আইতেন মুতলু (Ayten Mutlu, 1952)-র জন্ম তুর্কিস্তানের বান্দিরমা শহরে। পেশায় ব্যাঙ্ককর্মী এই তুর্কি কবি ইস্তাম্বুল ইউনিভার্সিটির ম্যানেজমেন্ট ফ্যাকাল্টি থেকে স্নাতক। নারীর সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের শরিক আইতেন মুতলু- র কবিতায় তুর্কি নারীর জীবন প্রেক্ষিত বারবার উঠে এসেছে। যথাযথতা, সংক্ষিপ্তি, চিহ্নকল্প-নির্ভরতা এবং গীতলতা--- এই সমস্ত বৈশিষ্ট্য তাঁর কবিতার অন্তর্বয়নে খুঁজে পাওয়া যায়।
১. বাতাস
একদানা বালির চেয়ে ক্ষুদ্রতর একজন নারী
নারীর যন্ত্রণার চেয়ে
আরও ছোটো সমুদ্র
সেই প্রাচীন বাতাস এল এবং গেল
সমুদ্র এবং নীহারিকাকে অস্বীকার করে
আর সেই নারী তার নগ্ন স্মৃতি নিয়ে হেঁটে গেল
বালিরাশি অথবা নক্ষত্রের
উপর কখনো পা না দিয়ে।
২. কোকিল
তুষার পড়ে
আঘাত করে সবুজ শস্যদের
যারা রাত- ভেঙে ওঠা
দিনের
সঙ্গে হেসে ওঠে
কেন কেন কেন
কোকিল জানতে চায়
একটা ডালে বসে যাকে
তুষার এখনো স্পর্শ করেনি
৩. ছবি
ঘোড়াগুলো পার হচ্ছে একটা অসমাপ্ত ছবি ছবির মধ্য দিয়ে
ঘোড়াগুলো পার হচ্ছে
একটা না- আরম্ভ-হওয়া ঋতুর মধ্য দিয়ে
ঘোড়াগুলো পার হচ্ছে কেবল ভাবনার মধ্য দিয়ে
সূর্যের দীপ্যমান তৃণগুচ্ছকে
স্পর্শ না করেই
৪. তোমার মুখ এবং ঘন্টার বাজনা
তোমার সঙ্গে হেসে ওঠা ছিল যেন বসন্ত
তোমার মুখের বেজে চলা ঘন্টা ছোঁয়া
ইন্দ্রিয়-সংরক্ত এবং শান্ত যেন অনাবৃত বেদানাফল
তোমার মুখ ছিলো শেষ
সকালের চিহ্ন
হেমন্তের স্বাভাবিক
বিচরণক্ষেত্রে
তোমার মুখের বেষ্টিত
সমুদ্রে
পাখিরা উড়ে গেল বিষমাখায়া
তিরের মতো
গ্রীষ্ম পড়ে রইল চোখ
বাঁধা একটা দেয়ালের নিচে
কী পড়ে থাকল তোমার
মুখের, একটা জংধরা ছায়া
একটা অপস্রিয়মান বন,
শোকগ্রস্ত ফুল
খন্ড বিখন্ড কাচ বসন্তের রঙে
কীভাবে পাখিরা অভ্যস্ত হয়ে ওঠে আকাশ হারিয়ে ফেলায়?
হায়, বৃষ্টিকে জানতে
আমার এতটাই দেরী হল
যেন একটা অনাবৃত বেদানা,
ভাঙা ও ছেঁড়া
সেই জায়গায় যেখানে
তোমার পুরনো মুখ ক্ষয়িষ্ণু হেমন্তের মতো
0 মন্তব্যসমূহ