অবচেতনের ছায়াটি যে গভীর, মুছে ফেলার শত চেষ্টাতেও সে আরো স্পষ্ট
হতে চায়, বেড়িয়ে আসতে চায় সব ছাড়িয়ে। আসলে দিনে দিনে কালে কালে সেই ছায়া আলো আঁধারের বেড়া টপকে নিজের শিকড়টি ছড়িয়ে দিয়েছে যেখানে মিশে আছে স্বচ্ছজলের মত গভীর সরলতা, মাটির মত নম্র উদারতা।
এই যে সইতে সইতে নুয়ে পড়ে ছায়াটিকে নিজের সাথে জড়ালাম, তাকে ভালবাসলাম, সব ঢেউ সরিয়ে সরিয়ে এগিয়ে গেলাম এক্কেবারে কাছটিতে, তাতে ভেসে রইলাম
শালুকপাতার মত বুকের ওপর ,ডুবজলে থাকল আমার সমীহের সবটুকু। সব নিবেদনের উত্তাপে ভেসে যাচ্ছে লজ্জা গভীর অন্ধতায়।
সেখানে অনেক কোলাহল, সৃষ্টির আদি সেখানে, অন্তও সেখানে। সেখানে যত
আসক্তি, তত অনাশক্তিও। শরীর, অশরীর রতি মৈথুন কাম ক্রোধ প্রেম অপ্রেম সবের আসা যাওয়া সেখানে।
আমি জানি তুমি চাইলেই নিতে পার সব ভার। সব অপ্রাপ্তি,আর উত্তাপের নত পৃষ্ঠা গুলিকে সোজা করে টানতে পার নিজের কাছে ঠিক বুকের মধ্যিখানে যেখানে সব ঢেউ সব উৎসের চলাচল।
তুমি বলবে, আমি নিলাম সবটুকুই নিঃশব্দের তল খুঁজে যেখানে কোন সাড়
নেই অসাড় ও নেই, ভেদ নেই অভেদ ও নেই, শধু আধারের আশ্রয় হয়ে রইলাম তো চেয়ে অরূপের
মাঝে..তোমারই তো রইলাম, সেই প্রত্যন্তের পার ছুঁয়ে কুসুমকে প্রস্ফুটিত করলাম তোমার পল্লবিত জোয়ারে ... বাতাসের ছোঁয়ায় জলের ধারায় আলোর উষ্ণতায় জড়িয়ে অনন্ত ছায়াতল হয়ে.....!
নীরবে মানলাম আমি সেই সত্যি, সেই সুন্দরের অস্তিত্ব আমার সমগ্র চেতনার অনুভবে, আনন্দধারায়।রইলে আমার আধারের শক্তি হয়ে আমার চিন্তায় বুদ্ধিতে , রইলে তুমি আমার
অন্তরমহলের রাজা হয়ে, মানলাম সে কথা।
এই যে তোমায় এত ভালবাসছি, ভোরের আলো মেখে পাপড়ির চোখ মেলার আকুলতায়
সমস্ত ভার টুকু মেলে দিয়ে উৎসুক হয়ে রয়েছি ওই মাথুর পথের দিকে.... আমার কান্নাকথার
বিরহরঙে এঁকে রেখেছি তোমার আসার পথ ......
কাছে টানছি তোমার প্রিয় যা কিছু তোমার অন্তরের, তোমার বাঁশিটির মত
আসঙ্গ মোহে আঁকড়ে ধরছি তোমাকে পাওয়ার ইচ্ছেটি কে।
আসবে কি তুমি সমস্ত আলোড়ন
নিয়ে, আসবে তুমি তোমার প্রিয় কালিন্দী তট, তোমার গোপবন্ধু, সকল গোপিনীর মধুরতায়! আমার
অসীম আবেদনটি ভাসিয়ে দিয়েছি জলের ধারায়, মেঘের ঘনত্বে, বাতাসের হৃদ্যতায়। নীলছায়াটি ধরে রেখেছি আমার দু চোখের তারায়, তোমার বাঁশির তরঙ্গে আমার অন্তকরণের ব্যাকুল বিরহী মন্ত্রটি বেঁধে .....সেই সুরের মন্ত্রজলে সব লজ্জা ধুয়ে তোমাতে
জড়িয়ে নেবো নিজে অনন্ত মিলনোৎসবে......