বলপেনে আঁকা সময়ের স্কেচ
পাখির মেলায় গেলে
নীরা আমাকে কিনে দেয় একটি বলপেন
দু'য়ের শরীরে অজস্র স্রোত
মাথায়
দুর্দান্ত
লাটিম
পাখিদের চোখে কেবল তামাশার ঘোর...
নীরার বলপেন কখনো বৃত্ত আঁকে
কখনো সরল আর বক্ররেখায় টেনে দেয় ধানক্ষেত।
সকালের রোদ্দুরে দু'টি ছায়া সামনে দাঁড়ায়, সমান্তরাল
প্রথমা কৃশকায় হচ্ছে নিয়তদিন
দ্বিতীয়া মাথায় তুলছে পাখিদের খেজুরবাগান
একটি রেখার মগজবন্দি গীতা, বাইবেল
পবিত্র কুরআন
অন্য রেখায়
পোড়াঘাট
পাখিদের
কবরস্থান।
হেমন্তের ইশতেহার
নীরার হেমন্ত পুড়ে মরার মতোই সুখকর...
নিত্যকার হতাশাগুলো বহুরঙা গল্পের শরীর। এক চিলতে হাসিকেও পিষ্ট করে। এ সব হতাশা মাড়িয়ে যন্ত্রের কোল থেকে বেরনো কাগজ, ক্ষণিক আনন্দের জোয়ারে ভাসায়। পুড়ে মরার আশা জাগে বারবার।
শব্দের টুকরো ভেলায় কেবলই কালো কালো অক্ষর। ভালোবাসা ফেরি করি সদূরের সেল্সম্যান। আহ্বান করি শীতকন্যার সব্জিসুখ।
বাঁচা মরার এই ইশতেহারে অনেকে নাম লেখান, হলদে গাঙে তাঁতের সুতোয় স্বপ্ন সাজান... কেউ আবার মুচকি হেসে আঙুলের ফাঁকে পরিয়ে দেন নগরের লাল টিপ।
নীরার হেমন্তে আমি শুধু বন্ধ ঝাপিতে সাপুড়ের মন্ত্রজপ। ফেরার কান্নাটুকু রাখি বিষের পেয়ালায়...
ছায়া
ছায়ারা দীর্ঘ হলে আমি ক্ষুদ্র হয়ে যাই
ভয় ঘিরে রাখে সারা শরীর
বিছানায় মাথা রেখে অন্ধকার ঘুমোয়;
মৃত্যু জাগে
মানুষ মৃত্যুর ভাইবোন;
কখনো গলাগলি, কখনো কথার বাক্যবাণ
সূর্যটা কুটুম হলে
মানুষের বয়স কমে
ছায়ার আয়ু বাড়ে
নিঃশ্বাসের বাটখারায় আমরা মাপি
সময়ের দানবাক্স
আমি চলি
ছায়া চলে সাথে সাথে কালরাজের হাত।
প্রতি রাতে ছায়াতেই মিশে থাকে ঘুমবুড়ি
আর রাত জমে থাকে আলোর পর্দায়।
নিমফুল
নিমফুল ডাকে এসো বুনোফুল, বনপাখি
শোক
জ্বরা
সন্তাপ
নিয়ে এসো সব...
মগডালে বসা ফিঙে আজ বাড়ি ফিরবে না;
রঙ কালো বলে কালো সন্ধ্যায়-
কোন ভয় নেই তার
সখ নেই বিয়ের পিড়িতে বসার।
এক একটা আইল পার হয়ে
আমি বউয়ের কপালে আঁকি অগনিত সময়ের হাড়
হাড়ের টিপ জড়ো করে সে পেতে চায়
কচ্ছপের বারোমাস।
আমি নিমফুল ভালোবেসে ক্ষয়ে যাচ্ছি
পড়ন্তবেলার ধার ঘেসে হেঁটে যাচ্ছি স্থুল ছায়ার মেলায়।
0 মন্তব্যসমূহ