গুচ্ছ কবিতা
যৌথ
আবাদ ও ভূমির কল্পনায়
তোমাকে মনে পড়ে, ভীষণ মনে পড়ে।
এখন তুমি নেই
বাস্তবিক নেই দিন ও রাত্রির রচনা
অলৌকিক ও বিষণ্ণ বঁটিতে প্রতিদিন কচুকাটা হয়
লৌহের নৈমিত্ত্য ও সাধনা।
বোধবাড়ি
নইলে বাঁচি কী ক'রে, বলো!
বেশ লাগে আমার মনের উৎসে অবারণ
দুঃখের এই সাদা-কালো ফুলকাটা আলপনা!
সময় থেকে ঝরে যাবে লেগুনের হাসি
দুঃখেরা অনন্তবিহারী
রয়েছি বিহারমগ্ন যতক্ষণ পারি!
কেন যে
কেন যে বৃষ্টিকে এত ভয় পাও
আর কেন যে লেবুগাছ এত প্রশংসা করে তোমার!
মনে হয় পৃথিবীর জলে
অনন্তের কিছু ভাম ঢুকে গেছে!
জ্যোৎস্না ও তস্কর
চন্দ্রমল্লিকারা ফুটে উঠল অন্ধকারে
শীতরাত্রির বাগানে।
কাউকে না বলে চুপি চুপি যাই
কয়েকটি তস্কর খুঁজে আনি।
সবচেয়ে মানায় ভালো তস্কর
যারা ফুলের অবসন্ন অপ্রতিম শরীরে
অনুপম জ্যোৎস্না হতে জানে!
সুবর্ণজোছনার ধুলো
জীবনানন্দের বাঁধাই বিশাল ফটোটির পাশে
ভ্যান গঘের বিশাল ফটোফ্রেম একতলা ঘরে।
পৃথগন্ন, নীচে শুয়ে ঘুমোই, প্রান্তিক ঘুমের সমরে
এ বাড়িতে বহুকাল বেঁচে আছি--- কেউ তা জানে না:
আমার শান্তাবাড়ি-ঘুমে সুবর্ণজোছনার ধুলো
শান্তময় ধুলো ঝরে ঝরে পড়ে...
নামকীর্তন
'রূপনারায়ণ' পত্রিকার সংখ্যাটি বইয়ের তাকে রাখা।
তবু রাত্রি গভীর হলে খুলে কদাচ পড়ি না,
পড়লেই হাত ভিজে ওঠে, ক্রমশ ক্রমশ হাত
দেখি জলে ডুবে যায়...
বুঝতে পারি, আচমকা পড়েছি উঠে কোনো
আক্ষরিক
ঝড়ের
খেয়ায়!
হরিণবনের স্মৃতি
হরিণবনের পাশে, কাঁচতেঁতুলের গাছ থেকে
দিঘিতে লাফ দিয়ে পড়ে
প্রেমিকার ছোটভাই, কাঁধের উপরে।
ও কি মিতুল মিতুল রাগ করবে, জানতে পারলে?
ঘুসি দেখাবে মানপাতার ফুটোয় চোখ রেখে?
হাসবে, যদি দুজন বন্ধু হয়ে যাই?
বকা দেবে যদি চাটনির তেঁতুল খাওয়াই?
প্রেমিকার ছোটভাই সমুদ্র--- খুব মনে রাখি
নুনের পুতুল হয়ে গুটিসুটি তার কাছে যাই
সিলিং পাখা
সিলিং পাখাটি ওই বনবন ঘোরে---
গ্রীষ্মে ভেজা কার্পেট ও মাথার চাঁদিটি শুকায়।
আগেও ঘুরত, রাণাঘাটে, যুবাকবি জয় গোস্বামীর
মাথার ওপরে।
সিলিং পাখারা জানে:
অনন্তের শুদ্ধ হাওয়া টেনে, প্রয়োজনে চিরকাল
কিছু বেশি হাওয়া লাগে কবিদের প্রাণে!
0 মন্তব্যসমূহ