দুটি কবিতা
চলন বিল থেকে চান্দার বিল
দিগন্তরেখার কাছে সরপড়া সাদা কুয়াশা আমার শরীরে
মাখিয়ে দাও―সদ্যফোটা আমের মুকুল যে সুঘ্রাণ ছড়াল তার মাঝেও
হাহাকার আছে। চলন বিলের সবুজ যাত্রা মৃত্যুর কথা মনে করে লাল রংয়ের কাছে গিয়ে
দাঁড়ায়। ছোট নদী শুকিয়ে গেলে সফুরন নেছা পুত্রকে সাথে নিয়ে নৌকা ডোবায় আর
ইজিবাইকের দিকে তাকিয়ে ইঞ্জিনের কথা ভাবতে ভাবতে সে চলে যায়―সান্তাহার থেকে শিয়ালদহ
স্টেশন; যেখানে নিশিকান্তর সাথে তাঁর প্রথম পরিচয়।
মৃত্যু নামক ভবের যাত্রা থেকে ফিরে এসো তেইশের
জোড়া হাতে নাও বৈঠা। চলনবিলের দীর্ঘ সবুজ ধানক্ষেত ভেদ করে সন্ধ্যার আলোতে নিজেকে
রাঙাও। বাইচের নৌকায় চড়িয়ে তোমায় নিয়ে যাব শালবন বিহার; জন্মদিনের পরিধানে তুমি
আমি বন থেরাপি নেব, হয়ে যাব প্রকৃতির সন্তান। হাওয়ার বেগে চলে যাব চলন বিল থেকে
চান্দার বিল, ভূমিপুত্রের সাজে চলন সে যেন আজ আদমের লাহান।
ত্রিকালের
বেহুলা
পূর্ণিমার চাঁদ লাশ নিয়ে যায় জলের উপর দিয়ে
পদ্মার নরম চাঁদ গলে গলে হলুদ স্মৃতি জাগায়
বেহুলার ক্রন্দন ফিরে আসে জেলেদের ভেসালে।
বিলাপ আর মাতম এপার থেকে ওপারে পৌঁছায়
পূবালি বাতাসে ভাসে লখিন্দরের ভেলা
সাপে কাটা বর গায়ে তাঁর জরির জামা।
ঐ শোন নদীতে জোয়ার নেমেছে অসমান
নদী নারী একসাথে কাঁদলে মেঘের নাচন।
কলার ভেলায় মরার ঘুম জড়ো হয় পুরাকালে
ত্রিকাল চলে আসে তবু রাজার ঘুম ভাঙে না।
ধবল পূর্ণিমায় সাদা থানে বেহুলা ফেরে তীরে,
যেন― অন্ধকারে ঝলমল তসবিহদানা
জ্বলছে।
তোমার আবির্ভাবে নদীতে জোয়ারভাটা আসে।
তবুও লখিন্দর ভেসে যায় দখিনা সমীরণে
রাজমসনদে তাঁর খড়ম পড়ে থাকে।
2 মন্তব্যসমূহ
Great work indeef
উত্তরমুছুনদুরন্তপনা শৈশব-কৈশোরের ফেলে আসা নিজ এলাকার চিত্র ফুটে উঠেছে কবিতায়
উত্তরমুছুন