সাম্প্রতিক

6/recent/ticker-posts

অর্ণব সামন্ত :কবিতা

 


কবিতা


মফস্বলের পাঁচালী

 


 

এই যে বজরা চলেছে 

আগুন উসকে দেওয়া চলনে বলনে 

তোর কথা মনে পড়ছে খুব মনে পড়ছে মনে 

কামনাবাসনার স্পর্ধাগুলি 

পাতার মতন কুটিকুটি করা 

সকাল রোদ্দুর ওঠাচ্ছে 

দুপুর স্তব্ধতার কথা  

নিঝুম সন্ধ্যায় সেঁজুতির চোখ 

গাঢ় সুধামাখা রাত্রিতে নক্ষত্রদীপ জ্বালা 

জোনাকির ঝাঁক ঝাঁক প্রেরণা 

ধান্যশীর্ষে রোদের সখ্যতা 

উদোম গায়ে লাগছে হাওয়া , নদী 

নিজের ভেতরটা ফাঁকা হচ্ছে  

তাতে ঢুকে পড়ছে 

নক্ষত্রখচিত রাত , 

গাছগাছালির মফস্বল , 

সৃজন নাশকতার নদী ,

 চলছে আমাদের জনপদের হাঁটুনি সঙ্গে কথোপকথন 

উল্লাস রোদন হিংসা , ঈর্ষা , 

বিরক্তি , অন্ধকার , হতাশা ;

এর মধ্যে পায়রা এসে চুমু খাচ্ছে 

ঠোঁটে বুকে পেটে পায় 

ধরাকে সরা জ্ঞান করে আমি 

ভূমিকম্পের আভাস পাচ্ছি 

সাইক্লোন এসে আছড়ে পড়ছে 

দোতলার ব্যালকনিতে 

বাইরে অঝোর বৃষ্টি ভেতরে আরো বেশি 

জ্যোৎস্না গলে যাচ্ছে মোমের মতন সারা গায়ে মনে 

সমুদ্রমন্থনে উঠে আসছে বিষ অমৃত 

ঢেউগুলি ভেঙে যাচ্ছে 

বে - নী - আ - স - হ - ক - লা'য় , 

এক একটি রঙ তুলে পালক করে 

গুঁজে দিচ্ছি পাখির কঙ্কালে  

পাখিটির চোখ ফুটছে 

পাখিটি ওড়ার চেষ্টা করছে পাহাড়ে সমতলে জঙ্গলে 

কমনীয় সৌরভ ছড়াচ্ছে তৃপ্ত চোখের ভাষায় 

ছন্দের ঝাঁকুনি থেকে গতির জন্ম হচ্ছে , 

গতির জাড্য মেনে 

সে হালকা হাওয়ায় শুধুমাত্র ভাসাচ্ছে তার ডানা 

হাওয়াই তাকে ভাসিয়ে নিচ্ছে যেখানে যাবার সেখানে 

বিজলী চমকাচ্ছে চমকাচ্ছে 

আর ঘন ঘন আছড়ে পড়ছে শ্রাবণ , 

আজ অবধি সে নিজেই বোঝেনি তার মধ্যে এত আগুন 

সেই আগুন সে ছড়িয়ে দিচ্ছে দাবানলের থেকেও বেশি গতিতে 

5G নেটওয়ার্কে 

জিও সোস্যাল মিডিয়া  

জিও ট্যাবুভাঙা স্বচ্ছ মন 

কথায় সরল হচ্ছে চক্রব্যূহের অক্টোপাস হাজারোপাস বাঁধন 

দোয়েলের শিষ নিয়ে হাওয়া পেরোচ্ছে 

যোজন যোজন প্রান্তর 

নদী হঠাৎ নির্জন ঘাসজমিতে উঠে দেখা করে ধরা পড়ার আগেই 

মৎসকন্যা হয়ে নেমে যাচ্ছে সাগরে , 

জল থেকে গভীর জলের দিকে ;

আবার সুযোগ বুঝেই উঠে আসছে 

ভিজে আঁচলে রূপে অথই বন্যা নিয়ে 

লাবণ্যে ভাসাচ্ছে সংসার শব্দজব্দ 

মোহজব্দ করছে সমস্ত 

বহুরূপে ঘুরে বেড়াচ্ছে 

কিন্তু ভাতডালের জমি চাই 

ডাল গড়িয়ে নদী হওয়া চাই  

বাধভাঙা উল্লাসে উল্লাসে 

শীতরোদ মাখা চাই  

বটবৃক্ষের ছায়া চাই 

চাই সোঁ সোঁ ঝাউ হাওয়া 

দ্রাঘিমাংশ ঢুকে পড়ছে পাগলীর মতো 

দ্রাঘিমার বুকে 

ছুটে এসে বলছে , ' তোকে কি দিই তোকে কি যে দিই এখুনি ?'

তারপর সেতারের সুর ঠিক করতে বসে পড়ছে আলগা কেশে 

স্রোত ছুঁয়ে যাচ্ছে চোখমুখ অন্তরমহল  

বাইরে খোলস রেখে 

সরীসৃপ সময় আগুপিছুবর্তমান ভুলে এক হচ্ছে , একতারায় সুর তুলছে 

আলস্যকে ক্লান্ত করে গা ভাসাচ্ছে আবহমানের স্রোতে ...

 

 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ