দুটি কবিতা
১.
এখন ঠাকুরমার ঘরে ঢুকলে সন্ধ্যাপ্রদীপ দেখি। প্রদীপের
শিখা ধিকিধিকি জ্বলছে। প্রদীপ ফালি করে বেরিয়ে আসছে হৃদয়। হৃদয়ের কোটরে রং
বেরঙের ফুল। এক একটা ফুলে আত্মার প্রশংসা। দেওয়ালে ফুটে উঠছে নাতনির মুখ। ঠাকুরমা
তাতে দেখছেন গৌরীর বলয়। মগজের ভিতর রোজ জন্মাচ্ছে ছেলেবেলা। ঠাকুরমা সেই ছেলেবেলা
চেটে চেটে খাচ্ছেন। শিশুর মতো খিলখিলিয়ে হেসে উঠছেন,আবার অবাধ্য হয়ে উঠছেন শিশুটির
মতোই।
আজও ঠাকুরদা অপেক্ষা করে আছেন তানপুরা হাতে নিয়ে।
পারিজাত ঠেলে বেরিয়ে এসে ঠাকুরমার হাত ধরে টেনে তুলবেন ছেলেবেলা থেকে। ঠাকুরমার
বনবাস এবার হয়তো পাখনা মেলে উড়ে যাবে দূর থেকে বহুদূরে...
২.
আলতাপাটি
কয়েকটি প্লাবন এসে আছড়ে পড়ে মেয়েটির বুকে।
মেয়েটি পাখি হয়ে যায়। কয়েক বসন্ত পার হয়ে যায় জীবন থেকে। মেয়েটি প্রজাপতি
হয়ে যায়।ঘরের দেয়ালে আলপনা মুছে যায়। মেয়েটি তখন আসমানে রামধনু। অল্প অল্প রং
মিলিয়ে সেতু আঁকে। সেতুর নীচে ধুলোট উৎসব। প্রতি বছর চৈত্রে কালবৈশাখী আসে। আসে
আর সেতু উড়িয়ে নিয়ে যায়; আসে আর উড়িয়ে নিয়ে যায়। আবার সেতু বাঁধে,আবার
রং দেয়। সেতু ছিঁড়ে আলপথে
নেমে আসে। চাঁদ ভেঙে যায় লাল চাদরের নকশায়। হাতের
থেকে হাত কয়েক ক্রোশ পাড়ি দেয়।মেয়েটি স্থির বিন্দু এবার।
কলিজা গুঁড়িয়ে খোদা নেমে আসে পথে পথে। শবনমে বেজে
ওঠে পাতাল। পাতাল ঠেলে ঠেলে জানকী হয় মেয়েটি। অশোকের ফুলে লালা
ঝরে অবেলায়।
1 মন্তব্যসমূহ
👌👍❤️🌹
উত্তরমুছুন