দুটি কবিতা
টান
মনকেও ধ্যানঘর
থেকে টানতে টানতে এনে
নিজের দোসর করে
ফেলে,
তারপর বেড়িয়ে
পড়ে
না-পাওয়া
যৌনতার খোঁজে ---
অদূরে পড়ে থাকা
বকুলফুলগুলি
বিষন্ন চোখে
ওদের চলে যাওয়া দ্যাখে ...
নতুন পৃথিবীর রঙিন উতসবে
যে সুখের
ফোয়ারা ফোটে,
সেখানে শরীর ও
মন
যে উদ্দামতা
খুঁজে পায়
সেটাই যেন তার
অন্তিম,
এই মনে করে
তারা ভুলে যায়
পূর্বজন্ম-পরজন্মের
আলো-অন্ধকারের
ইতিহাস-ভূগোল …
হঠাত একদিন যখন
ঝড়ের কাঁপন শুরু হয়
আদিগন্ত সব
কিছু ভেঙে চৌচির ,
প্রবল হাওয়ায়
ভাসতে ভাসতে শরীর ও মন
একসময় ফিরে আসে
সামান্য খড়কুটো
ধরে ---
বকুলফুলগুলি
তখনও জেগে থাকে প্রতিমাঘরে,
ঘৃণাহীন চোখে
শুধু তাকিয়ে থাকে ওদের দিকে
ক্ষমার সুগন্ধ
ছড়িয়ে ...
নৈতিক জয়
উৎসব তোমাদের
অনেক দিল,
পুরষ্কার,
স্মারক, উত্তরীয়, মানপত্র ---
এসব নিয়ে তোমরা
গুচ্ছ গুচ্ছ
ছবি আঁকলে ফেসবুকে, হোয়াটস আপে,
তোমাদের দেখে
বাংলা কবিতা
মুখ টিপে হাসতে থাকলো, আর
তোমরা ভাবলে,
এবার বুঝি সত্যি সত্যি তোমাদের
নৈতিক জয় হলো
...
ওদিকে , যে
ছেলেটি খিদে পেটে ঘুরে ঘুরে
কবিতা জড়ো
করছিল,
যে মেয়েটি,
গরীব বাবা-মা’র সংসারে
জোড়া তাপ্পি
দিতে দিতে
আঁচলে আঁকছিল
শব্দের আলপনা,
তাদের কারও তোমাদের উৎসবে যাওয়া হলনা---
কিন্তু, বাংলা
কবিতার ঈশ্বর গুটিগুটি পা-এ
তাদের বাড়িতে
এসে দেখলো,
উঠোনে, দাওয়ায়,
বাড়ির চালে
জুঁই ফুলের মতো
ছড়িয়ে আছে পবিত্র
কয়েক গুচ্ছ কবিতার শব্দ ...
বিশ্বজিৎ রায়