সাম্প্রতিক

6/recent/ticker-posts

হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়


   মুছে গেল পূর্ণচ্ছেদ



বটপাতার মতো ছড়িয়েছিল সকাল
জানলার দুয়ার খুলে আলোর রেণুর বর্ণমালা
হঠাৎ করেই একদিন ঢুকে পড়েছিল গুরুমশাইয়ের 
                                                           পাঠশালা ঘরে
তখন গাছ ছিল, নদীর জলের মতো ছিল অবাধ কথা
হাত ধরে এনে পরিচয় করিয়েছিল
হাজার বছর ধরে না ঘুমিয়ে থাকা ঘোড়ার অগ্রজ
নদীর গায়ের সঙ্গে শরীর বেঁধে মন্ত্র পড়িয়েছিল
ফুলের সকালে পুবের বাতাসে ভেসে আসা জলজ হৃদয়
গাছের পাতায় হাতেখড়ির দিন
যাবতীয় লোভনীয় উৎসবিন্দু পরিত্যাগের পর 
প্রস্ফুটিত সূর্যবিন্দুর ঘোষবর্ণগুলি পরিচয়ের মুহূর্তে
পায়ের শিরদাঁড়া স্থির রাখার কাঠামো এঁকেছিল অগ্রজ
একটু একটু করে এগিয়ে যেতে যেতে
চারদেয়ালের মধ্যেকার জায়গা নির্দিষ্ট হলো
গোবর জল ছড়িয়ে আসন পাতলাম
বাসনের কলহ ভুলে অতি আহ্লাদে এক থেকে দুই
দুই থেকে তিন চার পাঁচ ------- আরও কত কিছু
অগ্রজের অভ্যস্ত হাতে 
অতি জটিল সমীকরণের দাবদাহও সহনীয় হলো

ফুল পাতায় জড়িয়ে জড়িয়ে 
যে পথ তৈরি হয়েছিল আমাদের ঘরে ঘরে
কেউ খুঁজি নি তার উৎসবিন্দু
একদিন হঠাৎ করেই বিকেলবেলা বাস ধরে
কোথায় যেন চলে গেল রোজের সকাল
একটা সুঠাম বাক্যবন্ধ থেকে মুছে গেল পূর্ণচ্ছেদ 
বাক্য গড়িয়ে চলে এখনও
একঘেয়ে রঙের বিরামহীন পদচারণা
সামনে দাঁড়িয়ে প্রাত্যহিক হাতের অভাবে
দুদণ্ডের বৈঠকখানা একা পড়ে থাকে ।


        হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়