সাম্প্রতিক

6/recent/ticker-posts

প্রদীপ কুমার রায়





মূল ওড়িআ কবিতা : মমতা দাশ

অনুবাদ : প্রদীপ কুমার রায়






 বাঁশি 



তারা কথা বলছিল বাঁশির বিষয়ে ।

লোহা, কাঁসা,তামা,রূপো , বাঁশের

এমনকি  সোনার তৈরি বাঁশি

বাঁশির  নানা সুর , ধ্বনি , রন্ধ্র ,

কুহুক বাঁশি , ভাঙ্গা বাঁশি ,

মধুর বাঁশির সুরের বিষয়ে ।

কেউ  বলল বিশ্বের প্রসিদ্ধ বাঁশি বাদকের

নাম ,গ্রাম , ঠিকানা , জীবন কাহিনী আর

পাগলামির খবর ।

বাঁশি   ?

আমার প্রশ্নে 

আমার হাড়ের গভীরে আঘাত লাগে

খুলে গেল জংধরা কপাট

দেখলাম এক অপরুপা তরুণী

তরতর, এলোমেলো

চাঁদ আঁধার রাত, হাতে বাঁশি 

আমার চিত্-চক্রবালে

উঠে আসে কদম্বের সূর্য

আমার ফুলদানির কৃত্রিম ফুলের উপর

বসে  ঝলমলে প্রজাপতি 

কলিং বেলের কুহু কুহু কোকিলের সুর

ঠোঁটের মধু মাখা আমার হাতের পাতাকে

মুঠো করে দেই আমি

আঁচলে মুছে দেই লুকানো চোখের দৃষ্টি 

আমি তাদেরকে বলবো আজ

বাঁশির কথা , সেই দিনের কথা ?

বলবো , আমি আজীবন জেনেছি একটি বাঁশির সুর

দেখেছি , একমাত্র বাঁশির বাদককে

এক বিশ্বময় বিশাল রাতে জোছনাঝরা আলোর নিচে

নিলজল বিস্তারের কূলে কূলে

সে কেবল আমার জন্য বাজিয়েছিলো বাঁশি

মাত্র একবার 

সেই মুহূর্তে

আমার পৃথিবী বেঁচে উঠেছিল যে

বারবার  প্রয়াস করেও তারপরে

আত্মহত্যা করতে পারিনি কবে ।


যা ঘটেছিল সেই রাতে

অভিনীত হয়েছিল যা চিরকালের রঙ্গমঞ্চে

আমি কি আজ আবার সেই দিকে

বাড়াতে পারবো আমার আঙ্গুল  ?

*********


মমতা দাশ উড়িয়া কাব্য জগতের এক  পরিচিত নাম । এযাবত প্রকাশিত তার ৮ টি কাব্য সঙ্কলন বিপুল পাঠকীয় স্বীকৃতি লাভ করেছে ।তার কবিতা মুখ্যতঃ এক সচেতন, সম্বেদনশীল মানুষের আত্ম- অন্বেষণের অভিব্যক্তি ।তার কবিতার অন্তস্বর গভীর, গম্ভীর আবার কখনো এক রহস্যময় প্রেমিক সত্তার সাথে মিলন , বিচ্ছেদ, মান অভিমানের মধুর রসে রসাণিত । নিয়তি পীড়িত, দুঃখ যন্ত্রণাগ্রস্থ এই জীবন কে ভোগ করে, সহ্য করে য়াকে অতিক্রম করার প্রক্রিয়ায়  কবি মমতা দাশ সৃষ্টি করেছেন এক উজ্জ্বল কাব্যালোক । কবিতা র জন্য সাহিত্য একাডেমী পুরস্কার প্রাপ্ত ।





প্রদীপ কুমার রায়