কালোটাকা
পূর্ণের বাজারের মধ্যে ফলের দোকান। ভালই রোজগার। রাতে
বাড়িতেই ক্যাশ টাকা রাখে। তার থেকে প্রায়ই সরমা কিছু টাকা সরিয়ে রাখে। এঈ নিয়ে
প্রতিদিন স্বামী-স্ত্রীর অশান্তি। সরমা জানে,
পূর্ণ খেতে ভালোবাসে। ভালো খাওয়ার পেলে
রাগ জল হয়ে যায়। সব ভুলে যায়। কিন্তু আজ পূর্ণ ঘরে ঢূকে বেশ চুপচাপ থাকে। খেতে
বসেও কেমন অন্যমনস্ক। খাওয়ার থেকে বেশি নাড়াচাড়া করছে। সরমা ভাবে কাল রাতে একটু
বেশি টাকা সরিয়েছে। তাই কি চুপচাপ। পরিবেশটা হাল্কা করার জন্য সরমা বলে, “ কী গো আজ
রান্না ভালো হয়নি?”
“ না ঠিক আছে।
আসলে খেতে ভালো লাগছে না।”
“ শরীর খারাপ?”
“ না না শরীর
খারাপ হবে কেন? আসলে মনটা ভালো নেই।”
চিন্তিত সরমা
বলে, “ ব্যাবসায় কী কোন সমস্যা হয়েছে?”
“ যে দোকান
ঘরটায় ভাড়ায় আছি, বাবুরা বিক্রি করে দেবেন বলছেন। এদিকে লিজও শেষ। কালকের
মধ্যে দু’লাখ টাকা দিলে দোকানটা কিনতে পারবো। আমার কাছে লাখ খানেক আছে। তাই
টাকার চিন্তা করছি।”
“ আমার বিয়ের
গয়না তো আছে। তা বন্ধক………”
“ তোমায় কতবার
বলেছি সোনা বন্ধকের কথা তুলবে না।” বলেই রাগ করে উঠে যায়। সরমা বাধা দিলেও শোনে না।
রাতে পূর্ণ চোখ বন্ধ করে খাটে হেলান দিয়ে
চিন্তা করছে। সরমা চিরকাল রাতে পূর্ণকে এ সময়ে পান দেয়। সরমার ঘরে ঢোকে। চোখ বন্ধ
করেই পূর্ণ হাত পাতে। কিন্তু পূর্ণ অনুভব করে, সরমা হাতে পানের বদলে অন্য কিছু
দিয়েছে। তাকিয়ে দেখে টাকার বান্ডিল। অবাক হয়ে পূর্ণ সরমার দিকে তাকায়। মুচকি হেসে
সরমা বলে, “এগুলো তোমার পকেট মারা টাকা। লাখ দেড়েক মতন ছিল। বলতে পার এটা আমার
কালো টাকা।”