সাম্প্রতিক

6/recent/ticker-posts

নীলম সামন্ত: মুক্তগদ্য: অপাংক্তেয় হ্যারিকেন ও নক্ষত্রপাত


 অপাংক্তেয় হ্যারিকেন ও নক্ষত্রপাত

  

মাসটা যাই হোক না কেন জানালা দিয়ে গরম হাওয়ায় পুড়ে যাচ্ছে গলার দিকটা৷ অনেকক্ষণ থেকেই তাকিয়ে আছি৷ গাছগাছালির ফাঁক দিয়ে দেখা যাচ্ছে স্কুল ফেরত মা ছেলে। এই সময় একটা গদ্য লেখাই যায়৷ দুটো পায়রা নিজেদের ব্যক্তিগত মুহুর্ত আড়াল করবার তাগিদ না দেখিয়ে শেখাচ্ছে প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক আকর্ষণের পথচলতি স্বাভাবিক। এতে অবাক হবারও কিছু নেই আর লুকনোরও নেই৷ তীব্রতা কোন ভেকবাজি নয়। বাড়ির প্রতিটা চারাগাছকে যত্ন করে বাড়িয়ে তোলার মধ্যে যে আলিঙ্গণ সুখ আছে তাকে আকর্ষণের আয়না বলতে পারি৷ আয়না অদ্ভুত একটা শব্দ যেখানে কোনদিনই রাত্রি নেমে আসেনা৷ 

 

এখন আয়নার দিকে পিছন করে শুয়ে আছি। জানালার কাচে মুখ দেখা যায় না৷ নিজেকে ভালোবাসি ঠিকই তবে সারাক্ষণ নিজেকে দেখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই৷ হঠাৎ গরমে আমার কেবলই মনে হচ্ছে কবিতা লেখা মানুষগুলো ঘামে না৷ ওদের আয়ু রেখায় স্মৃতি আওড়ায় চ-বর্গের বর্ণমালা। কপাল থেকে ঝুলতে থাকে মাটির ঝুরি৷ ধুর মাটির ঝুরি আবার কি? হয় হয়। শিল্পী চাইলে ব্যাঙের মুখও মানুষের মতো দেখায়৷ 

 

আজকাল ফিলোসোফিক্যাল কথাবার্তাগুলো ভালো লাগে না৷ মৃত্যু যদি অন্তিম তবে সিঁড়িভাঙা অংকে একটা বিড়াল কত লম্বা লাফ দিল সেই হিসেবে না যাওয়াই ভালো। দুপুরবেলা হলেই তো লাট্টু ছুঁড়ে খেলা দেখাতে হবে৷ অতয়েব দড়িতে মন দিই৷ টানাটানি না৷ ওতে মস্ত আগুন৷ যারা জেতে তারাও হারে৷ উফ ভাবনাগুলো আজকাল বড্ড এলোমেলো। কোথা থেকে শুরু করে কোথায় যেন চলে যাই৷ 

 

দেখতে দেখতে বিকেল গড়িয়ে এলো। সমন্বয়ের জামাকাপড় শুকিয়ে গেছে৷ সন্ধের আগে ঘরে আনতে হবে হাত-পা, হাসিমুখ; তারপর সকলে মিলে চা-সুখ৷ পর্দাগুলোয় কখনো বাদুড় ঝুলে থাকে৷ আমি ভাবি নস্টালজিয়া। কিংবা মাছের বাজার থেকে ঘুরে আসা অক্লান্ত আঁশ৷ সহজ কিছু ভাবলে সময়ের জাল তাডাতাড়ি বোনা হয়ে যায়৷ কিন্তু উপায়হীন। ভাবনার আগেই টুপ করে নক্ষত্র শুয়ে পড়ে বুকের ওপর৷ যাকে হ্যারিকেন মনে করে দুই হাতে জাপটে ধরি৷ আমাকেও যে পথ দেখতে হবে৷ কিছুটা সোজা, খানিকটা বাঁকা অনেকটা সুস্থ। পথের ওপর আরও একটা পথ৷ যেখানে সূর্য চন্দ্র বৈঠক করবে ছেলেবেলা নিয়ে৷

 


নীলম সামন্ত

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ