গুচ্ছ কবিতা
গা ভর্তি সমুদ্র গন্ধ, খসে পড়ে। কিছুটা না পারার ভেতর
ইতিউতি ছড়ানো ছেটানো ঠিক-ভুল। বিদ্ধ করে । অথচ ফেনা কেটে কেটে ফাটলের এই
দৃষ্টিকেই তো তুমি চিরকাল চিনে নিতে চেয়েছো,বলো চাওনি ?
হে সর্বভুক, কী দেখছো ওমন করে ? কবরের মুখ? বিনিসুতোয় যেটুকু ত্যাগ লেগে ,অসহায় সেই উত্তরণ । আলো এসে পড়ে প্রতিটি ছুরির শরীরে , উবে যায় রক্তছাপ।
গন্তব্যে পৌঁছে টের পাই এই ভেজা পথ, প্রতারক এসক্যালেটর কাউকেই আমি ধরে
রাখতে পারিনি।
ঝুঁকে দেখি, নাভিকুণ্ডের ভেতর থেকে হেঁটে আসছে বৃক্ষের
পাপ। প্রথম রৌদ্র হেসে উঠে বলে 'চোখে জল কেন তোমার ?'
শুধু সেই বিপন্ন অগ্নির চোখ আজও উইন্ডস্ক্রিন হাতে ঠায় দাঁড়িয়ে।
কোথাও কোন আর্তনাদ নেই, শুধু লতিয়ে থাকে আবাহন।
উপাস্য
'তদস্তু হৃদয়ং তব’ বলতে বলতে চোখ বুজে
আসে। এমন ছেড়ে যাওয়ার মরসুমে কেন কেঁদে ওঠো ?কেন স্বপ্ন
দেখো বারবার?
জেগে ওঠো ভ্রম! যে দেবতা আজ তোমার নয়, খুলে নিয়ে আসো- উপাসনা ,খয়েরি বেলপাতা!
বিপুল এই নীল পেরিয়ে কেউ
কামড়ে খেয়েছিল আতুর ঘরের আগুন। তবু কি পথের কথা,তার দুধারে পড়ে থাকা হলুদ-বেগুনী
ক্ষিদের কথা,ক্ষিদের ভেতর লুকানো প্রাণবীজের কথা জানতে
চেয়েছো কখনও ?
দূরে সন্নিহিত কোণ। ঘুমহীন রন্ধ্রে , ক্রমশ পাথর হয়ে ওঠা একপ্রকার স্পেস।
ভাসছে। ডুবছে। ধেয়ে আসছে জিভ ,নাকি কাঁকড়ার ঘিলু ?
ক্ষত হয়, ব্যাথা বাড়ে -
ঘুমিয়ে পড়ে,তারপর খোলস বদলায়।
ধোঁকা খাবে জেনেও, এই দুর্ভিক্ষ তোমার সম্বল।
নচেৎ কে বলবে - তুমি ধর্ষক, তুমিই ধর্ষিত !
বিসর্জন
ভ্রম আগলে বিষাক্ত হয়ে উঠছে পাতক, ক্রমশ একা। কোজাগরী ভোরে খুলে ফেলছো
ছিন্ন মুণ্ড। এমন তার ঔষ্ম, কটা-চোখ, ফেরানো যায় না।
কায়দা করে রোস্টেড করবো ভাবি ,ঈষৎ। ধূসর শবের আঁশ ছাড়িয়ে দেখি
ঘড়ির কাটায় দাঁড়িয়ে আমাদের আধ-ফোঁটা স্নান, কামাতুর।
গামছা ভর্তি জল।
তোমার মুখটা দেখবো বলে আলো হাতড়াই না ফেরার গর্তে ।
আর কতদূর গেলে আলো দেখা যায় , সক্রেটিস ?
কালো ঘুরছে।
ঘুরতে ঘুরতে বন্ধ হয়ে আসে নিচের আঁধার। ভাঙা
গির্জার নীচে গুটিশুটি মেরে শুয়ে আছে গুঞ্জন-স্মৃতি। এথেন্সের পথে পথে তখন 'আত্মানং বিদ্ধি' আউড়ে আমরা দেখতে শিখছি নিরীশ্বর জিন্দেগি ।
জোয়ার আসে ,জোয়ার যায়। হোচট খেতে খেতে জানতে পারি,
আগামীকাল বিসর্জন !
2 মন্তব্যসমূহ
গুচ্ছ কবিতায় রইলো একগুচ্ছ আশীর্বাদ। আরও ব্যপ্তি পাক লেখনী শৈলী।
উত্তরমুছুনঅসাধারণ সব কবিতা পড়লাম
উত্তরমুছুন