বাকি কথা পরে হবে...
-আমি কি ভুল দেখছি? কলি না?
-একদম ঠিক। একটুও ভুল দ্যাখোনি।
-কতদিন পরে দেখা!
-হুমম, কুড়ি বছর তিন মাস পনের দিন...
-বাপ রে! সেই শার্প মেমোরি! এখনো এতকিছু মনে
রাখতে পারো?
-সব কি ভোলা যায়? তুমি পেরেছ ভুলতে?
-আমার কথা বাদ দাও। তোমার কথা বলো।
তুমি এখানে কিভাবে? কোথায় সিয়াটেল আর কোথায় এই
সর্দারদীঘি!
-কেন, আসতে মানা বুঝি?
-না না, "আমার ভুবনে" সবার অবারিত
দ্বার।
-তাই তো ছুটে চলে এলাম। তোমার ভুবন দেখব বলে।
-যাঃ কি যে বলো কলি! মিসেস কমলকলি সেনগুপ্ত
কখনো সোমনাথ মন্ডলের পৃথিবী দেখতে ছুটে আসতে পারে? প্রোটোকলে বাঁধবে যে!
- মিসেস সেনগুপ্ত! আই বেগ ইওর পার্ডন, আয়াম
মিস কমলকলি গুহ।
-ওহো! আমি জানতাম, অভিজ্ঞান সেনগুপ্তের
সাথে... আয়াম সরি! তোমার ডিভোর্সের খবরটা পাইনি।
-বিয়ের খবরটাই বা কোথা থেকে পেয়েছিলে?
ওয়াইল্ড গেসিং , তাই তো ?
বাই দ্য ওয়ে, প্রোটোকল মেনে আমি কবে চলেছি সোম?
-না ,তা মানো নি। আর মানো নি বলেই তোমাদের
ম্যানসনে আমার এন্ট্রি মিলেছিল। না হলে কোথায়
রাজা ভোজ আর কোথায় গঙ্গু তেলি !
-খোঁচা দিচ্ছ? সে তুমি দিতেই পারো।
-খোঁচা দেব কেন কলি? আজ তোমাকে বাগে পেয়েছি।
তাই?
-আমি কি তাই বললাম? তুমি ঠিক একই রকম ঝগড়াটে
রয়ে গেলে।
-আর তুমি ঠিক তেমন ফুলটুসী, কমলকলি! দ্যাখো
দ্যাখো , এতেই কেমন গাল লাল হয়ে গেল! হা হা হা।
-সোম, এরকম টিজ করলে আমি চলে যাব বলে দিলাম।
-চলে তো সেই কবেই গেছ!
"আমার প্রাণের পরে চলে গেল কে/ বসন্তের
বাতাসটুকুর মত..."
-কতদিন পরে তোমার গলায় গান! সোম...
-স্যার, ঐ যাদের আসার কথা ছিল, ওরা সবাই
কিন্তু এসে গেছেন। কনফারেন্স রুমে বসিয়ে এসেছি।
-হ্যাঁ রতনদা ,ওদের বসাও। জলটল দাও। আমি
আসছি।
-বেশী দেরী করবেন না যেন। আপনে তো আবার এক কাজ
করতে গিয়ে অন্য কাজ ভুলে যান।
-না না ভুলব না। তুমি যাও, ওদের দ্যাখো।
-দেখলে সোম, দেখলে! তোমার স্টাফরাও কেমন চিনে
গেছে তোমাকে।
-আমাকে চেনা যে খুব সহজ কলি। আমি , আমি...
- ওমনি! গলা ভারি হয়ে গেল! বলি ,ভুলোমনের
কথাটা ভুলে গেলে হবে? সেই সেবার , আমার জন্মদিন,
সারাটা সন্ধে অপেক্ষা করলাম।
পরদিন
সাতসকালে একগোছা রজনীগন্ধা হাতে নিয়ে হাজির হয়েছিলে...
-ড্রয়িংরুমে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গিফ্ট র্যাপার,
বেলুন,রাংতার মালা, খাবার প্লেট,এঁটো গ্লাস...
- অত সকালে কি সবকিছু গুছানো যায়?
-কেন? নিজেকে তো দিব্বি গুছিয়ে নিয়েছিলে..
-সোম, সোম আমি দুঃখিত। সেদিন তোমার সাথে বাবির
ঐ ব্যবহারটা করা ঠিক হয় নি!
-কে বলল ,ঠিক হয় নি? ওটাই বরং সঠিক ব্যবহার
ছিল। অকপট...
- তুমি কি বলতে চাও? আমি তোমার সাথে কপটতা
করেছি?
- সে কথা আমি কখন বললাম? কথা গায়ে মেখে নেবার
স্বভাবটি, তোমার এখনো পাল্টায়নি দেখছি।
-পাল্টায়নি কিছুই। শুধু তোমার দেখবার চোখটা
পাল্টে গেছে।
-কলি!
-স্যার, ওরা মিটিং এ বসবার আগে
"আমার ভুবন" একবার ঘুরে দেখে নিতে চাইছেন।
-বেশ তো ,রতনদা। ওদের সবকটা ইউনিট ঘুরিয়ে
দেখিয়ে দাও।
-কোন কোন ইউনিটে নেব , আপনে বলে দিলে ভাল হত!
-ঐ মোমবাতি ,ধূপকাঠি, পাটঘর , আচার ,পাঁপড়...
-মানে " হস্তশিল্প কর্মশালা"
পুরোটাই , তাই তো?
-হ্যাঁ ,হ্যাঁ।
-আর "মেয়েদের বাড়ি"? "সবুজের
গৃহকোন"? "সর্বজয়ার রান্নাঘর"?
-হুট করে মেয়েদের বাড়িতে নিয়ে যেওনা।
আগে খবর পাঠাও। ওরা রেডি হলে যেও।
আর জেনে নাও , সবুজদের সকলের ব্রেকফাষ্ট হয়েছে
কিনা ? এই সপ্তাহ থেকে ব্যায়ামের ক্লাস আধঘন্টা
বেড়েছে কিন্তু ওদের !
-বেশ , আমি তাহলে নিজেই যাচ্ছি। সব ঠিকঠাক করে
গুছিয়ে এসে ওনাদের নিয়ে যাই।
-সেটাই ভাল রতনদা। আর শোনো, ওদিকটা গুছিয়ে
ওদের লাঞ্চের ব্যবস্থাও তো করতে হবে।
"সর্বজয়ার রান্নাঘরে" বলে দাও, কতজন
খাবেন । ওরা রান্নার আয়োজন শুরু করুক।
বিশুকে মাঝের পুকুরে জাল ফেলতে বলে দাও। রুই
কাতলা,বেশ পাকা দেখে তোলে যেন।
-রুই কাতলা ? ও তো মার্কেটে সব সময় পাওয়া যায়।
খেয়ে খেয়ে অরুচি ধরে গেল। ছোট মাছ কিছু নেই
সোম, তোমাদের পুকুরে?
-কি কি চাও? বাটা ,পুঁটি ,খলসে ,মৌরলা,
চুনো,বেলে...
-উফ্, কতদিন এসব মাছ খাইনি! সেই দেশের বাড়িতে
ঠাকুমার হাতের রান্না! সোম, ছোট মাছ কি তোলা বারন ?
-আরে না না। আমাদের নিজস্ব পুকুর। যতখুশী তোলা
যাবে। আমাদের "সর্বজয়ার রান্নাঘরের" রান্নায় ঠাকুমার
হাতের
স্বাদই পাবে।
রতনদা , শুনলে তো ! আর দাঁড়িয়ে থেক না। ঝটপট
সব গুছিয়ে নাও। বিশুকে বলে দাও, সব ছোট মাছ
তুলতে।
-স্যার, সবাই কি এই সব ছোটমাছ খাবেন? না
মানে্
কাঁটা বেশী কিনা !
-হুম , তাও তো বটে! ওকে, এক কাজ করো , পাকা
মাছের কালিয়া করতে বলো আর ছোট মাছের ঝাল...
-বাহঃ! সোম ,তুমি বেশ সংসারী হয়ে উঠেছ দেখছি!
কিসে কালিয়া হবে ,কিসের ঝাল! সবই তো শিখে গেছ!
এত সরেস তো ছিলে না আগে? সেই তোমার মেসে
সকাল বিকাল ছাতু মুড়ি আর
দুপুর
রাতে ভাতে ভাত!
-কলি, জীবন কত কি শিখিয়েছে! কুড়ি বছর কিন্তু
কম সময় নয়...
"জীবন গিয়েছে চলে আমাদের কুড়ি কুড়ি বছরের
পার..."
-জীবনানন্দ! এখনো আবৃত্তি করো সোম?
-স্যার, আমি আসি তাহলে।
-হ্যাঁ রতনদা ,তুমি এগোও। আমি আসছি। ফাইলপত্তর
সব গুছিয়ে নিয়ে একেবারে কনফারেন্স রুমে চলে যাব।
-স্যার, আপনের প্রেসারের ওষুধটা খেয়ে নেবেন।
নাহলে আবার সেদিনকার মত...যা ভুলো মন! একবার বকবক
শুরু
করলে কিছুই
খেয়াল থাকেনা।
-আচ্ছা ,আচ্ছা তুমি এসো তো। বেশী বাজে বকতে
হবে না।
-সে কি সোম? তোমার প্রেসার ! কবে থেকে
বাঁধালে?
-প্রেসার কবে ছিল না ,বলতো? জীবনতো আগাগোড়াই
প্রেসার কুক করে চলেছে আমাকে!
-হেসো না! সব দায় জীবনের ? তোমার কোন দায়িত্ব
ছিল না ,বলছ? সেটা এড়িয়ে গিয়ে এত নির্লিপ্ত কি ভাবে
থাকো
সোম?
-আমি নির্লিপ্ত? আমি কখনো দায়িত্ব এড়াতে চাই
নি কলি। আমি যে দায়িত্ব নিতে পারি ,সেটা প্রমান করবার
স্কোপটা ও দরকার।
-পাও নি? রিয়েলী? আমার তো মনে হয় তুমি
বরং পালিয়ে বেঁচেছ।
- আমি পালিয়েছি?
-ইয়েস সোম, ইয়েস। পালিয়েছ। কোলকাতা থেকে
এই অজ পাড়াগাঁয়ে এসে লুকিয়েছ যাতে কেউ তোমাকে
ট্রেস না করতে পারে।
-কলি!
-আমরা কত খুঁজেছি তোমাকে। কোথায় না গিয়েছি
তোমার খোঁজে?
তোমার মেসে। রাঙামাসির বাড়ি ।তপুদের ঠেকে।
কেউ কিচ্ছু বলতে পারে নি।তোমার মেসের বন্ধুরাও
পাগলের খুঁজেছে তোমাকে!
-কেন? একটা ফেলিওর মানুষকে নিয়ে তোমরা এভাবে
মেতে উঠেছিলে কেন?
-ফেলিওর! সত্যিই কি তাই? আমরা সবাই ,যারা
তোমাকে ভালবাসতাম, সব্বাই সত্যিটা জানতে চেয়েছিলাম।
-সত্যি বা মিথ্যে সবটাই আপেক্ষিক কলি। আমাদের
দৃষ্টিভঙ্গীর সঙ্গেই সত্যি বা মিথ্যের রং বদলে যায়।
-না সোম। ইউনিভার্সিটির ব্রাইট একজন
স্টুডেন্ট, বায়োফিজিক্সের অমন প্রমিসিং কেরিয়ারের মাঝপথে সব
গুবলেট করে চোরের
মত
পালিয়ে ছিল কোলকাতা থেকে ,কথাটা যতটা সত্যি, ঠিক ততটাই মিথ্যে।
-না কলি, এর মধ্যে কোন মিথ্যে নেই। আমি সত্যিই
চিটিং করেছিলাম। প্রোফেসর সোম ঠিক বুঝেছিলেন।
-মিথ্যে। এ হতেই পারেনা। হয় তোমাকে স্কেপগোট
করা হয়েছিল! অথবা তুমি কাউকে আড়াল করেছিলে।
-আমি যা করেছি, স্বেচ্ছায় করেছি। দ্যাট ইজ আ
ক্লোজড্ চ্যাপ্টার। এটা নিয়ে আর আমরা কথা বলব না কলি।
-তুমি চাইলেই সব শুরু হবে ,তুমি চাইলেই শেষ!
নিজেকে কি ভাবো সোম? ঈশ্বর নাকি অবতার ?
-অত্যন্ত সাধারন একজন মানুষ আমি। আর আমার
ভাববার কোন জায়গা তোমরা কি রেখেছিলে? তোমরাই
আমাকে হিরো বানিয়েছিলে।
আবার তোমরাই ...
-কি ? কি আমরা? আমরা তোমাকে ছুঁড়ে ফেলিনি
বরং স্টুডেন্ট ইউনিয়ন বরাবর তোমার পক্ষেই
সওয়াল করেছে,লড়াই করেছে,
আন্দোলন করেছে, ডেপুটেশনের পরে ডেপুটেশন
দিয়েছে ভিসির কাছে।
জিতেছি আমরা। তোমাকে পরীক্ষায় বসতে দিতে রাজী
হয়েছিলেন প্রোফেসর সোম।
কিন্তু তুমি! ভীরুর মত, কাপুরুষের মত ,পালিয়ে
গিয়েছিলে সেদিন।
-কলি, ধরে নাও ,আমি তোমাদের ভালবাসার যোগ্য
ছিলাম না।
-তোমার আমার মাঝে "তোমাদের" শব্দটা
কোথা থেকে এলো সোম?
-ছিল তো। প্রথম থেকেই ছিল। তোমার বাবা মা
,তোমাদের সোসাইটি, স্টেটাস। তোমাদের নিউ আলিপুরের
ম্যানসন, ঠাকুর চাকর আর্দালী
, এমনকি তোমাদের গ্যারেজে সাজানো গাড়িগুলিও...
-সোম, আমি এসব নিয়ে কোনদিন বদার করিনি।
-তোমার বাবা মা করেছেন, তোমার কাছের মানুষেরা
করেছে। আমিও করেছি কলি। আমি বদার করেছি!
-এসব তোমার অজুহাত। তোমরা লোয়ার মিডলক্লাস
ফ্যামিলির ছেলেমেয়েরা আসলে...
- আসলে কি? বলো কলি বলো? সুযোগসন্ধানী তাই তো?
-সে কথা আমি কখন বললাম সোম? কমপ্লেক্স!
মারাত্মক রকমের ইনফিরিওরিটি কমপ্লেক্সে ভোগো তোমরা।
-ঠিক, তাই তোমরা আপার ক্লাস সোসাইটির ক্রীমি
লেয়ারের ব্রাইট স্কলারেরা আমাকে, একটা হতদরিদ্র স্কুল
মাষ্টারের ছেলেকে বাঁচাতে
ঝাঁপিয়ে পড়লে ! কিন্তু, তোমাদের দয়া, তোমাদের
করুণা এসবের আমার দরকার নেই।
-রিয়েলী? তাহলে আজকে
বেনেডিক্ট এন কুপার্সকে কেন ডেকেছ এখানে? সেটা
দয়া বা করুণাভিক্ষা নয়?
- না, আমি নিজের জন্য কারো কাছে কোনদিন হাত
পাতিনি। আমার যা কিছু চাওয়া সব "আমার ভুবন" কে
ঘিরেই। "আমার ভুবন" আমার
একার নয়।সকলের। দুঃস্হ, অনাথ, সমাজ
পরিত্যক্ত, বিশেষ ভাবে সক্ষম ,দরিদ্র ,মেধাবী সমস্ত মানুষের জন্য
আমার ভুবন!
কলি ! তুমি ,তুমি বেনেডিক্ট এন কুপার্সের কথা
কিভাবে জানলে? তুমি কি ওদের সাথেই...
-স্যার, আপনেও যে কি বলেন না , এই ম্যাডাম তো
সবচেয়ে বড় গাড়িটাতে এলেন। ঐ স্যারদের বস উনি!
কিছুই
খেয়াল করেন না।
ম্যাডামকে দেখেই বকবক করতে লেগেছেন।
-ওহ! রতনদা , তুমি ম্যাডামকে নিয়ে গিয়ে
কনফারেন্স রুমে বসাও। আমি ,আমি একটু ফ্রেশ হয়ে আসছি।
মাফ
করবেন মিস গুহ!
আমি আপনাকে ঠিক চিনতে পারিনি।
-সোম! কি হয়েছে তোমার? ফিলিং আনইজি?
এরকম দরদর করে ঘামছ কেন? রতনদা, একটু দেখুন
প্লীজ!
-আমি তখুনি জানতাম! এত অত্যাচার সইবে না
শরীরে। নাওয়া খাওয়ার ঠিক নেই! একটাও ওষুধ সময় মত
খাবেন
না। বললেই আমাকে
ধমক দেবেন! নেহাত যাবার সময় বৌদিকে কথা
দিয়েছিলাম যে স্যারকে দেখে রাখব ! না হলে কবে যেদিকে
দু চোখ যায় চলে যেতাম!
আমার হয়েছে যত জ্বালা!
-বৌদি! কে বৌদি?
-ওহো , বৌদিকে আপনি দ্যাখেন নাই ম্যাডাম?
বড় ভাল মানুষ ছিলেন গো। এখানকার হাইস্কুলের
দিদিমণি। ছেলেমেয়েরা নন্দিনী ম্যাডামকে কত্ত ভালবাসত।
তিনি মানুষটাই অমন ছিলেন।
না ভালবেসে পারা যায় না!
-নন্দিনী? নন্দিনী কি বসু?
-হ্যাঁ, নন্দিনী বসু। আপনে চিনতেন তারে?
-নন্দিনী! ইয়েস! নন্দিনী ফাইনাল সেমে
ঠিক সোমের পিছনে বসেই...পরীক্ষার পরে দুম করে কোথায় যেন
হারিয়ে গেল মেয়েটা। ও মাই গড! তাহলে কি
নন্দিনীকে বাঁচাতেই সোম...
সোম ,সোম! একি ! কি হল? পড়ে যাচ্ছে যে!
রতনদা ,ওকে ধরুন। সোম ,সোম...
-কি হবে ম্যাডাম ? স্যার যে নেতিয়ে পড়ছেন গো!
-আমি ,আমি কোলকাতায় নিয়ে যাবার ব্যবস্থা করছি।
ডোন্ট ওরি রতনদা! আপনার স্যার ঠিক হয়ে যাবেন।
সোম, সোম। বি স্টেডি! বাঁচতেই
হবে তোমাকে। আমাদের যে অনেক কথা বাকি...
ড্রাইভারদা ,ড্রাইভারদা , গাড়িটা এখানে এগিয়ে
নিয়ে আসুন ,কুইক, আমাদের এক্ষুণি কোলকাতায় যেতে হবে...
|
0 মন্তব্যসমূহ