১
প্যারিস কত মানুষের স্বপ্নের নগরী, প্যারিসের
মানুষের গায়ে কত শিল্পের ছাপ, কিন্তু আজ রাস্তায়-রাস্তায়
ভিখারি-পকেটমার-অসাধু-মদ্যপ মানুষের ভিড়। এই দুর্দশার মুখোমুখি আমাদেরকেও
দ্বিতীয়বার প্যারিস-ভ্রমণে পড়তে হয়েছে।
নোৎরদাম যাওয়ার মুখে মেট্রো স্টেশনে উঠতে গিয়ে এমন বাধা,
অথচ খুব বেশি লোকও যে উঠছে তা নয়। আমাদের সঙ্গে দুটি অল্পবয়েসী কিশোরী এবং একটি
কিশোরও উঠল। কিশোরটি প্রশ্ন করল, কটা বাজে, যদিও
ফরাসি ভাষায় প্রশ্ন, কিন্তু সঙ্গে আকার-ইঙ্গিত থাকায় দিব্যি বুঝলাম, ঘড়িটা
উলটে দেখালাম। সেই কিশোর এবং একটি কিশোরী আমাকে এমনই ঘিরে রেখেছে আর সোমা এতই দূরে
চলে গেছে কিছুতেই কেউ কারুর কাছাকাছি পৌঁছাতে পারছি না , অথচ
ট্রেনে তেমন ভিড়ও নেই। মনে কু-চিন্তা এলো। হঠাৎ সোমা হৈ-হৈ রৈ-রৈ করে উঠল, ওর
পাশের কিশোরীটি হাতে চাদর দিয়ে সমান তালে সোমার শরীর আড়াল করছে কেন! হৈ-হৈ করে
সোমা আবিষ্কার করে উঠল, ওর কোমরের পাউচ ব্যাগের চেনটি খোলা। ওর চিৎকারে
কিশোর-কিশোরীরা তিনজনই নেমে পড়ল ট্রেন থেকে, তখনও
ট্রেন স্টেশনে দাঁড়িয়ে। তৎক্ষণাৎ সোমাও নেমে পড়ল ট্রেন থেকে বিনা বাক্যব্যয়ে। বোঝো
কান্ড! অতএব আমাকেও নেমে পড়তে হল। আমরা স্টেশনে নেমে পড়া মাত্র ওই কিশোর-কিশোরী
তিনজন একলাফে ট্রেনে উঠে পড়ল ফের এবং
তৎক্ষণাৎ ট্রেনটি চলতে শুরু করল। ট্রেনটি বীরবিক্রমে চলেও গেল। মাত্র কয়েক
সেকন্ডের মধ্যেই এমন দ্রুত এত কিছু ঘটে গেল, ট্রেনে
উঠে নেমে পড়াটাও।
যাইহোক সোমার পাউচব্যাগ থেকে কিছুই নিতে পারেনি, কিন্তু
নিলে আমাদের দেশে ফেরার টিকিটটি খোয়া যেত, তখন
তো এখনকার মতন ই-টিকিট হত না, তা যাই হোক সোমার ব্যাগে আর কিছু মূল্যবান বস্তু
অবশ্য ছিল না। হঠাৎ-ই দেখি আমার কোমরের
পাউচ-ব্যাগের তিন-তিনটি চেনই খোলা। হায় রে কী হবে! এর মধ্যে আমাদের ডলার পাসপোর্ট
সর্বস্ব। ভয়ে এমনই কাঁপছি আমরা যে, ব্যাগটা ফাঁক করে দেখার সাহসটি অবধি নেই। শেষমেষ অবশয দেখা গেল সেগুলি সবই রয়েছে, তারা
কিছুই নিয়ে উঠতে পারেনি, সোমা খুবই সময়মতন হৈ-হৈ করে উঠেছিল। আমাদের সারা
শরীর-মন অবশ, ভেবেই পাচ্ছি না যে কী সাংঘাতিক ঘটনা ঘটতে চলেছিল
এই বিদেশ-বিভুঁইতে। ওগুলো সব চলে গেলে কী যে হত! আমরা দেশেই বা ফিরতাম কী করে! কী
করতাম! এমনই বিভীষিকাময় ঘটনা ঘটতে চলেছিল, আর
কয়েক সেকন্ড বাদে ঘটেও যেত ঘটনাটি! ভাগ্যিস সোমা আগেই টের পেয়েছিল
ষষ্ঠ-ইন্দ্রিয়-মাধ্যমে! কলকাতার বাসে-ট্রেনে চড়ে কিছু তো জ্ঞানলাভ হয়েছেই আর তার
সুবাদেই ভয়ঙ্কর বিভীষিকা থেকে বেঁচে গেলাম সে যাত্রায়। যদিও আজ অবধি যখনই মনে পড়ে
ভয়ে হিম হয়ে যাই। আমরা ভ্রমণার্থী, আমাদের সঙ্গে এত বড় ঘটনা ঘটতে চলেছিল, এই
বিষয়ে স্থানীয় মানুষের ভূমিকাও অতুলনীয়, তাদের মুখে হাবে-ভাবে
কোনোই প্রতিক্রিয়া নেই। ট্রেনের অন্যান্য মানুষেরা যেন সিনেমা দেখছে অথবা তারা যেন
নেই-ই সেখানে। কিংবা হয়ত প্রতিনিয়ত দেখতে দেখতে তারা এমনই নির্লিপ্ত হয়ে গেছে।
কলকাতাকে আমরা কলকাতার মানুষেরা কত বিষয়েই কত গালিগালাজ
করি, কিন্তু এই যদি ঘটনাটি কলকাতায় ঘটত, স্থানীয়
মানুষের ভূমিকাটি ভাবুন একবার। এমন নয় আমাদের অবলা মনে করে তারা আমাদের সর্বস্ব
নিতে সাহস করেছিল, এমনও নয় যে ১৯৯৬ থেকেই হঠাৎ প্যারিসের এমন
দুরবস্থা। ওই ঘটনার বছর দুয়েক আগে ১৯৯৪-তেও এমনই দুর্দশা ছিল প্যারিসের। সেবার
‘কসমস’ ভ্রমণসংস্থার সঙ্গে আমরা প্যারিসে গিয়েছিলাম, আমাদের
গাইড কার্লো চাবি দিয়ে বাসের দরজা বন্ধ করে আমাদের সবাইকে নিয়ে অপেরার সামনে
রাস্তায় নেমে দুঘন্টা পরে ফিরে বন্ধ দরজা খুলে বাসে উঠে দেখল যাবতীয় জিনিসপত্রে
ভরা তার ব্রীফকেসটি উধাও। সেই থেকে আমরা জানি যে ইউরোপের অন্যান্য দেশ যতই নিরাপদ
হোক, প্যারিস মোটেই নয়।
২
শুধু কী প্যারিস? ফ্রাঙ্কফুর্ট
শহরটিকেও আমাদের খুব নির্ভেজাল মনে হয়নি ১৯৯৬তে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে সন্দেহজনক মানুষকে
ভালই দেখা যায়। সাবওয়েতে বা স্টেশনের চারপাশে বা খুব ব্যস্ত এলাকায়ও যখন ভিড় কমে
যায় তখন প্রচুর নেশাগ্রস্ত সন্দেহজনক মানুষজনকে দেখা যায়। তাদেরকে এড়িয়ে চলাই
বুদ্ধিমানের কাজ। আমরা উইসবার্ডেন-এ গিয়েছিলাম ট্রেনে করে। Mainz
Sud স্টেশনের গায়েই আমরা রাইন আর মাইন এই দুই নদীর সংযোগ
দেখতে পেয়েছিলাম। উইসবাডেন থেকে ফেরার পথে অন্য লাইনের ট্রেন ধরে অন্যদিক দিয়ে
ফিরেছিলাম আমরা, সেই ট্রেন আমাদের জনতা এক্সপ্রেসের চেয়েও খারাপ
এবং সেই ট্রেনে লোক নেই বললেই চলে। পুরো ট্রেনে সম্ভবত ১০ থেকে ১৫জন লোক। আমাদের
কামরায় শুধু আমি আর সোমা, ভয়ে গা-ছমছম করার মতন অবস্থা।
শুধু ট্রেন বা স্টেশনচত্বর নয়, পুরো
শহরটিই সন্দেহজনক ছিল। একদিন একটি বিরাট দোকানে গিয়েছিলাম। সেই দোকানের চতুর্দিকে
প্রবেশপথ। আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশনের দিকে একটি দরজা। দোকানটিতে অ আ ক খ সবই পাওয়া
যায়। আমরা জিনিস দেখতে ব্যস্ত। হঠাৎ আমরা দেখলাম একজন মধ্যবয়সী খুবই ভদ্রজনোচিত
মানুষ, ভাল জামা-কাপড়-টাই পরে, মনযোগসহকারে
সিডি ক্যাসেট দেখছে, হঠাৎ চারটি ক্যাসেট নিয়ে দরজা দিয়ে দ্রুতগতিতে
হেঁটে বার হয়ে গেল সাবওয়ে স্টেশনের দিকে। আমি আর সোমা দুজনেই দেখলাম, আরও
কেউ কেউ হয়তো দেখেছিল, দোকানিরা নিশ্চয়ই দেখেনি, যদিও
চারদিকেই ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা। আমি আর সোমা তৃতীয় বিশ্বের মানুষ,
ইউরোপীয় মানুষের এরকম আচরণে আমাদের লজ্জিত হওয়ার কথা, না, আনন্দিত
হওয়ার কথা ?
৩
বরঞ্চ ইংল্যান্ডে আমরা অনেক বেশি নিরাপদে ঘুরে বেড়িয়েছি।
যদিও লন্ডনে যাওয়ার পর আমাদের সাবধান করে দেওয়া হয়েছিল যে, রাস্তায়
যখন-তখন ছিনতাই হতে পারে, অতএব আমরা যেন পাসপোর্ট এবং বেশি ডলার-পাউন্ড না
নিয়ে রাস্তায় বার হই। আমাদের সৌভাগ্য যে, আমরা এরকম কোনো
দুর্ঘটনার সম্মুখীন হইনি। আমাদের বেড়াতে কোনো সমস্যাই হয়নি। সেখানে কেউ কারোর দিকে
তাকায়ই না। স্থানীয় কৃষ্ণকায় মানুষদের সম্বন্ধেও অনেক কথা শুনেছি আমরা, অনেক
সময় তাদের দৃষ্টি বা তাদের ভাবভঙ্গি আমাদেরও সন্দেহজনক মনে হয়েছে। বিশেষত কালো
চশমা পড়ে যারা দাঁড়িয়ে থাকে রাস্তায় , তারা যে কিসের আশায়
কেন ঘন্টার পর ঘন্টা একই জায়গায় একই ভঙ্গিমাতে দাঁড়িয়ে থাকে তা আমরা জানতে পারিনি।
যদিও অপলক তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কোনো অশ্বস্তিকর ভঙ্গিমা আমাদের চোখে পড়ে নি।
তারা আসলে যেমনই হোক তাদেরকে বৃটিশরা যেমন চোখেই দেখুক, লন্ডনের
বাঙালিরা কিন্তু তাদের ভাল চোখে দেখে না। আড়ালে আবডালে অনেক বাঙালিকে তাদের
উদ্দেশ্যে অনেক কটু কথা বলতেও শুনেছি। লন্ডন-প্রবাসী অশোকদা বলেছিল যে, আমরা
যেন কখনও কোনো কৃষ্ণকায়ের ট্যাক্সিতে না চড়ি, কোথায়
নিয়ে চলে যাবে ঠিক-ঠিকানা পাওয়া যাবে না।
প্রথমবার লন্ডন থেকে দেশে ফেরার প্লেনটি ‘স্ট্যান্স্টেড’
এয়ারপোর্ট থেকে ছেড়েছিল, সেই এয়ারপোর্ট লন্ডনের প্রাণকেন্দ্র থেকে অনেকই
দূরে, আমাদের একটি ক্যাব ভাড়া করতে হয়েছিল, আজ
থেকে কুড়ি বছর আগে আমাদের যেতে ভারতীয় টাকায় আড়াই হাজার লেগেছিল। অশোকদা আমাদের
হয়ে ফোনে ট্যাক্সিটি বুকিং করে দিয়েছিল, কেননা আমরা যদি কোনো
কৃষ্ণকায়ের হাতে পড়ে যাই! অশোকদা যেহেতু
ফোনে কথা বলেছিল, অন্যপ্রান্তের কন্ঠস্বর তার পছন্দই হয়েছিল, যথেষ্টই
ইংরেজ-ইংরেজ। পরেরদিন পাক্কা সকাল সাতটায় ট্যাক্সি এসে হাজির, চালক
একজন কৃষ্ণকায়। দেড়ঘন্টা পথ, যথেষ্ট নির্জন, তার
মধ্যে আগের রাতে ঘুম পর্যাপ্ত না হওয়াতে এবং দুলুনিতে আমরাও ঢুলে ঢুলে পড়ছি ঘুমে।
চালক কিন্তু অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গেই ট্যাক্সি চালিয়ে আমাদের নিরাপদে এয়ারপোর্টে
পৌঁছে দিয়েছিল। আমার জানা নেই অশোকদার অভিধানে ‘নিরাপত্তা’ শব্দটির মূল অর্থ কী।
এখন ইংল্যান্ডের অবস্থা এত ভাল আছে কিনা কে জানে!
৪
স্কটল্যান্ড কিন্তু ইংল্যান্ডের চেয়ে আরও অনেক অনেকগুণ
নিরাপদ। এডিনবার্গ থেকে ন্যাশনাল এক্সপ্রেসের বাস ধরে ইনভারনেস। বাস টার্মিনাসে
যখন নামলাম, তখন রাত সাড় নটা। সম্পূর্ণ অজানা এক জায়গায়
বিদেশ-বিভুঁইয়ে দুজন না-বৃদ্ধা মহিলা এত রাতে! যদিও সূর্য আছে আকাশে, তবু
রাত তো বটেই। তখন ইন্টারনেটের এত চল্ ছিল না,
ফলে আমাদের থাকার জায়গা ঠিক করা হয়নি, আমাদের দেশের
পরিপ্রেক্ষিতে চমকে যাওয়ার মতই বিষয়।
ইনভারনেসে অবশ্য তখন খুবই জমজমাট, ঘন
অন্ধকারও নয়। ইয়ুথ-হস্টেলের দিকে এগোলাম আমরা। ক্যাসেলের পাশের রাস্তা দিয়ে উঠে
কিছুটা হেঁটে মূল হস্টেলে গিয়ে শুনলাম, একটিও ঘর খালি নেই।
সেখান থেকে আমাদের অ্যানেক্স বিল্ডিং-এ যেতে বলল। সেই হস্টেলটি অবশ্য মারাত্মক রকম
দূরে নয়, কিন্তু অজানা রাস্তা , ম্যাপ
দেখে দেখে এবং ওদের নির্দেশমত যাওয়া, তার ওপর সেখানেও জায়গা
পাওয়া যাবে কিনা নিশ্চিত নয়। সোমা এমনিতেই ভিতু মানুষ,
তার ওপর তখন রাত দশটারও কিছু বেশি ঘড়িতে। যতই বলি না কেন একটা রাত অনায়াসে কোনো
হোটেলে থেকে যাওয়া যাবে, যদিও ঘরভাড়া ইয়ুথ-হস্টেলের থেকে অন্তত দশ-বারো গুণ
বেশি, তবুও সোমার ভয় ঠেকায় কে! সত্যি কথা বলতে কি আমারও
কিন্তু বুকের মধ্যে ঢিপঢিপ ঢিপঢিপ শুরু হয়ে গিয়েছিল।
শেষাবধি অবশ্য পৌনে এগারোটা নাগাদ ওই অ্যানেক্স হস্টেলে
পৌঁছে ঘরও পাওয়া গেল, ঘর নয়, বিছানা। এখানেই শেষ নয়, জিনিষপত্র
রেখে খেতে বার হলাম ওই অজানা জায়গায় ওই অত রাতে। এবং নিরাপদেই ফিরেও এলাম আমরা
হস্টেলে রাত বারোটার কিছু পরে। এই পুরো ঘটনাটিতে আমাদের দুশ্চিন্তা ছাড়া অন্য কোনো
রকম অসুবিধে কিন্তু হয় নি। আমি নিশ্চিত জানি এবং আপনারাও নিশ্চিত জানেন আমাদের
দেশে রাত পৌনে এগারোটায় দুজন তরুণী বিদেশী ভ্রমণার্থীর কপালে এত নিরাপত্তা জুটতো
না।
৫
এতবার সিঙ্গাপুরে গিয়েছি, পাশেই কুয়ালালামপুর, কখনও গিয়ে উঠতে পারিনি। একবার ভাবলাম যাওয়া যাক। সিঙ্গাপুর থেকে রাতের বাসে কুয়ালালামপুর। বাড়ি থেকে ইন্টারনেটে বাসের টিকিট কেটেছি।
রাত সাড়ে এগারোটায় সিঙ্গাপুর
থেকে বাস ছাড়লো। সিডিউল অনুযায়ী ভোর সারে
চারটে-তে কুয়ালালামপুরে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু
এ বাস এক্সপ্রেসের বাড়া। রাত তিনটের সময় বাস কণ্ডাকটরের
হাঁকডাক, কিছুই বুঝে উঠতে পারি না, শেষমেষ অন্য যাত্রীদের কথায় বুঝলাম কুয়ালালামপুর এসে গেছে। ঘুমচোখে হুড়মুড় করে মালপত্র নিয়ে নামলাম। আমাদের সঙ্গে আরও দুচারজন নামলো। ঘুম চোখ ভালো করে তাকাতে না তাকাতেই দেখলাম বাসের অন্য যাত্রীরা যারা নামলো
তারা কেউই নেই। তাদের পরিচিত জায়গা, তাদের কোনোই চিন্তা-ভাবনা করতে হয়নি। আমাদের তো কিছু ভাবতে হবে, কিন্তু ভাববো কী! অন্ধকার রাত। দোকানপাট বন্ধ। রাস্তায় কোনো সাধারণ মানুষ নেই। গোটা কয়েক
ট্যাক্সি-ড্রাইভার শুধু। আমার আর সোমার তখন ‘আত্মারাম খাঁচাছাড়া’। এই অন্ধকার রাতে বিদেশ-বিভুঁইতে একদল ট্যাক্সি-ড্রাইভারের হাতে পড়ে গেলাম। একে তো
মহিলাজনিত কারণ, তার ওপর সঙ্গে ডলার-পাসপোর্ট, আজ সবই
যাবে বেশ বোঝা যাচ্ছে।
কিন্তু আশ্চর্য ঘটনা এমনই যে, তারা অত্যন্তই ভদ্র। তারা ওই অন্ধকার রাতের দুজন মহিলা ভ্রমণার্থী পেয়ে
কোনও সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেনি। তাদেরই মধ্যে একজন নিরাপদে আমাদের নির্দিষ্ট হোটেলে পৌঁছে দিয়েছিল। আমাদের
দেশের কোনও জায়গাতেই এত নিরাপত্তা নেই।
৬
আমরা প্রথমবার সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলাম ২০০১ সালে। প্রথম কয়েকদিন গোল্ডেন ল্যান্ডমার্ক হোটেল থাকার পর আমরা ১নম্বর অর্চার্ড রোডে ওয়াইএমসি-তে ছিলাম। তখন ওয়াইএমসিএ-র সামনে বিরাট পার্ক ছিল । পরবর্তীকালে যখন গেছি, দেখেছি সেই পার্ক আয়তনে ছোট হয়ে গেছে, সেখানে সিঙ্গাপুর ম্যানেজমেন্ট ইউনিভার্সিটি আর সিঙ্গাপুর ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি অ্যান্ড ডিজাইন-এর বড় বড় বাড়ি হয়েছে। তা’ যাই হোক ওয়াইএমসিএ-র সামনে বিরাট পার্কে রাত দশটায় দুটি মেয়েকে বসে বসে গল্প করতে দেখে বড়ই তাজ্জব হয়েছিলাম আমরা। আমাদের দেশের পার্কে দুপুরবেলাতেও তো দুটি মেয়ে নির্ঝঞ্ঝাটে বসতে পারে না। আমরাও তো এশিয়ারই অন্তর্ভুক্ত। তবে?
ঈশিতা ভাদুড়ী
3 মন্তব্যসমূহ
কী ঝরঝরে লেখা। নিরাপত্তা খুঁজতে বসে বেড়ানোটাও হয়ে গেল।
উত্তরমুছুনমন্দার, খুব ভালো লাগল
মুছুনমন্দার, খুব ভালো লাগল
উত্তরমুছুন