মূল কবিতা : Love Letter
কবি : Sylvia Plath
অনুবাদ : অভিজিৎ পালচৌধুরী
প্রেমপত্র
সহজে বলার নয় তুমি যা পালটে দিলে ।
যদি এখন আমি জীবন্ত হই,
তো তখন ছিলাম মৃত,
যদিও, একটা পাথরের মতো,
তাকে কোনো পাত্তা না দিয়েই,
অভ্যাস মত নিশ্চল থাকা ।
তুমি আমাকে এক ইঞ্চিও নড়াতে পারোনি,না—
না তো আমাকে ছেড়েছো আমার
খুদে পলকহীন চোখকে আবার আকাশমুখি করতে, আশাহীন,
অবশ্যই নীলিমার আশঙ্কায়, অথবা নক্ষত্রের ।
সেটা এরকম ছিল না । আমি ঘুমোলাম, ধরো :
একটা সাপ কালো পাথর গুলোর মধ্যে
শীতের সাদা ঘুমে যেন কালো পাথরের মুখোশে –
আমার পড়শিদের মতো, যারা আমার ব্যাসাল্ট পাথরের গালকে
গলাতে প্রতিমুহূর্তে নেমে আসা
লক্ষ লক্ষ নিখুঁতভাবে খোদাই করা গালে
কোনো মজা পায়না। তারা কান্না হয়ে গেল,
যেন নিঃসাড় প্রকৃতিতে পরীদের ফুঁপিয়ে কান্না,
কিন্তু আমার প্রত্যয় ফেরাতে পারেনি।
সেই কান্নার ফোঁটাগুলো হিমায়িত ।
প্রতিটি মৃত মস্তকে ছিল বরফের শিরস্ত্রাণ ।
আর আমি ঘুমিয়ে গেলাম
একটা বাঁকা আঙুলের মতো ।
প্রথমে আমি যা দেখলাম তা নিছকই বাতাস
এবং একটা শিশিরের মধ্যে বন্দি ফোঁটাগুলোর উত্থান
আত্মার মতো বিশুদ্ধ।
বহু পাথর ঘন হয়ে শোওয়া এবং ভাবহীন মোড় ।
আমি জানতাম না এর থেকে কি অনুমেয়।
আমি জ্বলে উঠেছিলাম, অভ্রখচিত, এবং উন্মুক্ত
নিজেকে পাখির পা এবং গাছের কান্ডের মাঝে
তরলের মতো ঢেলে দেওয়ার জন্য ।
আমি বোকা বনিনি। তখনি তোমাকে জানলাম।
কোন ছায়া ছাড়াই, গাছ এবং পাথর ঝকমকিয়ে উঠলো ।
আমার আঙুলের দৈর্ঘ্য কাঁচের মতো আলো ছড়ালো।
বসন্তের ছোট বৃক্ষশাখাটির মত আমি ফুটে উঠতে লাগলাম
:
একটি বাহু ও একটি পা, একটি বাহু, একটি পা।
পাথর থেকে মেঘ, যেমন আমি আরোহন করলাম।
এখন আমি খানিকটা ঈশ্বরের মতো দেখতে,
আমার চেতনা যাত্রায় বাতাসের ভেতর ভেসে চলেছি
নিখাদ যেন বরফের একটি পাল্লা । এটাই পুরস্কার ।
0 মন্তব্যসমূহ