গুচ্ছ কবিতা
১
হারিয়ে যাওয়া আর খুঁজে পাওয়ার মাঝে
যে যন্ত্রণা সাঁকো। তার একটা নামকরণ হোক।
সাঁকোটি নীলাভ শরীরে দাঁড়িয়ে থাকুক
প্রত্যাশার ভোর বেলা শিশির সিক্ত
শিশুর মতো, হেঁসে!
২
এই অর্থবছরে সারা শ্রাবণ মাস
শুধুই প্রলাপ বকে গেলো। অথচ
রেশনের সুদীর্ঘ লাইনে চাল,
আর হৃদয়ঘটিত কিছু জটিলতা ছাড়া
সবেই মেঘেদের নামে বরাদ্দ ছিলো!
৩
কি নিয়ে যাবে? এতো কিছু তো জড়ো করে
স্তূপের শীর্ষে বসেছো। কি নিয়ে যাবে,
জলপথ স্থলপথ আকাশ পথ
সবখানেই শূণ্যতার জ্যামিতিক নিয়ম বাঁধা!
আঁধারের বর্গাকার জুড়ে তারা জ্বললে
যদি কান্নার সেতার শোনাযায়,
তুমি তাকেই বেঁধে রেখো তোমার মৌনতায়!
৪
খাদ্য পিরামিডের নীচে আমাদের
শনিবারে হাট বসে। টমেটো, পটোল, আলু,
বিবিধ
সব্জির আড়াল থেকে মায়ের কোল চ্যুত
ফোকাল শিশুটি হেসে ওঠে। দামাদামি দেখে।
ক্ষুধার সম্রাট ওকে অন্তত একদিনের
জন্য
তুতেনখামেন করে দিও!
৫
বিশুষ্ক স্তনের মতো
পুকুর থেকে
স্নান সেরে উঠে আসে চৈত্র দুপুর।
গলায় গামছা আর কিছু বেলপাতা ধূপ
বাতাসা দিয়ে শিবলিঙ্গে অর্পণ করে
ইচ্ছে ধারা। মনে মনে ইচ্ছে হয় শ্রাবণী সখ্যতা!
৬
ঘরজোড়া সাংসারিক
সমাধান ইতস্তত ছড়ানো।
টিভিও বুঝেগেছে
তার প্রলাপ এই বাড়ির কেউ শোনে না
জানালার পর্দা ওড়ে, কড়া নাড়েনা কেউ।
কার্নিসে জোড়া শালিক ঝগড়া করে।
ছাদ থেকে প্রলম্বিত শিমলতের পাতায় পাতায়
শীতের বিষন্ন সন্ধ্যা জ্বেলে, ওরা দুজন মুখোমুখি
বসে। চিনতে চেষ্টা করে চল্লিশ বছরের
অচেনা হায়ারোগ্লিফিক্সে!
৭
মানুষ আছো কি! হাঁটতে
হাঁটতে
প্রশ্নের মাথায় চেপে বসে রিক্সার বুড়ো চালক!
চোয়াল কষে টেনে যায় পৃথিবীকে।
আর একটু জোরে! রক্ত ছলছল হৃদয়!
কানা লন্ঠন বুকে জ্বেলে জন জলের আঁধারে
মানুষ খুঁজতে নামে আমাদের আদিম প্রজাতিরা।
ডারউইন চেয়ে থাকেন বাষ্পসিক্ত চোখে!
0 মন্তব্যসমূহ