অন্তর্মুখী
বড়জোড়া ছেড়ে দুর্গাপুরে ফ্ল্যাট কিনেছে রঞ্জন। মাত্র
কয়েক কিলোমিটার পথ। সংসার আর কাজ নিয়ে এতো ব্যস্ত যে মাকে দেখে আসার সময় সে
পায় না। রঞ্জন বাড়ি নিয়ে উদ্বেগে থাকে। এবারে পুজোতে মাকে শাড়ি দিতে এলে, অশক্ত মা কাঁপা হাতে এককাপ চা দিল তাকে।জিভে চা টেনে স্পষ্টই জানিয়ে দিল ,'বাড়ির খোদ্দের দেখা হয়ে গেছে । বাড়ি বিক্রির টাকা ব্যাংকে তোমার নামে
রেখে দেব । তোমার টাকায় তুমি খাবে।'
চাপা ভয়ে বুকটা
কেঁপে ওঠে রমলার। স্বামীর কটা সুদের টাকা। কোনো রকমে বেঁচে থাকা।অসুখ বিসুখে
ডাক্তার দেখাতে গিয়ে এটা ওটা বিক্রি করতে হয়।পাড়া প্রতিবেশীরাই একমাত্র
ভরসা।এবারে মাথা থেকে ছাদ সরে যাবার ভয়ে কথা ঘুরিয়ে বলে,'রনোকে আনবি একবার।কোন ক্লাস এখন ? গাড়ির দরজা বন্ধ
করার আগে একটু উঁচু স্বরেই বলে,' দলিলটা খুঁজে রেখো । এবারে
এসে যেনো পাই। তাড়াতাড়িই আসব।'
অন্তর্মুখী স্বভাবের রমলার শরীরে হঠাৎ চাবুক বিদ্যুৎ বাঁকা
একরোখা... কিছু প্রশ্ন তুলে দিল .…গ্রামের পায়ের ছাপ,বাজে বার বার আত্ম সচেতন ।
ঝর্না মুখোপাধ্যায়