জানোয়ার পর্ব
১.
আট আনা নস্যির দরে
মাছের খালুই কিল্বিলালো
নানা রঙের আঁশ কৌটোভর
বিষাক্ত মহুয়া নিয়ে দোকান খুলেছি
এক টুকরো বই কিনবো বলে বাবুদের নোংরা জলার পচা পাট
আটার থালায় তাকে নুনে হলুদে তরিবত্ করি
দেখলে তু মুর্ছো যেতি , বইয়ের মলাট খুলে ন্যাংটো কালী জিভের
ডগায়
এখন আমি মোটা বেঁটে কদাকার মাংসের তালগুলো দর কষি
খন্চা করে বাঁ নাকের শিকনি লাগিয়ে
থুতুর মতো
ওয়াক্ মালিশ
শিখে গেছি বইঘর
শিখে গেছি মলাট পাল্টানো
২ .
শালমহুয়ার তল্লাট থেত্ লানো এ্যালুমিনিয়ম
সকালের হিমে তুবড়ির মতো
চমকানো দেখেছিস্ ? গতরের ঠাট ভুলে কাল যে তোর
কুচকুচে হাঁ দেখালি , বিটি বলেছিলি যাকে
বাসি হয় নি লাশ
কলাগাছের ছাল এ শরীর
যেমন খুশি ছাঁচ পেটা করো
মাদি তার সমস্ত শাঁস একদিন শুঁটকি করে সেঁকবে কেয়ামত্
৩ .
শুকোমাছের টক মাখা হাতে
এবার চুলে চিরুনি দেব ভাবি
গলার ধারে বটফলের মতো জরুল গজাতে
দেখলাম, মেঘলা থালায় সালনের কানায় যেন
চিংড়ি
টুকি দিচ্ছে
একটাই ? না, না । আরও আরও
সবেধন নীলমণি পাত সরাই আর কাঁটাদের ঝুঁটি বাঁধি
গোগ্রাসে ভাত তুলছি মুখের গহ্বরে, খিদের রাক্ষস যেন ।
শেষ পাতে পৌঁছনোর পরে দেখি দেহ ছিঁড়ে কেবল মুণ্ডু
পড়েছে এইখানে
৪.
এক ঝলক মিনসের চোখ
কেটে বসিয়েছি উবুভাণ্ডের
তলায়, আসনপিঁড়ি বসেছে নতুন শীত
আরশোলার ঘর ভেঙে প্যাঁটরাময় রোমের ডিবে
বেরিয়ে পড়লো বাজু থেকে সাপটে নদীর দুই পারে
আয়না ধরে আছি কলঘরে
বালতির ওপর ছায়াকে হাতময় পিষে ফেলতে ফেলতে
নিজেকে চেটে চেটে খয়েরি করে ফেলি
সাঁঝের উনুন হব বলে
৫.
হাড়ের স্টু খেয়েছো কানি !
টগর পাতার ডাঁটি যেমন দুধ পুষে রাখে
ধরিত্রীর, রক্ত যেমন পোষ মানে শেহরির
রোজা , তাঁতের জবাই করার পাঠ
শরীরে শরীর রেখে ছায়া ভাঁজ করে
শিখতে যাই
নিজের মায়ের বালতি নিজের চোখের দুধ
চালের গুঁড়ার স্বাদ ভাজা হচ্ছে শিহরণ ভাপে
পাকান পিঠার গায়ে রাঙা আলু রোদের কদম
আমি নিজে চাখি , নিজের মড়াই থেকে তারিয়ে তারিয়ে
0 মন্তব্যসমূহ