সাম্প্রতিক

6/recent/ticker-posts

অনিন্দ্য পাল






দুটি কবিতা


মৃত্যু 

তোমাকে লিখতে পারি না 
সমস্ত বয়ে চলা থেমে গেলে 
সমস্ত পথ উপপথ মিশে গেলে এক বিন্দুতে 
সবকটা আলোর মোড়ক পৌঁছে গেলে তারপর 
তোমার শুরু 
অক্ষরে - সংলাপে 
অবচেতন - অচেতনে 
ধূসর শূন্য গুহামুখে একলা নির্জনে 
জন্ম নাও তুমি ...

তোমাকে খুঁজতে ভয় হয় 
তোমাকে ভাবতে ভয় হয় 
অন্তরাল সুড়ঙ্গে নেমে যেতে পারি না 
তবু জানি, জানি তুমি আসবে নিশ্চয় 

মৃত্যু 
তোমাকে ভয় পাই নি কখনও 
পরখ করে চোখে চোখ রেখে দেখো কোনদিন 
পিউপিলে খুঁজে পাবে জমানো ভালোবাসা 
তবে বুকের এক কোণে কোথাও কেঁপে ওঠে 
মন 
যখন 
সে তোমার জন্য নয় 
যাদের জন্য আমি বলতে পারি "আমার" 
সেই সব উজ্জ্বল মুখ-চোখ তাদের সবার 
ওরাই আটকে রেখেছে, আত্মার কারাগার, 

মৃত্যু 
তুমি শাসন 
তুমি শাসক 
তুমি স্রোত 
তুমি বাহক 
হতে পারো তুমি মহাবিশ্বের যতি 
আমি এঁকেছি তোমাকে এই দরজার ওপাশে 
অন্য ব্রহ্মাণ্ডে, অন্য এক স্থপতি। 



শিকার  


বনের আইন কানুন ভেঙে ভেসে গেছে 
যে কাঁকড়াশিকারি উদ্বাস্তু 
তার তো মৃত্যু হতোই
বনে বাঘের খাবার হয়ে যদি গুমখুন না হত 
তবে মরে যেত পেটের মধ্যে ওত পেতে থাকা 
খিদে জন্তুটার কামড়ে 
দশ -পাঁচ টাকায় জীবন বেচে দিয়ে তাই 
কিনতেই হয় আজন্ম পালন করা 
উদর হিংস্রতার সুখ, 
মৃত্যু দিয়ে আলু-ভাত মেখে মুহূর্ত কয়েক 
সেরে ওঠে জাতীয় অসুখ ...

ফেরার নৌকা ফিরে যায় শেষ ইচ্ছা চোখে নিয়ে 
বনের পাকশালে সুসিদ্ধ হতে থাকে রাজার শিকার 
কাঁকড়ার অভিসম্পাত মিশে যেতে থাকে 
নদীর বিশ্বজনীনতায় ...

এরপর আবারও নৌকো ছাড়ে 
আবারো বস্তা বোঝাই হয় নদীর ফসল 
শুধু নিরুদ্দিষ্টের ছেঁড়া কাপড় আটকে থেকে যায় 
লবনাম্বু ঝোপের কাঁটায়। 



 অনিন্দ্য পাল