মৃত্যুর মধ্যেই যেন ফিরে পাই অনন্ত জীবন
আমাকে আশ্রয় দিও অসম্ভব স্বপ্ন হয়ে...
জ্যোৎস্নার চিরনিদ্রায় প্রকৃতিরা অনুতপ্ত।
পায়ে হেঁটে, ঘুমের ভেতর রোদ ভেঙে, শিশির মাড়িয়ে-
একদিন ঠিকই ঠিকই যাবো জোনাকি আশ্রমে।
শিশিরের ছলে শুধু রক্ত ঝরেছে, সারারাত-রাতভর
নক্ষত্রের আগুন শরীর থেকে অগ্নি ঝরেছে ক্রমশ-
ঝলসে যাওয়া দেহে অনাবিল আর্তনাদ শুনি...
দৃঢ় ভস্মে হতভম্ব দাঁড়িয়ে থেকেছি, স্রেফ একা;
দেখেছি জ্যোৎস্নার মৃত্যু, অপলক নিদারুণ মৃত্যু...
ভয়ংকর অগ্নি সরোবরে।
মৃত্যুর মধ্যেই যেন ফিরে পাই অনন্ত জীবন-
একবার তোমাকে দেখতে যাবো অসম্ভব স্বপ্ন হয়ে;
অসম্ভব স্বপ্ন হয়ে। আমাকে আশ্রয় দিও...
আমাকে আশ্রয় দিও।
জীবন যেখানে যেমন
অভিনয়ের আড়ালে ঢাকা এ আমার বন্দি জীবন!
মূলত আমি কোথাও যেতে পারি না, কিছুই করতে পারি না
হাত-পা শেকলে বাঁধা, ভাব করি যেন এক মুক্তবিহঙ্গ...
এমন ফুরফুরে মেজাজে হাঁটি, যেন কোনো শেকল নেই পায়ে।
দু’চোখ থেকেও আমি অন্ধ! কিছুই দেখি না
এমনভাবে চোখের পলক ফেলি, সবাই ভাবে দেখছি সবকিছু,
আমি কিছুই বলতে পারিনা, যা কিছু উচ্চারণ করি
তা সবই শেখানো বুলি, যাত্রাপালার অভিনয়ের মতো
আসলে কেনো বাক্যরচনা করবার ক্ষমতাই আমার নেই!
অভিনয়ে বড় বেশি পাকা আমি!একটা লাশ হয়ে হেঁটে বেড়াই
বোঝে না কেউ, চিমটি কেটে দেখে না কেউ,
বেঁচে আছি নাকি মরে গেছি!
আমি দুঃখ পাই না, কোনো সুখানুভূতিও আমার নেই
কেননা মরা লাশের বন্দি জীবন আমার...
শুধুই ঘুরপাক খাই সাড়ে তিন হাত বন্দি পরিখায়!
পোড়াও আমাকে
কাঁদালেই যদি শান্তি কাঁদাও আমাকে
জ্বালালেই যদি শান্তি জ্বালাও আমাকে
পোড়ালেই যদি শান্তি পোড়াও আমাকে...
চোখ সেই মরুভূমি পাথর হয়েছে
লরেলবৃক্ষ ছায়ায় এ চোখ কেঁদেছে ,
নিজের অজান্তে এক স্তব্ধতা ছুঁয়েছে ,
মৃত্যু স্বাদের উল্লাসে কফিন খুঁজেছে...
পোড়ালেই যদি শান্তি পোড়াও আমাকে।
নলতা থেকে নন্দীপাড়া
কপোতাক্ষের ঘোলাজলে মিশে গেছে জীবনের গতি-প্রকৃতি, সমস্ত রহস্য গ্লানি... নলতার বড় রাস্তা ধরে এঁকেবেঁকে চলে গেছে হাজার স্বপ্ন, রথ... বাস্তবতা, জীবন-প্রকৃতি। সে ইতিহাস নবগঙ্গায় থমকে গেছে ঢের।আগুনের নদী হয়ে এভাবে জীবন চলে বোধহয়! এক দুই তিন; দিন-মাস-বছর-শতাব্দী চলে যায়... অতঃপর টালিগঞ্জের কর্পোরেট বাণিজ্য কিংবা মতিঝিলের পুঁজিবাদ নোতুবা আধিপত্যবাদ রহস্য ভেদ করে ফিনিক্স পাখি হয়ে উড়ে যায় মহাশূন্যে; শূন্য থেকে শূন্যতায়।মূলত হওয়া উচিত ছিলো শাহবাগের গণবিস্ফোরণ নিয়ে- এপিক সাহিত্য অথবা,
‘উত্তম দাশ’কে নিয়ে বায়োপিক ডকুফিচার। জীবনের সমস্ত গতি-প্রকৃতি আজ ফিকে হয়ে গেছে... কী এক অদ্ভূত রহস্য! এভাবে রাস্তার শেষে রাস্তা খুঁজে ফেরা পথভোলা এক নির্মম রহস্য... অলিতে-গলিতে আজো ভিড় করে, নলতা থেকে নন্দীপাড়া।
চোখের শিকল : রূপান্তর রহস্য
এই যে তুমি, রান্নাঘরের দক্ষিণ জানালা দিয়ে ঠিকরে পড়ে আলো; তোমার চোখে-
কাঁধে আর কোমরের ভাঁজে এক হাতে কড়াই, অন্য হাতে নাড়ুনি নড়েচড়ে ওঠে...
কচুপাতার জল, খুবই টলমল আবেদনময়ীর আবেদন যায় বেড়ে, তুমি বড় রূপসী।
প্রায়ই মাছ ভাজো এভাবে, তপ্ত তেলে একটা ঝাঁঝ এসে লাগে নাকে...
সঙ্গে আসে কামনার মাতোয়ারা গন্ধ। ভেজে চল ইলিশ, চিংড়ি কিংবা রূপচাঁদা
কড়মড় করে আমি খাই, গরম গরম ভাজা মাছ মনে মনে আমি তোমাকেও চিবিয়ে চলি।
প্রতিনিয়ত তুমি ভেজে চল মাছ, ঢাল তেল কড়াইয়ে-টগবগ করে ফুটতে থাকে রহস্য...
এক অজানা বিস্ময়ে হঠাৎ রূপান্তর ঘটে আমার। আমি হয়ে যাই মশলামাখানো মাছ
তুমি ঢেলে দাও আমাকে তপ্ত কড়াইয়ের তেলে এক হাতে তোমার কড়াইয়ের হাতল
অন্য হাতে নাড়ুনি, ক্রমাগত নাড়াতে থাক আমাকে ডোবানো তেলে ফুটতে ফুটতে
আমি হতে থাকি মজাদার ফ্রাই। -এভাবে আমার রূপান্তরের নামতা পড়ে যাও প্রতিনিয়ত।
0 মন্তব্যসমূহ