চুল্লি থেকে বেরতেই
ট্রেটা একঝলক দেখে নিয়েছিল নির্বাণ। সেই একই ফিগার। যেন ভস্ম দিয়ে কোন শিল্পীর
হাতের এক আসাধারন ভাস্কর্য। একটু পরেই ওই ভস্ম ঘেঁটে নাভিকুণ্ডলী ও অস্থি সংগ্রহ
করে ভাসিয়ে দেওয়া হবে গঙ্গায়। ভেসে যাবে জীবন যৌবন সহবাসের টুকরো টুকরো স্মৃতি।
ভেসে যাবে জীবন থেকে অতীতে।
নির্বাণ হঠাৎ
মোবাইলে তুলে নিল ভস্মশিল্প। শ্বশুরবাড়ির অনেকে অবাক ও ভুরু কুঁচকে দৃশ্যটা দেখল।
যদিও নির্বাণের তাতে কিছুই যায় আসে না। যে মেয়েটাকে বলতে গেলে একটু জোর করেই তার
দিকে ঠেলে দিয়ে দায় ঝেড়ে ফেলতে চেয়েছিল, তাদের ভ্রুকুঞ্চনে ওর এখন শুধু হাসিই পায়।
শ্রী মেয়েটিকে
মেরেকেটে খুব জোর সুশ্রী বলা যায়। শ্রী নিজেও সেটা জানত। ঠিক এই জায়গাটিতেই
নির্বাণ ওকে ভালবেসে ফেলেছিল। শ্যামলা রোগাটে চেহারায় নিজেকে অপরূপা করে তুলেছিল
শুধুমাত্র ছেলেমানুষি ও সারল্য দিয়ে।
সন্তান না আসাতে ও
ভেবেছিল, এত অনাথ শিশুদের অন্তত একজনও ওর মাতৃত্ব পাবে। সইসাবুদও হয়ে গেছিল কিন্তু
বাদ সাধল কিডনির অসুখ।
ঝুলে রইল মাতৃত্ব,
ঝুলে রইল বন্ধন। আস্তে আস্তে শ্রী গেল, সারল্য গেল, মাতৃত্ব গেল। শুধু রইল তীব্র
সন্দেহ ও তির্যক মন্তব্য। রোগের বিকার।
শিহরিত হল নির্বাণ।
শুধুই বিকার! শ্রীর অসুস্থতাকালীন ওর একাকীত্ব কী ভরে ওঠেনি প্রমার উচ্ছলতা!!
হ্যাঁ তুলেছিল।
অবশেষে এল এই দিন। আজ দাম্পত্যের ভস্ম ঘেঁটে নির্বাণ জোর করে ভুলতে চাইছিল তীব্র
আবেগ ও ভালবাসাকে।