সাম্প্রতিক

6/recent/ticker-posts

তৈমুর খান





চারটি কবিতা 



মাটিতেই বসে থাকি 


সব পাখিরা উড়ে যাচ্ছে 
কথা বলতে এসেছিলাম পাখিদের সাথে 
কথারা পাখিদের পিছনে পিছনে ছুটেছে 

পৃথিবীতে কেউ নেই আমার কথা শোনার 
গাছেরা দিগন্ত ছুঁতে চায় 
পর্বতেরা দেমাকে অটল 
নদীরা তো নাচে শুধু নিজের গৌরবে 

মা নেই 
কাঁদতেও ইচ্ছে করে না 
কার কাছে রাখব অভিমান ? 
দিগন্ত দূরের দেশ আমার ভাষাও বোঝে না 
মাটিতেই বসে থাকি সারাদিন 
এই শতাব্দীর রক্তে মাটি 


বেড়াল


পণ ও যুবতী একসঙ্গে পেয়েই খুশি হয় বেড়াল 
খাঁচার ভেতর রাখে কবুতর 
তারপর অল্প অল্প খায় 

কী সুন্দর বেড়ালের দাঁত 
তীক্ষ্ণ ও সাদা মরমি করাত 
বন ও আকাশে কোথাও ওড়াওড়ি নেই 
খাঁচার ভেতর শুধু ক্লান্ত দীর্ঘশ্বাস 

হাফ্প্যান্ট পরা সমাজ দূরে দাঁড়িয়ে দ্যাখে 
কী মহান বেড়াল, গোঁফে তার পৌরুষ চমকায় 
চর্বিতে ঝরে চিকন ভদ্রতা 
মঞ্চ সফল বক্তৃতায় 
হাততালির পর্যাপ্ত স্বাগতম 

আজ কোনও রামধনু  নেই 
বেড়ালের হাতে সব ইন্দ্রধনু 
আমাদের ব্যর্থ রামায়ণ 

উপদেশ নয় 


সব তর্কে জল ঢেলে দিয়ো 
ছিটকে আগুন যেন পোড়ায় না দেহ 

সভাতে সভাতে শোভা খেলে 
শোভা যেন ভাগ হয় না অন্যকোনও দলে 

মুচকুন্দ ফুল ফুটছে বলে সকাল বিকেলে 
কেউ যেন না দাঁড়ায় বুকের আঁচল খুলে 

জলে জলে এ শতক বন্যা বিলি করে 
বন্যাকে আমরা যেন না ডাকি ঘরে 

বিবেক বিক্রি হলে কী-বা থাকে আর 
তবু যেন দূরে রাখি আগুন ও খড় 

দেহতত্ত্ব স্নেহতত্ত্ব পার্থিবের হাসি 
আমরা যেন না বাজাই ইহবিমুখ বাঁশি 



নীরেন্দ্রনাথ 




তোমার বাতাসি ডেকে ডেকে চলে যায় 

বাস থেমে গেলে আমরাও নামি 
সামনে অন্ধকার হয়ে আসে পথ 

দীর্ঘ ছায়া পড়ে 

কার ছায়া সংকেতের ভিতরে বাহিরে? 

আমাদের বাস্তবের বাড়ি 
সেখানেই ফিরে যেতে চাই 

তুমি তো নীরেন্দ্রনাথ 
এই চক্রবর্তী পাড়ায় আমরা ঘুরি চক্রবৎ 



             
তৈমুর খান