ভুল উপহার
১
রং, পাতা, ফুল, চীনা মাটির টবে যতই বাহারি আয়োজন হোক না
কেন, মনের মধ্যে একচিলতে রোদ্দুর আর একমুঠো মাটি থাকাও দরকার। দুহাজার স্কোয়ার
ফুটের ফ্লাটেও কোথাও মাপসই হবেনা
বাদামি টবে পোঁতা উপহারে আনা ওই হলুদ রঙ্গন। প্লাস্টিক ঠোঙ্গায় এক টেরে পড়েই
থাকবে। সমানে শুনতে হবে আলো নেই, বাতাস নেই , স্থান নেই এসব গাছের । চারিদিক
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। জীবিতের শীত ঘুমে আয়েস আর মৃতের শরীর। কাচ টানা শার্সি আড়ালের
ওপারে শিশির ও ঘাম মাখা
বৃক্ষ জীবন।
২
গামছার মোড়কে বাঁধা ‘রাঁধুনি পাগল’ চাল হাতে দিতেই উতরোল
হাসি। ভাত কেউ খায়! মাখানা বা কিনুয়াতেই লাঞ্চ ও ডিনার। তেল ছাড়া খাওয়া যায়।
সারাটি বছর বাড়িতেই ফ্রোজেন ব্রকলি
কড়াই শুঁটি। সঙ্গে দু পিস চিকেন। এইসব আততায়ী ডাল ভাত কত কি না অযথা বাড়ায়! শরীরে বাঁধায় রোগ। ভাত আর
চিনি সে তো শুধু মাসি খায় –
গ্রাম্য খিদেয়। ভদ্রলোকে ও সব ছেড়েছে বলে গরীবের লোলুপ দৃষ্টি থেকে বেঁচে যায়
ফ্রিজে রাখা এটা সেটা এবং ড্রাগন ফ্রুট।
৩
ফুল বেচা প্রতিমার নিজে হাতে গাঁথা , দু হালি বেলফুল মালা
কলাপাতা মুড়ে হাতে দিয়ে ভাবি, কত না উচ্ছ্বাসে সাদর উষ্ণতা পাব; মুখে ভয় - কাঁপা
হাত। টেবিলের একপাশে রেখে বুঝি ওতে আছে কীট , ফাঙ্গাস ছোঁয়া। এর চেয়ে নিরাপদ রুম
ফ্রেশনার। তড়ি ঘড়ি স্যানিটাইসারে ধোয়া ধুয়ি মালা ও আমার মুঠো ; এবং ব্যাগটাও যাতে
ওই মালা রাখা ছিল।
0 মন্তব্যসমূহ