী রা প্রায় ৭ টা থেকে বাড়ুজ্যেদের বারান্দায় জমা হতে থাকে। তা কখনো বটতলা ছাড়িয়ে ঘোষ পুকুর পর্যন্ত তার কলরব আছড়ে পড়ে। ঢোলা সিদ্দিবেড়ের সম্পন্ন গৃহীদের ও আনাগোনা চলতেই থাকে। দক্ষিণে সাবর্নদের জমিদারীর অর্ন্তভুক্ত ছিল এই গ্রাম। তা কোন এক ঘোষেরা চালাত। তারাই পূজাপাঠের জন্য কয়েক ঘর বামুনদের প্রজাস্বত্ত্ব দিয়ে কবে যে বসিয়ে ছিল কে জানে।তার ঠিকুজী কুষ্ঠী বলার একজনও আজ জীবিত নেই। তাদের ই দু'জন এম বি বি এস।একজন তো আরর গ্রামে ফেরেনি। নাম ফলক সেই কৃতবিদের সাক্ষ্য বহুকাল বহন করেছে। তাদের এই নামের ফলক কালের গর্ভে তবে ডিমও পাড়েনি।



চিরঞ্জীব হালদার