সাম্প্রতিক

6/recent/ticker-posts

বঙ্গ রাখাল

 


যদি আর দেখা নাহি হয় ওগো বন্ধু

 

গ্রামীণ জীবনকে বিদায় দিয়ে রাজনৈতিক এক পরিমণ্ডলে নিজেকে নবাব সাজিয়ে শাহরিক পরিপ্রেক্ষিতে  নিজেকে সাজিয়ে নি। দূরের শহরে একাকি পৃথিবী আমার, রাতের পর পর পার করি জগন্নাথ হলের ছাদে।সঙ্গী কবি অয়ন আব্দুল্লাহ, দেবদুলাল, অন্তু, কবি শহীদুল লিটন, সাজিদ, নিরঞ্জন।কখনো কখনো অন্য সব বন্ধুও জুটে যেত।  রাতের আকাশ ধোমায়িত হয় সিগ্রেটের আগুনে।ধোঁয়ায় ধোঁয়ায় ভেসে যায় জীবন যাতনার যতসব গ্লানি।সাজিদ ভরাট কণ্ঠে- ওদিকে প্রেমিকা নূপুর পরেছে পায়- আমি জীবন্ত মানুষ, কবরের মধ্যে মরনের গান গাই  গানের চুম্বকী রেশ এখনো আমার বিষণ্ণময় জীবন যাপনের সঙ্গী হয়ে রয়েছে।ঠোঁটের কোণে সিগ্রেটের ধোঁয়ার একরাশ বিলাপ তৃষ্ণা আমাকে রাতের ধুন্ধুমারময় নদীর জল হয়ে কখনো  কখনো চোখকান্নার জল হয়ে ভাসিয়ে দেয় মহাজনী সাম্পান। ঝরাপাতার মত ছিন্ন ভিন্ন জীবন অয়নের।দিনের পর দিন অতিবাহিত করে ভাতহীন পেট পুষে রেখে অথচ এক স্লিং স্ট্রিক খাওয়ার জন্য ময়দানগুলোতে রানার  হয়ে সারাক্ষণ ঘুরে ফেরা। যে মেয়েটা ওকে ভালোবাসে, সে ওকে ভালোবেসেই ছেড়েছে ঘর।নিজের জাতের মুখে ঝামাঘষে ঘর থেকে বের হয়ে এসেছে এই ঢাকার শহরে- প্রেমিক কবি।আজ একটা পোষাকের দোকানে কাজ নিয়ে নিজের মত থাকে।চিরকালই প্রেমিকাই বেশি সাহসী হয়, সাহস দেখায় যে সাহস একজন প্রেমিক দেখানোর আগে অনেক কিছুই ভেবে নেয়। আমি বুকের মধ্যে গঙ্গা পুষি।তবু গঙ্গায় ঢেউ তুলি না, বিরান মাঠ পুষে রাখি তবু আবাদ করি না।শরীর জুড়ে এক ধরনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে বারবার নিজের গহীন হৃদয়আরশিতে ভেসে উঠে মৃতবাবার মুখ আর বিধবা মায়ের ছায়া।যারা আমাকে প্রতি মুহূর্তে কোয়াশা ভেজা রাস্তায় হাঁটার বদলে শ্যাওলা জমা পুকুরের ঘাটে বসে সামনেরপুকুর জল দেখতে বলেছে আর কুকুরের মতো একা হয়ে জলের নিঃশ্বাস নিয়ে মাছের জীবন ধরতে বলেছে। উৎসবমুখর জীবনকে একদিন বিসর্জন দিয়ে এসেছি এই শহরে।এই শহরের সূর্যালোক কখনো আমার গায়ে মাখেনি।বিবর্ণ জীবনে ভোরে বাতাসও দোলা দিতে পারেনি, তবু আমি স্বপ্ন দেখি অনেক বড় হবো, মাইকেল  হয়ে বিদ্রোহী হবো। বদলে দেবো কবিতার শহর।নিজের গ্রামের পদ্মের জন্য একটা পুকুর করবো আর শান বাধিয়ে সেখানে পদ্মের জন্য শাপলায় ভরে  দিবো পুকুরের জল।পদ্ম পায়ে আলতা মেখে শান বাঁধা ঘাটে ভিজাবে পা আর আমি থমকে দিয়ে ওকে বুকের মধ্যে সমাধী  দিবো।পদ্মের অসুখের দিনে ওর পাশে থাকতে পারিনি, সেবা দিতে পারিনি তবু কোনো রাগের বালায় মেয়েটার মুখে নেই। যা আছে শুধু অভিমান।কেন আমি তাকে বলিনি অদ্ভুত কোনো এক বিকেলে চলো হেঁটে আসি।নেও এই যে আমার বুকের আনন্দের নিঃশ্বাস কিংবা চোখের পাতার ভাজে এঁকে দিলাম গোলাপ ধোঁয়া  সকাল অথবা স্তনের ডোগায়, নাভির আশ্রমে তীব্রতার মৌন মিছিল হতে পারতো অসুখের সময়, তুমি  কিছুই করনি। আজ অনেক কষ্টের নহোর আমি বুকের মাঝারে পুষে রাখি।এখনো গহীন রাতে হারিকেন জ্বালিয়ে লাঠিতে ভর দিয়ে কবরের পাশে গিয়ে কথা বলি পদ্মের সাথে।এই দেখ-পদ্ম আমি তোকে পাহারা দিচ্ছি। এখন কেমন করে আছিস।কখনো তো আমাকে ছাড়া একা থাকিসনি। তবে আজ কি করে আচিস, বল নারে পাগলী।তুই আজ একা আচিস, রাতে ভয় পাবি।তাইতো এই রাতে হারিকেন হাতে তোকে পাহারা দিতে এসেছি, যেন তুই ভয় না পাস।আমি তো বেঁচে আছি, খাচ্ছি, ঘুমাচ্ছি, তুই কেমন আচিস।তোর মনে আছে- তৃষ্ণার্ত ছিলো যেদিন, সেইদিনে আঙ্গুলের স্পর্শ পেলেই তুই নারীতন্ত্র জানার জন্য পাগল হতি।আজও কি পাগল হোস, নাকি পিপাসার জল বিষণ্ণ কবিতা হয়ে ঝড়ে যায় আমাদের কবিতার খাতায়। বেদনা পার্কের সারা বিকাল গল্পের ছলে কেটে গেছে।কিংবা দুঃখের নৌকায় বসে মুখোমুখি যাপনের চিত্র কতো যে বাষ্পীয় নিঃশ্বাস ছড়ায় বৃক্ষচারী জীবনে।আমি অনেকটা আলা-ভোলা। তুমি অলৌকিক খনিজের সন্ধান দিলে বুকের মধ্যে।আর আমি কামনার জ¦রে তোমাকে জড়িয়ে পাগলা কানাই সড়কের সামনে গিয়ে ছুটতে ছুটতে সিনেমা  হলের সামনে তোমাকে জড়িয়ে ধরি।অতীনদা, সুমনদার সাথে আড্ডার সময় যদিও তোমাকে দেয়া কথা ভুলে গেলেও পরবর্তীতে ওয়াদা করেসিগ্রেট খাওয়া ছেড়ে ললিপপ খেয়ে ভুলে যায়, সিগ্রেট আমাকে পোড়ায়, আমি সিগ্রেটকে পোড়াবো এই সাদ্ধিকি আমার আছে? অবসন্ন আকাশের কাছে মুক্ত মনে অনেক ইচ্ছার কথা ব্যক্ত করেছি আর আমিও যে একজন প্রেমিক সেটা ভেবে  বুলেট বিদ্ধ দেহ নিয়ে পাহাড় চূড়াই উঠে সৌরভ ছড়ায় আমাকে না  পাওয়া এক নারী প্রতি রাতে সিগ্রেটে বুক পোড়ায় আর দুঃখ ভুলার গান গায়।আসলেই সিগ্রেট আর গানে মানুষেরা দুঃখ ভুলে যায় না। সাময়িক বিরত থাকা যায়, না কি যায় না।এই নারীটাই একদিন দুধ আর আনারস খেয়ে প্রমাণ করলো আসলেই হাজার বছরের মিথ্যা গুজব দুধ আনারস  খেলে কিছুই হয় না। এই নারীটা মরতে চেয়েছিল, যে আমাকে ভালোবাসে।আমিও বাসিনা সেটা নয়, আমিও চরম পর্যায় ওকে ভালোবাসি। তবুও ওর আমাকে হারানো ভয়।যদি আর দেখ


--------------------------------------

ছবি ঋণ: গুগল



 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ