গুচ্ছ কবিতা
সম্পূর্ণ রাজনৈতিক
ভলগার জলে মানুষের কিছু
মৃতদেহ
'উচিত' শব্দের ঠিক ব্যবহার
হত, যদি রাইন নদীতে..
তবে কেন ভাগীরথী
তর্পনের রাতে বরানগর গণহত্যা দ্যাখে
আসলে চিনারা সব জমি
আবাদ হওয়ার আগেই
উইঘুর ক্যাম্প
বানিয়েছে
কিউবার উপকুল জুড়ে
সোভিয়েত অ্যাটম বোমার কিলবিল
রোহিঙ্গা পুরুষাঙ্গ
পাল্লা দেয়,
পোলাপানে ছয়লাপ
শরনার্থী শিবির
মানুষ মারা, আর মারার
জন্য জন্ম দেওয়া
যেভাবে মালয় জাভা
বোর্নিয়ো সুমাত্রা জুড়ে কম্যুনিস্টদের মৃতদেহ ভাসে,
বিচারের উর্ধে সে
আয়োজন, প্রশ্নহীন কালো কিতাব
গঙ্গায় চিরদিন আধপোড়া
মড়া ভেসে আসে
কাঠের অভাবে
কয়েকটি কাল্পনিক গল্প
১
কবি জয়দেব বসু অকালের
ফুলকপির সঙ্গে
কিশোরীর বুকের কোন মিল
খুঁজে পেয়েছিলেন কিনা,
জানি না
তবে ছাত্রী আমার কাছে
বাংলা পড়তে এসে
শুধুই ওঁর গল্পে শীতের
লাস্য শস্য
ক্রমাগত ফুল ও কপি হতে
থাকত স-হাস জ্বলন
আমি এখনও অকালের ফুলকপি
কিনতে পারি না
সম্ভবত এই স্বর্গচ্যুত
বসু ভালোবাসার ভেট পেতেন
পুজোর সময়
গ্রাম থেকে নাগেরবাজারে
আসা চাষিরা এই
দরদাম না করা মানুষটিকে
গছিয়ে দিত টাটকা ভোর
নিশ্চয় শীতের দাম্পত্য-ফুল
দড়িতে ঝুলিয়ে বাড়ি ফিরতেন
একালের জয়দেব
২
গোয়েঙ্কা ডালমিয়া রুইয়া
জালান রুংটাদের পাড়ায়
অবনীকে খুঁজতে যেতেন
শক্তিবাবু
আলিপুরের বসু পরিবারের
অবনী
নিশ্চয়ই জয়নগরের
শক্তিকে প্রথম দিকে
চিনেবাদাম খাওয়াতেন
প্রেসিডেন্সিতে
আর শক্তি জানিয়েছিলেন
বাদামের শুকনো গলা নিয়ে
বাংলা মদ ঢালতে যেতে
হবে যাদবপুরের লর্ডসের মোড়ে
অবনীর জিভে ততদিনে স্কচ
সর নাগরিকত্বের দাবিতে
তারপর মস্তিষ্কে
বিস্ফারণ
খাটি জার্মান মেয়ের
প্রেমিক হতে চেয়ে
শিবপুরে মেকানিক্যাল
এখন আর অবনীকে বাড়ি
পাওয়া যায়না
লাস্য শব্দসমূহ ডালিম
তলার জ্যোৎস্নায় সরসবতী হননা বলেই,
মোটা ফুটপাতে প্রতিদিন
কবিতার মায়ের মেহন ভিখারি হতেন
ক্রুদ্ধ শক্তি
৩
অনাদি কেবিনে সেদিন
রামকিঙ্কর যুবতি চণ্ডীকে নিয়ে,
খাচা-কলকাতার মেয়েরা
হেসেই পালকহীন পায়রা
সতীনপুত্রবৎ পুরুষরা
পিতলা সুন্দরীদের মাংস মজ্জা শুষে নিতে নিতে
চোখে বনের হরিণী দ্যাখে,
শাবক-অপরাধী যেমন দখলে রাখে
জননীর দুই পৃথিবী
হঠাৎ মানভূমের বুকের
কাপড় টেনে দিলেন রাম,
ঘোষণা করলেন--
এমন উদ্ধত অহংকার যদি
কারও থাকে,
হাতে নিয়ে দাঁড়াও কিংকর
সব ললনারা তাদের
পুরুষের লেজে রাখলেন সূর্পনখ
কোদানো পাথরের গায়ে খড়িমাটি
ঘষা কতটা নিরাপদ,
তারা সবাই জানত
অনাদি কেবিনে সেদিন
কয়েকশো প্লেট কবিতা বিক্রি হয়ে গেল
ম্যাডিসন
ব্রিজের ওধারে
ম্যাডিসন ব্রিজের
ওধারে
আলগা পিরিত পাওয়া যায়
ভুট্টার ক্ষেতে খরগোশ
দৌড়ে গেলে
নুন লেবুতে তখনও লেগে
কিছুটা লিপস্টিক
ধারালো পাতায় মানুষের
ছাল ছড়ে যায়
গাজর ক্ষেতের বাতাস
সন্দেহে সবুজ
নাইট গাউনের কপাট খুলে
দেয় ঝিরিঝিরি পাতাসুখ
চল্লিশ বসন্তের চাষি
জানে গরমে হঠাৎ সব টমেটোরা মৃত্যুর ভয়ে
পাতা ঝরার শব্দে সে-কথা
গ্রীষ্মেরা চেপে রাখে
জ্যোৎস্না, ক্যামেরা,
চিত্রধর,পাশাপাশি হাঁটে,
তুমি হঠাৎ বেরিয়ে যেতেই
পারো কিশোরের মানে
কেননা দ্বিধা'রা তখনও
কথা বলে কানে
গাড়ির শব্দ ক্ষুধার্ত
শিশুর কান্না মনে হয়
ভেজা রাস্তায় চাকার
লিপিতে সে শব্দদাগ
মেঘকাটা রোদ ফিরে এলে
অতিথির ঠোঁট থেকে সিগারেট টেনে নিয়ে
ঘাসফুল আর সাহসী
কুচকুচে ফিঙে
ঠিকানা ছাড়া চিঠি আঠানো
ব্রিজের জংধরা রেলিংয়ে
শুনেছি, অপরাধী আর
প্রেমিক বারবার ফিরে আসে
অভিমান তৃপ্ত হলে আদর
নামে চোখ গলে গলে
দুটি মোম জেগেছিল,
কথাদের স্বতঃজন্ম প্লুতক্ষণে
ভালোবাসা থালায় থালায়,
যদি কিছু বিক্ষোভ
অর্ধেক গলায় আর অর্ধেক
চুমুতে, কয়েকটি দাবি
স্বচ্ছ স্বর্গের
দ্বারের নূরের ঘ্রাণ, শ্বাস বিনিময়
বিছানা মেতেছিল
হা-ডু-ডুর কৌশলে
কেচকি, কোপ, লাফ, থাবর,
মাথাচাপা
বৃষ্টি, নরম মাটি, জল,
ধরা পড়ে ফাঁদে
বিজয়ী খুশিতে খাবি,
নিঃশ্ব দেহ গড়ায় শীতলে আরামে
তুমি চলে গেলে একটা
ভয়,
গোপন সুখের রেশ লেগে
ঘাঁড়ের বাসি ঘ্রাণে
হাতে লেখা দুই দিন
দুইরাতের পাঠক্রম
বাঁচার সোল্লাস ঠান্ডা
হলে স্বামী সন্তানে
বিবাহ নয়, চির প্রেমের
মিথ্যা দেওয়াল নয়
মাত্র দুই দিনের জন্য
আলগা পিরিত চায়
ম্যাডিসন ব্রিজ শিহরিত
চল্লিশ বসন্তেরর সফল দস্যুতায়
**
"The bridge of Madison county " ছবিটা দেখার পরে কবিতাটি
লেখা।
0 মন্তব্যসমূহ