সাম্প্রতিক

6/recent/ticker-posts

অনিমেষ গুপ্ত



আশ্রম

১)
      
ধীরে ধীরে অনেক কিছুই বুঝতে পারছিলেন নিরঞ্জন আর এই বোঝাটাই তাঁর ভেতরে একটা তাগিদের জন্ম দিল শেষ অবধি । মনের মধ্যে অনেক কাটাকুটি এবং অনেক না-ঘুমানো রাতের পরে সিদ্ধান্তটা নিয়েই ফেললেন নিরঞ্জন আর এক বিষণ্ণ রবিবারে মালপত্র সমেত তাঁর গাড়ী ছাড়ল বাড়ী থেকে  

এই অবধি সব কিছু গ্রহনযোগ্য ছিল সকলের কাছে কিন্তু গাড়ীটা পৈলান পেরতেই ড্রাইভারের পিঠের ওপর ঝুঁকে পড়ে নিরঞ্জন বললেন, ‘ঘোরাও, ঘোরাও, ডানদিকের কাঁচা রাস্তা ধর।‘
হঠাৎ এই দিক পরিবর্তনে নিরঞ্জনের ছেলে-বৌমা, সন্দীপ আর নয়না দুজনেই অবাক   
নিরঞ্জন বললেন, ‘আশ্রমেই যাচ্ছি তবে সেটা বৃদ্ধাশ্রম নয়'

২)

পৈলান থেকে ভেতরে সিদ্ধদাসের আশ্রম   চারপাশে নিমগাছের ছায়া, ছোট্ট পুকুর । কেমন স্নিগ্ধ ভাব  চতুর্দিকে । নিরঞ্জনের জন্য রাখা ঘরখানার পূব-দক্ষিণ খোলা । জানলা খুললে জুড়িয়ে আসে মন। 

প্রথম দু’দিন খুব ভালো লাগছিল । কেমন শান্ত স্তব্ধতা চারপাশে । তৃতীয় সন্ধ্যায় ঝরাপাতা আর ঘূর্ণি হাওয়ার মধ্যে বসে থাকতে থাকতে কিন্তু প্রশ্নটা ক্রমশঃ তীব্র হয়ে উঠে এল নিরঞ্জনের মনে । তাঁর অবর্তমানে কেমন আছে ওরা! কী করছে! সুখেই আছে নিশ্চয়।

ভাবতে ভাবতে উদাস হলেন নিরঞ্জন...
সংসার ! কারো স্বস্তি দায়হীনতায়, কারো... অভিমানে ।     





অনিমেষ গুপ্ত