১
বিচ্যুতি
দাঁড়াও, তোমার
বিচ্যুতি দেখি
প্রজন্মকে বাঁচাও তুমি
আরতির পাশে তোমার উদ্ভাসিত
মুখ
মুখে সামান্য প্রজাপতি
মাঝে মাঝে উড়ছে তারা
উড়ানেও লেগে আছে বিচ্যুতি
সন্ধ্যার মুখে শাঁখ বাজাচ্ছ
সাবেক প্রদীপে যদিও আলো নেই
উদাসীন দরজাটিও কপট এখন
ঘোমটা খুলে চলে গেছে বরং
বিদ্যুৎ
নিষ্পাপ জলের কাছে রাগ ও
রাগিনী
সম্মোহন ছুঁয়ে বসে আছে
কালের শ্রদ্ধেয়জন কেউ কি
দ্যাখোনি?
বিচ্যুতি শুধুই নৌকা, ভাসে
সন্ন্যাসিনী
যদিও করোনি ত্যাগ গৃহ
যদিও বাজাওনি দুই হাতে
শব্দের খঞ্জনি!
২
মর্মের আড়ালে
আমাকে শাসনের চাবুকগুলি
এখনও রোদ্দুরে মেলে দেওয়া
আছে
আমি নিরীহ পাখির মতো পাশে
বসে থাকি
ভয়ে আজও ছুঁই নাকো অপার্থিব
দানা
আমার সংস্কৃতি জানি কেহই
বোঝে না
শুধু বিকেল হচ্ছে বলে নীরবে
জিজ্ঞেস করি :
আলো জ্বালাবে না?
কে কোথায় চলে গেছে
তীর্থে তীর্থে ধর্মের উৎসব—
আমিই প্রহর গুনছি নিঃস্ব
প্রহরে
যদিও হৃদয় আমার মৃত এক
তীর্থের কাক
সব জাদু নিভে গেলে তবে আর
কোন্ জাদু থাকে?
কেবল চাবুকগুলি উদ্ধত সময়ের
বিছানায় শুয়ে শুয়ে
অভ্যাসের দাসত্ব করে
মর্মের আড়ালে চোখ সরিয়ে
দেখি
এখনও কি লেগে আছে হাতে-পায়ে
বেড়ি?
জাগাও জাগাও তবে নবজন্মে
ফিরব না আর
নিঃশেষে শেষ মধুটুকু পান করি
আমারই প্রাচীন কোকনদে!
৩
স্বাধীনতা
যাতনা বিছিয়ে বসি, চারিপাশ
ঘিরে আছে ধর্ম
ধর্ম জ্বালাবে আমাকে!
কথা শেষ হয়নি আমার
আরও বহু কথা আছে
সব মানুষের কথা, সব
কথা বেঁচে থাকবার
ধর্ম এত অসভ্যতা করে কেন তবে?
মানুষ চেনে না ধর্ম?
আমাকেই মরে যেতে হবে একটি
সম্প্রদায় হয়ে?
আমিও তো মহুয়া ফুলের কাছে
যেতে চাই
আমিও তো কাউকে ডাকতে চাই
দুর্বিনীতা বলে
স্নিগ্ধ সকালের শীতরোদে আমিও
আগুনের কাছে বসে
পর পর দু কাপ চা পান করতে
চাই
যেমনই উঠুক হাওয়া, যেমনই
কুয়াশা
আমি ও আমার স্বাধীনতা পেয়েছে
এই ভাষা
ধর্ম কেন এসে তাড়া দেবে?
আমি গণতন্ত্রে আছি
আমিও মানুষ শুধু মানুষের কাছে ।
৪
রাত নামছে ছাতে
কৌতূহল, দু
একটা বাড়ি
বাড়ির ভিতর সিঁড়ি
পৌঁছানো যাচ্ছে না —
রাত
নামছে ছাতে
তারার মতো ফুটফুটে বাক্যেরা
রহস্যের আলো নিয়ে পেতেছে খেলা
তাদের
পাশে বসানো যাচ্ছে না
আমাদের হারানো ছেলেবেলা
অথচ ছাপা হচ্ছে কল্পনা
বিজ্ঞাপনের
নিভৃত শয়নঘর
দরজা
খুলে ডাকছে পরকীয়া
আমাদের শুধু সামাজিক ক্রিয়া
বিশেষণকে আঁকড়ে ধরছে পরস্পর
কী বলে কার সম্মোধন হবে ?
ভাবতে
ভাবতে স্বয়ংক্রিয় রাতে
এক
ঝাঁক সত্য মিথ্যা নামছে পাখি হয়ে
কোনওটার ধূসর ডানা, কোনওটা
উজ্জ্বল
আমরা শুধু ঝিকিমিকির পাড়ায়
চেয়ে আছি ছাতে
দু একটা নষ্ট অনুভূতি ছায়া
হয়ে দেখি
দাঁড়ায়
এসে পাশে
তৈমুর খান