সাম্প্রতিক

6/recent/ticker-posts

চিরঞ্জীব হালদার



গুচ্ছ কবিতা


১)

বিশ্বজিতের ঘোড়া জার্মান ভাষায় কথা বলে।
তাকে বিরক্ত হতে কমই দেখেছি।
তক্কে তক্কে আছি তার অভুতপূর্ব বিষাদ হ্রেষার
জার্মান প্রতিশব্দ কি হতে পারে।

অনেক কাল হল এই সুয়োগের মধ্যে না আসতে পেরে ঘোড়াটির প্রেমিকের অনুসন্ধান চালাই।
প্রথমে তাকে নীল অপরাজিতার বাগানে নিয়ে যাব।
আমার জামার ভেতর লুকানো তার দয়িতের
কুশপুত্তলিকা।

জানিনা এখন কি ভাবে শুরু করবো বিষাদ হ্রেষার প্রথানুগ অনুবাদে
আমাকে কতটা নাটকীয় হয়ে উঠতে হবে।
বিশ্বজিতে হাসির মধ্যে যে বিষাদ আর ঘোড়দৌড়ে যে বিষাদ এই দুয়ের ভেতর আমিও  এক নীল তৃণভূমিতে বিচরণ করছি টের পাইনি।


২)

ছান্দোগ্য উপনিষদে ঠেলা গাড়ির চাকার কোন অস্তিত্ব আছে কিনা কে বলবে।
এই রাস্তায় কবিও অনগরমুখী।

আচ্ছা এই গমন পথে বিড়াল ও তক্ষকদের গুলতানি পেরিয়ে বাজশ্রবার পর্ণকুটীর।
তিনি লন্ঠন হাতে মহম্মদ ঘুরীর কোন সেনাকে
বর্ণের মাহাত্ম পাচার করবেন।

তার অপেক্ষা কেমন দ্রাক্ষাফলের
দোসর হয়ে অপ্রচলিত বল্কলে আল্লারাখার বিরতিহীন ধুনে মেলে ধরেন পয়লা ফাল্গুনে
বদরাগী প্রেমিকার অংশবস্ত্র।
থানেদার আমরা এর গোলঘাপ কি করে জানবো বলুন।
এই অনগরমুখী পলাশবাগে আমাদের কেই বা
ডাকতে পারে।



৩)

এক গাদা উদ্দাম পানিপ্রার্থীর মধ্যে কখন পায়ে পায়ে ঢুকে পড়েছি টের পাইনি।
তাদের ছদ্ম অহংকার গুলো মাঝে মাঝে ঘাঘরা বদল
করলে বিভ্রমগুলো চমৎকার রঙিন হাঁসের
উষ্মাহীন ডাক প্রতি লোম কুপে ছড়িয়ে দিচ্ছে
যুদ্ধের আবর্ত।
তবু সব ছাপিয়ে বিশ্রামরত নৌকার সুরেলা নাসাগর্জন  ধেয়ে আসে।
সিফন জর্জেটের আর্কষনী বদান্যতা ছাপিয়ে
দারুন জমে ওঠার অপেক্ষায় লাল কাপড়ে একটা কিছু মধ্যস্ততা ঢেকে নিচ্ছি।
আবার ঢাকছিও না প্রাক্তন বিউটি স্পটের কৌলিন্য।
এই ডামাডোলে এক কচ্ছপও ভিড়ে থাকতে পারে।
এরকম বাস্তব চিত্রনাট্যের পাশে কে যে সত্যি কার্তিক আর কে যে শল্যরাজ।
এবার ভেবে বলুন এত কিছু জেনেও আপনার অভিনন্দন পত্রের কালির বিষন্নতা ঢাকার জন্য
নিদান হিসেবে ধনুক ভস্মের গুনগান
বর্ননা করা ঠিক হবে কিনা ভাবুন।

এই  অবসরে সদ্যমাথা চাড়া দেওয়া পান্ডুলিপির সাথে মধুচন্দ্রিমা যাপনের বানচাল ছকটাকে নাড়াচাড়া করছি।


৪)

আমার মাতামহ দুবার নগরপাল হয়েছিলেন।
এখনও বাড়িতে সেই প্রত্ন নেমপ্লেট থেকে
এক ঘোড়া নেমে আসে আমার মায়ের নিদ্রায় হানা দিতে।
আসলে বুঝে নিতে চায় তার খাদ্যঘাসে কতখানি
ক্যালরি মুজুত রাখা থাকে।
ক্ষনপ্রভ জৌলুসে স্বভাব ভীরু খুড়িও
দেখি মাকেএ সব ব্যাপারে আগিয়ে দিতো।

আমার পরবর্তী প্রজন্ম একটা পিপীলিকার ও পাহারাদার হতে পারবে না।
না পারার কারন হিসাবে বলা যায়
এই তল্লাটে পাহারা দেবার মত কিছু আর অবশিষ্ট নেই।
সবাই যেন অগ্রিম রক্ষাবন্ধন হাতিয়ে
মৃত্যুপ্রান্তরে তাবু খাটিয়ে শনিবারের নিশি
উপভোগ করে।






চিরঞ্জীব হালদার