রূপকথা
আকাশ মেঘের গল্প অনেক বলেছ।
নিজের গল্প কিছু বলো আজ, শুনি।
আকাশ, মেঘকে খুব নিজস্ব ভেবে,
রঙ তুলি দিয়ে কীভাবে নতুন স্বপ্ন
এঁকেছিল, সে তো অনেক পুরনো গল্প।
মেঘও তখন আকাশের বুকে মাথা
রেখে ভেবেছিল, এটাই সার ও সত্য;
বাকি যতকিছু, সবই তো অলীক, মিথ্যা।
আজকে তোমার নিজের গল্প শুনব
বলে বসে আছি তোমার ড্রয়িংরুমে।
সপ্তম কাপ চায়েতে চুমুক দিলে,
ডায়েরির পাতা খান দশ কাটাকুটি
খেলাও অনেক দেখিয়ে দিয়েছ, এবার
বল তো, তোমার আকাশে কি লেখা হল,
তোমার নিজের মেঘের গল্পটুকু?
কবিতাগুলো অবাক কিশোর
আমার কবিতাগুলো পথে পথে খুঁজে খুঁজে ফেরে
সোনা বা মুক্ত নয়, অমূল্য জীবন শুধুই
এবং পেয়েও যায়, ছড়ানো ছেটানো সবখানে-
কখনও পথের পাশে, কখনও পথের কোনও বাঁকে।
ধুলোর মধ্যে ওড়ে, আগাছার মধ্যে বেড়ে ওঠে,
পিচের রাস্তা ধরে গরম হাওয়ায় বয়ে যায়,
পুঞ্জ পুঞ্জ সাদা মেঘ হয় শরৎ আকাশে,
কুয়াশায় ভেজা ঘাসে শিউলির ফুল হয়ে ঝরে,
পলাশ-আগুন দিনে বলে যায়, তারও রঙ লাল।
আগুন পোহানো রাতে তাসের বাজিতে রাজা হয়ে
ছেঁড়া কাঁথা সাপটিয়ে জড়িয়ে জীবন শুয়ে থাকে।
খুব ভোরে থিকথিকে ভীড় ট্রেনে চম্পাহাটি থেকে
কাঁচামাল নিয়ে চলে যায় সেই শেয়ালদা স্টেশনে।
আমার কবিতা সব টের পায়, ঘুমের ভেতরে
ট্রেনের শব্দ শোনে, শিশিরের ঝরে পড়া শোনে,
আগুনের আঁচে ঘেমে, কুয়াশার মধ্যে হেঁটে যায়,
মায়ের আঁচল ধরে বাবার আঙুল ধরে ধরে
বিপরীত পথে হেঁটে শৈশব বাফার পেরোয়।
আমার কবিতা তাই বৃদ্ধ হয় বাল্যে ফিরে গিয়ে।