সাম্প্রতিক

6/recent/ticker-posts

তপনজ্যোতি মিত্র:কবিতা

 


গুচ্ছ কবিতা

 

সম্পর্ক 


 

কোনো কোনো সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়,

কোনো সম্পর্ক অশেষ -

 

বিষাদবেলার পরে উজানের নদী কী বিষণ্ণ হয়ে রয়েছে,

বিধুরা জল তার গল্পকথা সৃষ্টি করে চলে যাচ্ছে মোহনার দিকে,

কে  শুনলো সেই রূপকথা,  নদীর করুণ জলশব্দ ?

 

রূপভাস দিগন্ত বলছে -  চিনতে পারো ?

 

কেউ কেউ ঘরে ফেরে,

কেউ ফেরে না ।

 

ঘর আর পথ

পথ আর ঘর -

এই দুইয়ের সন্ধানে আজীবন বেলা যায় ।

 

কোথায় রূপ-কথা আর অরূপ-কথা হাত ধরে থাকে পরস্পর ।

 


 

নৈঃশব্দ্যের জানালা


 

নৈঃশব্দ্যের জানালা খুলে একটুকরো শব্দ ভেসে এলে স্থবির হয়ে যায় জ্যোৎস্নাঘর ।

সে সুকোমল শব্দধ্বনি -

কোন গহন থেকে উঠে আসা করুণতম আকুতি,

আর্তিময় ডেকে উড়ে গেছে যে বিষণ্ণা পাখি,

তার স্মৃতির মেঘ ফিরে আসে  জনারণ্যে,

জনারণ্য স্তব্ধ হয়ে যায় ।

 

তখন কে এক বৃষ্টিঝরা দিনের কথা ভাবে,

ঝরে যাচ্ছে পরমা বৃষ্টি সারাটা দিন ।

আর নদীময় জলশব্দ শুধু অঝোর কান্নার মত বয়ে যায় ।

 নৈঃশব্দ্যের জানালার কাছে কে দাঁড়িয়ে থাকে আজীবন -

 প্রতিটা জলশব্দ তাকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায় ।

 


 

কবিতার পাখিরা


 

এক একটা করে পাখি নেমে আসে সেই জলাশয়ে। তাদের আলোড়ন জুড়ে জেগে ওঠে শৈল্পিক বিকেল ।

তাদের রঙিন ডাক বুকে নিয়ে পৃথিবী আরো একটু সুন্দর হয়ে ওঠে,  আরো একটু করুণ ।

কবিতাহীন কবির কাছে তখন ধরা দেয় অধরা কবিতাগুলো ।

বলে - এই ত পাখিজীবন, এই ত ভালোবাসা, এই ত কবিতার জীবনযাপন ।

শব্দ নৈঃশব্দ্যের কবিতারা আনন্দ-বিষাদের অনুভব নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে -

এই কি কবিতার অমেয় পথ ?  কবিতার ক্রান্তি ?  আলো-ছায়া ?

 

অচেনা অজানা পথিকের মত কবিতার পাখিরা অনন্তের দিকে উড়ে যায় ।



তপনজ্যোতি মিত্র

 

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

2 মন্তব্যসমূহ

  1. খুব ভালো লাগল তিনটি কবিতাই। লেখাগুলির আলো-ছায়া, বিষন্নতা আর আর্তি মনকে স্পর্শ করল।- পৃথা চট্টোপাধ্যায়।

    উত্তরমুছুন
  2. তিনটি কবিতাই সুন্দর। মায়াময়। ভালো লাগলো তপনজ্যোতি বাবু। ~ রাজদীপ ভট্টাচার্য

    উত্তরমুছুন