ছোটবেলায় পড়েছি সূর্য স্থির,পৃথিবী ও গ্রহগুলো
সূর্যের চারদিকে প্রদক্ষিণ করতে থাকে। এখন জানলাম
সূর্য প্রচণ্ড বেগে নীহারিকার
সাথে অসীমে ধাইছে। পিছন পিছন সর্পিলাকার গতিতে আমাদের পৃথিবী অনন্তের পথে। স্বততই
ধাবমান পৃথিবী যেমন ব্রহ্মান্ডীয়
পরিবেশের ভিতর দিয়ে গড়াবে, তেমনি পৃথিবীর ভৌতিক মানসিক
সাংস্কৃতিক পরিবেশের পরিবর্তন হতে বাধ্য। এটাকে ভাঙা গড়ার নিয়ম ভাবা যায়। এমন
পরিবেশ তৈরি হয়েছে এখন,মানুষের ধ্যান ধারনা, থাকা
খাওয়া, চলন
বলন,সাহিত্য সংস্কৃতি দ্রুত বদলাচ্ছে। কবে থেকে কালি কলম মন লেখে তিনজন এই
প্রবাদে লেখাপড়া চলছিল, এখন হঠাত্ করে জ্ঞান
ও সাহিত্য সাধনার ভার্চুয়াল যুগে প্রবেশ। আমরা এখন ডিজিট্যাল যুগে অজান্তেই সহজ
হয়ে গেছি। আমাদের অস্তিত্বই ডিজিট্যাল। এখন আমরা রিয়াল ও ভার্চুয়াল দুই বিপরীত
সিস্টেমের সমন্বয়ে। আমাদের অনলাইন ই সাহিত্য ভার্চুয়াল। একে আমাদের সাথে আরো বেশি
করে ঘনিষ্ঠ করে দিল যখন পৃথিবীতে করোনা প্রবেশ করল।
এবং সইকথার যেহেতু কোনো বিশেষ সংখ্যা নেই সবই সাধারণ সংখ্যা আবার অন্য দিক
থেকে বলতে গেলে সবই বিশেষ সংখ্যা। এই সংখ্যাটি বিশেষ এই কারণে নয় এটি বাঙালীর
সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গা পূজার প্রাক্কালে বের হচ্ছে। এই সংখ্যাটি বিশেষ এই কারণে যে
এমন সময়ের মধ্যে দিয়ে আমরা যাচ্ছি যেখানে উৎসব সেটা পূজাকে
ঘিরেই হোক বা বই কে ঘিরেই তা খুব অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তার কারণ মেলামেশায় আমাদের বিধি
নিষেধ রয়েছে । যতদিন না পর্যন্ত একটি প্রতিষেধক আসছে ততদিন । যে পরিমানে প্রিন্টেড
পত্র পত্রিকা(শারদীয়া) বের হয় তা এবার প্রকাশিত হতে পারছে না যেহেতু আমরা আনলক বা আংশিক
লক ডাউনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি । সেই কারণেই এই ওয়েব পত্রিকাগুলি এই সময়ে খুব গুরুত্বপুর্ণ
হয়ে উঠছে আর আমরা খুব সহজেই কাগজে ছাপা পত্রিকার বিনিময়ে
ওয়েবজিন পত্রিকা প্রথাটি মেনে নিয়েছি। যদিও শুরুটা করোনা কালের অনেক আগেই হয়ে গিয়েছিল ।
বিশ্বের অর্থনীতি যেভাবে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে তার সরাসরি প্রভাব জনজীবনে
দেখা গেছে । তার প্রভাব লেখাতেও এসে পড়েছে । ভেবেছিলাম উত্সবের মরশুমে করোনা নিয়ে লেখা
প্রকাশ করব না । কিন্তু লেখক তো যে সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তাকেই তুলে ধরতে চান সেখানে
আমি সে সব লেখাকে না রাখার কেউ নই । যা কিছু
নিউ নর্মাল বা সময়ের স্বাভাবিক প্রবনতা তাকে অস্বীকার করা যায় না । আমাদের লেখায় কি কিছু পরিবর্তন
চোখে পড়ছে ? বা আমাদের ঘরবন্দি রেখে প্রকৃতি কি এবারে একটু বেশিই সেজে উঠেছে ? নাকি
আমাদের চোখ বা রুচির বদল হয়েছে
? উত্তর করোনাকালে কি কি বদল হতে পারে
আমাদের চারিত্রিক বা মানসিক এসব প্রশ্ন মনে আসছে। তবে সঠিক ভাবে অনুধাবন করতে হলে তার
জন্যে হয়তো আরো কিছু সময় অপেক্ষা করেতে হবে।
এই সংখ্যায় এবং সইকথা আয়োজিত ফেসবুক লাইভ আড্ডার ভিডিও
(ইউ টিউব) সংরক্ষণ করা হল আরো বেশি দর্শক শ্রোতার কাছে পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে। আরো একটি বিভাগ
‘কবি ও ছবি’ বিভাগ চালু করা হল যেখানে কবিতার উপর
চিত্র শিল্পীরা ছবি আঁকবেন। আশা করি
এই বিভাগেও আপনাদের সাড়া পাবো ।
‘এবং সইকথা’ ওয়েবজিনটিকে একটি অন্তরঙ্গ, বিজ্ঞান
ও আধ্যাত্মিক, প্রগতি ও
সাহিত্যের পটভূমি হিসাবে গড়ে তোলার নিরন্তর চেষ্টায় রয়েছি। বৌদ্ধিক জনের কাছে অনুরোধ আপনারা পঠন পাঠনের জন্য ‘এবং সইকথা’তে আসুন এবং আপনাদের মূল্যবান মতামত
রাখুন ।