প্রতীক্ষা তখন হয়ে
দাঁড়াবে সোনাসোনা
কাঁটাগাছের কান্ড যেমন
শরশয্যায়, অজস্র তিরে,
শলাকায় ছটফট, অসহ্য
মাইগ্রেন মাথায় নেটওয়ার্ক
গড়েছে, এক সপ্তাহ ধরে
রাজস্ব আদায়, উৎপীড়ন,
দশসালা বন্দোবস্তে ঢেকে
রেখেছে অস্তিত্ব।
কাপুরুষ হতে মন চায় না
আর, তাই ঠেকাতে পারব
আশা নিয়ে পায়চারি করি,
অন্ধকারে মনে হয় শুদ্ধজয়
আসছে এবার, অনেক
ক্ষয়ক্ষতি সত্বেও, এক পা, দু’ পা করে।
কিন্তু তারপরই আবার
পিছু হঠা, এক দমকায় বুঝে যাওয়া
যে ভয় আসলে ব্যথাকে নয় , তারচেয়ে বেশি
ব্যথা যে
ফেরত আসবে সেই চলতি
ধারণাকে। এ হল প্রতীক্ষার ভয়।
আমি খুঁজতে থাকি শেষে
একটা মুক্তধারা,
শরীরকে সাজাব এবার
কারিকা নর্তকীর আঁচে,
বেজে উঠব নিজেই মারিম্বা কি
দোতারার দোলায়। একটা
নাটকীয়তা, পরীক্ষামূলক থিয়েটার
গোছের উন্মাদনা এবার
বয়ে যাক দেহময়।
প্রতীক্ষা তখন হয়ে
দাঁড়াবে সোনাসোনা,
মিষ্টি ধরণের আশ্চর্য,
একটা বশীকরণ জাদু।
সংশয়ী মন, অনিশ্চয়
সংশয়ী মন, অনিশ্চয় বললে
সে স্মিত হাসে
একটা ঢেকে রাখা গৌরব
আছে এখানে,
সংখ্যা দিয়ে যাকে মাপা
যায় না ঠিক, হয়তো
মাপার চেষ্টাটাই এক
ধরণের বাতুলতা।
অথচ পাঁচ মিনিট দাঁড়িয়ে
কথা বললে আপনার
জীবন পাল্টে যেতে পারে।
আমি তাকে খুব বিপদের
দিনে স্মরণ করি না, এ
সময় ফাঁকা বিশ্বাস দরকার,
কিন্তু নৈরাজ্যের প্রথম
লক্ষণে, যখন আমি তাকিয়ে রয়েছি
অনেকক্ষণ দেয়াল লিখনে
বা ঈশানকোণে, সন্দিগ্ধ হয়ে
তাকে বহুবার জিজ্ঞেস
করেছি ঝড় আসার সংখ্যারাশি।
স্মিত হাসে সে। যেন
প্রতিটি ঝড়ই আলাদা তার কাছে,
কিভাবে কার পাতা খসাবে,
কোন পথে কোথায় শুরু,
কোনো বিশেষ ব্যাপার নয়,
কিন্তু প্রশ্ন শুনে
তার চোখে চিকচিকে জল
দেখতে ভালো লাগে আমার –
এ মানুষটা তবুও সৎ রয়ে
গেছে এই
মাৎস্যন্যায়ের আচারে,
ত্রাসের অনুষ্ঠানে।
এর আতঙ্ক জানা নেই,
প্রয়োজনও নেই।
পিছলানো, সব ধরণের
চওড়া-কাঁধ লোকটার
কিন্তু সাহস কম ছিল –
আমাকে বলেছিলেন তিনি
বিশ্লেষণে, “সাহস বুঝলে
আসলেই একটা অর্জিত গুণ,
পেশীর বিক্রম নয়। “
আমিও উঁচু মিনার থেকে
পড়ে যাওয়ার
ভয় পাই অবিরাম, জঙ্গলে
হারিয়ে গিয়ে
দুরুদুরু বুক, শেষে
হয়তো জলের সন্ধান আবার –
এ অঞ্চলে একটা নদী ছিল
কে জানত!
উপদেশ শুনি ওনার,
ড্রিম-ক্যাচারে ধরে রাখি
এটা সেটা আঁকড়ে,
চিন্তার স্তর, পাতা এবং অন্য তরঙ্গের
আন্দোলন, পাশাপাশি অথবা
ওপরনীচ। যেমনতেমন বড়সড়
আবিষ্কারের নেশা হয়তো
নয়, কিন্তু ছোট ইঞ্জিনের মত
একটা পেরে-যাব গোছের
উৎসাহ জানানো নিজেকে।
এইরকম কোনো আশা নিয়ে
আমি যখনই পথে বেরিয়েছি,
ফাটলগুলো দেখা দিয়েছে
শরীরে এবং আস্তরণে,
ফুটপাথের নীচে দেখেছি
চাড্ডিখানিক লুকোনো ট্র্যাপ,
ভরা জোয়ার বইছে গাঙে।
পা পিছলানোর থেকে এখন
চিন্তা পিছলানোটাই জোরে
ঠেকিয়ে রাখা।
0 মন্তব্যসমূহ