সাম্প্রতিক

6/recent/ticker-posts

বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়

 

 


কবি মোহিনীমোহন গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতায় চেতনালোকের অন্তঃস্বর 

 

মনের মধ্যে  ভাবনাগুলো ক্রমাগত সাঁতার কেটে চলে। এই আনবিক সাঁতার থেকে একজন কবি তুলে আনেন অনুভূতির ক্রমিক বিচ্ছুরন । শব্দের বুননে অনুভবের  জাগরণে।  সেই অমিয় শব্দরেণুর স্বাদ পাই আমরা। অনিরুক্ত হাওয়ায় বাতাসে উড়ে বেড়ায় তার পরাগ। এই ধারাবাহিক প্রক্রিয়া চলতেই থাকে  চলতেই থাকে সারাজীবন। তার  পাশাপাশি চলতে থাকে আত্মিক সংলাপ।  ব্যক্তি মানুষ আর কবি  দুটো আলাদা সত্ত্বা। বিচ্ছিন্ন  না কি একই ? না কি এক সত্ত্বা থেকে কখনও কখনও বেরিয়ে আসে অবচেতনার ফ্রাগমেন্টস ? প্রস্তাবহীন সমর্পন। চেতনা এবং চেতনার সারফেস থেকে তৈরি হয়ে যায় অসংখ্য ছায়াবলয়। কবি আসলে নির্জন। সৃষ্টির প্রবল তাড়নায়  সে এক  নির্জন ঈশ্বর । স্মৃতির সম্ভোগ থেকে তৈরি করেন  নিজস্ব বিশ্ব। এক মগ্নপৃথিবী। বাইরের আমি অন্তরের আমিকে পর্যবেক্ষণ করে  চিন্তার আচ্ছন্নতা দিয়ে । সারাদিন ধরে , সারাজীবন ধরে । সে চা খাওয়া দেখে  ,  বিড়ির ধোঁয়া থেকে খুঁজে নেয় বিষাদবিলাপ। চুপচাপ পাশে দাড়িয়ে সব  কথা শোনে।  কবির অ্যানাটমির সাথে তার সামগ্রিক লিপ্ততা। এফোঁড় ওফোঁড় করে দেখে কবিকে ।   কিছুই গোপন থাকেনা  চৈতন্যদ্যুতির  বাইরে এক পরিদৃশ্যমান জগতের কাছে। এই সমান্তরাল সম্পর্ক বন্ধুত্বের প্রতিশব্দ হয়ে ওঠেনা। অংশীদার হয়ে ওঠেনা।  হয়ে ওঠেনা বলেই দৃষ্টির বহুস্তররীয় বিস্তার ঘটে । সম্মোহন এবং আচ্ছন্নতার  পরিসর অতিক্রম করে   নিরীক্ষন সম্ভব হয় ।     who was it that imparted form to man gave him majesty movement , manifestation and character , inspired him with wisdom music and dancing ? when this body was raised upwards  he found also the oblique sides of the other directions in him – he who is person  , the citadel of the infinite being .  

   

 ছায়াসঙ্গী

 

আমার ছায়ার সঙ্গে সারাদিন ঘুরে ফিরে বাড়ি ফিরতাম ...

 

প্রতিদিন রাস্তার মোড়ে আড্ডা দিই চা দোকানে চা খাই বিড়ি টানি

রাজনীতির গল্প বলি স্ফূর্তি উড়াই

ছায়া শোনে চুপচাপ পাশেই দাঁড়িয়ে থাকে

সব কিছু দেখে শুনে মুখ ফুটে কিছুই বলে না ।

 

ছায়ার কি ভয়ডর আছে? কিছুই গোপণ নেই গোপণ থাকে না

আমি ও আমার ছায়া পাশাপাশি সমান্তরাল

আমার প্রেমিকা জানে তাই কোন চোখমুখে লাজলজ্জা নেই

প্রাণ খুলে কথাবার্তা হয়।

 

আমি ও আমার ছায়া একসঙ্গে থাকলেও

দুজনের মধ্যে কোন বন্ধুত্ব হলো না

ছায়া সে ছায়ার মত, আমিও আমার মত আছি

প্রতিবিম্বে দোল খায় ফুটে থাকা ফুল ।

 

প্রতিদিন প্রতিটি মূহুর্ত যায় ছায়া দেখে আমার মধ্যে শুরু

ক্রমাগত যুদ্ধ তুমুল ।

 তাহলে নিজের সাথে  নিজের যুদ্ধ হচ্ছে কেন ? কেনই বা এই তুমুল যুদ্ধের প্রাসঙ্গিকতা ? দ্বন্দ্ব ছাড়া ফালাফালা করে চিরে দেখা ছাড়া ক্রমাগত আঘাত প্রত্যাঘাত ছাড়া বেষ্টনীর সীমা আর বক্রতাকে অতিক্রম করা সম্ভব নয়।  আসলে এভাবেই একটা জায়গা চিহ্নিত হয়ে উঠছে এক স্বতন্ত্র পরিসর ।অনিবার্য আলোর বন্ধুতা। শাব্দিক ফ্রেম থেকে স্থিরচিত্রও সচল হয়ে উঠছে । আলোর ভেতর এক দৃশ্যমান মানুষ আবার আলোর বৃত্তের বাইরে ছায়ার অবতলে আলাদা মানুষ । স্মৃতি থেকে স্পর্শময়তার দিকে এবং পরিশেষে  স্বপ্নের অবচ্ছায়ায় তা মিশে যাচ্ছে। শুধু কিছু ঘটনাপুঞ্জ যা ফুলের মত এই ছিল এই মাত্র ঝরে গেছে। কিন্তু প্রতিবিম্বের ভেতর দোল খাচ্ছে ক্রমাগত। সেই ফুলের উপর গান গেয়ে উড়ে এসে বসছে ভ্রমর । এই আকণ্ঠ তৃষ্ণা একে কি আমরা জীবনের লিপ্ততা বলব না? আগুনের ডানা মেলে ডিম পেড়ে উড়ে যাচ্ছে কোথায় ডাহুক। জীবন তো কেবল রূপান্তরের ছবি। নিজেকে অতিজীবিত করে তোলার নিরন্তর প্রয়াস । নতুন পাঠক্রম। এক অস্পষ্ট সমারোহ থেকে চিন্তার ক্রমিক মাইটোসিস। এই জারনচিহ্নগুলিই তো সমস্ত নিয়ম ভেঙে ক্রমিক অস্ত্রোপচারের মধ্য দিয়ে কবির মায়াবন্দরে ঢুকে পড়ে। আকণ্ঠ তৃষ্ণা উসকে দিয়ে যায়। শব্দের ভাষামাটি  দিয়ে তৈরি হয় পথ। সে পথের পাথরে আগুনের আভাস।  তবু শিল্পময় মানচিত্র আগুন থেকে গোলাপের নির্যাস টেনে আনে। এই রূপ রস গন্ধের আবেষ্টনী ভ্রমরকে গতিশীল করে। ময়ূরী নৃত্য ভুলে যায় । অনুভূতির রঙ এভাবেই নতুন দুনিয়ার জন্ম দেয় ।     

 

নতুন পাঠক্রম

 

পাথরে আগুন জ্বলছে যে আগুনে ফুটেছে গোলাপ

 

গান গেয়ে গোলাপেও উড়ে এসে বসেছে ভ্রমর 

ময়ূরী নৃত্য ভুলে থমকে দাঁড়াল

কে যেন আকণ্ঠ তৃষ্ণা উস্কে দিয়ে গেল 

তুলে নিল খুচরো কিছু সুখ ।

 

পাথরে আগুন জ্বলছে যে আগুনে ফুটেছে গোলাপ

পাথরে গোলাপ ফুলে বসেছে ভ্রমর

আগুনের ডানা মেলে ডিম উড়ে গেছে কোথায় ডাহুক ?

 

তাহলে কি নতুন পাঠক্রম  শুরু হল নিয়ম ভাঙার ? 

এই যে এত এত ঘটনা। এই যে কোটি কোটি বছর ধরে বয়ে চলা সভ্যতা। নিঃশব্দে ছায়ার মত কেউ আমার সাথে হেঁটে চলেছে অনাদিকাল থেকে আজও । আর আমি দেখে যাচ্ছি  সেই প্রাগৈতিহাসিক অ্যামিবার চলন । আগুনের পৃথিবীতে ডিম রেখে সে শুধু চলে যাচ্ছে চিকচিহ্নহীন এক বিলের দিকে। অনন্তের দিকে। এক নিঃশব্দ পথিকসত্ত্বা ছাড়া আর কিছু নেই তার । অতীত থেকে বর্তমান। আলো আর ছায়া। এই সমন্বয় এবং সংশ্লেষ। রাস্তার ক্লোজ শর্টে কি আমরা এটাই দেখতে পাচ্ছি না ? আর তা  নিয়ে যাচ্ছে  এক চির ভ্রাম্যমানতার দিকে। জীবনের আর্জি নিয়ে উড়নপিপাসা নিয়ে বিশ্লেষিত হয়ে পড়ে ব্যপ্তির বিসর্গে । পাহাড়ি নদীর স্রোতে পালতোলা নৌকা ভাসিয়ে  । জলের আবর্তের মধ্যে ঘুমন্ত প্রাণের আকণ্ঠ পিপাসা রেখে  আবার সমুদ্র থেকে উঠে আসছে মেঘ । গন্ধে গন্ধে জীবনের ছন্দময় উৎস সন্ধানই পার্থিব স্পষ্টতার মধ্যে দাঁড়িয়ে দৃশ্যক্রমের সীমা অতিক্রম করে যাওয়া অপসারী দৃষ্টি । আর্ট  অফ ইমাজিনেশনেশ যা ভিস্যুয়ালিটির কিয়ক্সগুলো ভেঙে  বিলুপ্ত অনুরণন থেকে  চৈতন্যে পৌঁছানোর   অর্গল খুলে দেয় । দেরিদার মতে - Nothing is  identical with itself  , the moment something is thought, said , written or intended , it becomes a trace of itself , no longer present . সত্যের কোন পূর্ণচ্ছেদ নেই । স্বর থেকে ভিন্নস্বরে   এক দৃষ্টি থেকে দৃষ্টান্তর - এর অন্বয় এবং মহাসমন্বয়ের মধ্যেই অনন্তসম্ভাব্যতা  যা লিনিয়ারাইজেশনের যুক্তিফাটল অতিক্রম করতে পারে । ভুল ভেঙে গেলে মরা ডালে  ডেকে ওঠে কোকিল । সে গান শোনায় । অন্য এক ভুবনের গান ।   



ভুল ভেঙে গেলে

 

ভুল ভেঙে গেলে ফুল কুড়াতে যাই

যে ফুলে বসন্ত এসে বাঁশি বাজায়

গন্ধে গন্ধে জীবনের ছন্দময় জীবনের উৎস সন্ধান

 

ভুল ভেঙে গেলে

মরা ডালে ডেকে ওঠে কোকিল

পাহাড়ি নদীর স্রোতে পাল তোলা নৌকা ভেসে যায়

দাঁড়ের শব্দ শুনি

অন্য এক ভুবনের গান

আমার সমস্ত ভুল একসময় ফুল হয়ে গেলে

সময়ের রঙ পাল্টায় । 

 

দার্শনিক লাঁকার কি বলেছিলেন । আমরা স্মরণ করে নিতে পারি তাঁর কথাগুলো -  a child  only arrives at a sense of  selfhood when it sees itself as a whole  in a mirror  for the first time .   in what is known as the mirror stage . It recognizes this whole as a something  it wants to be , but because the child’s own perception of the self does not provide  this sense of unity  in identity from the moment onwards  it has to look  to significant others and society  as a whole  to act as mirrors  that reflected back a unified image of the self . কঠিন রাস্তার উপর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে  ঝড় বৃষ্টির কনশাস এফেক্ট  থেকে সে একটু একটু করে শনাক্ত করে নিতে শেখে সমুদ্র শাসনের উল্লাস। হ্যাঁ । এই সেই রাস্তা যার উপর মেগাস্থিনিস বুদ্ধ অশোকের পায়ের ছাপ স্পষ্ট । যেখানে ইতিহাসের পদধ্বনি সচেতন কম্পাঙ্কে ধ্বনিত হচ্ছে। রাস্তার ভেতরে রাস্তা । জীবনের ভেতরে জীবন । শ্যাডো থিয়েটার। এই ছায়া নাটক জীবনের সমস্ত বাইনারির রাইজোম্যাটিক  স্ট্রাকচারে । এর মধ্য থেকেই নিজেকে চিনতে শেখা। দেখতে শেখা । পারিপার্শ্বিক আয়নার ভেতর থেকে উঠে আসে   সামগ্রিকতার নির্যাস। ব্যক্তিগত স্বরবর্ণ পেরিয়ে এভাবেই সামষ্টিক ব্যঞ্জনবর্ণে দীক্ষিত হয়ে ওঠা ।  কঠিন রাস্তার সুলুক সন্ধান । যেখানে ঝড় ও বৃষ্টিপাতের  পথ  অবরোধ। তবু সেই প্রাণনার অনুসন্ধান। মেরুদণ্ড সোজা রাখার  দৃপ্ত শপথ নিয়ে  খুঁজে দেখা জ্যোৎস্নাময় প্লাবিত জীবনপথ ।  নিয়মতান্ত্রিকতা কখনই  একজন সচেতন যোদ্ধাকে  তাঁর চিন্তন প্রণালীগুলোকে  বিপথগামী করতে করতে পারে না।  নতজানু করতে পারেনা তাঁর স্বয়ংক্রিয়  অনুচিন্তার বলয় । নিয়ন্ত্রন করতে পারেনা তাঁর  শাব্দিক ভ্রমণ পথ ।   



এ হাঁটার প্রত্যাহার নেই 

 

আমি কখনও কারো কাছে নতজানু নই তাই ঝড় বৃষ্টির মধ্যে

হেঁটে হেঁটে যাই কঠিন রাস্তায়

রাস্তা আমাকে রাস্তার ভেতরে রাস্তা দেখায় 

যে রাস্তায় হেঁটে গেছে মেগাস্থিনিস বুদ্ধ অশোক আলেকজান্ডার 

ইতিহাস কাঁপানো পদধ্বনি আজও  শুনতে পাই 

 

আমার পায়ে পায়ে পাহাড় পাথর সমুদ্র শাসনের  উল্লাস ।

 

রক্ত মাখা সংবিধান সরে দাঁড়ায় 

ক্রুশবিদ্ধ গণতন্ত্র চিৎকার করে ওঠে 

দাসত্বের পোশাক পরা স্বাধীনতা কান্নায় আকাশ ভেজায়

আমি ধর্ম নিরপেক্ষতার মুখোশ পরা দালালদের লাথি মেরে

শক্তি পরীক্ষা করি ।

 

ছেঁড়া খোঁড়া আমার ভারতবর্ষ ভাতের থালায় দেখতে পায়

ভয়ঙ্কর বন্দুকের ছায়া 

আমি সেই সন্ত্রাসের ছায়া থেঁৎলে দিয়ে ঝড় বৃষ্টি বজ্রপাতের ভিতর

পথ হাঁটি 

এ হাঁটার প্রত্যাহার নেই

জেনে গেছে সমগ্র বিশ্ব ভূমণ্ডল ।

 

সাম্প্রতিক চিত্রগুলির পাশ দিয়ে হেঁটে  যেতে যেতে দেখা যায় ক্রুশবিদ্ধ গণতন্ত্রের চিৎকার। দাসত্বের পোশাক গায়ে দিয়ে মর্মভেদী কান্নায় ভেঙে পড়া বিধ্বস্ত স্বাধীনতা আর ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশ । সারা দুনিয়া জুড়ে অকল্পনীয় ভাঙচুর , স্বপ্ন এবং প্রত্যয়ের উপর প্রবল ধাক্কা। যা পরিশীলিত ভাবনাকে বেপথু করে দিতে চায় । কিন্তু এ হাঁটার প্রত্যাহার নেই বলেই মানুষের দেশ ভাষা আর সময়ের মানচিত্র পেরিয়ে সন্ত্রাসের ছায়া থেঁতলে এভাবেই তো বজ্রসন্ধানী হয়ে ওঠেন একজন শব্দশিল্পী । কালের সীমারেখা ভেঙে চিরকালীন হয়ে ওঠে তাঁর  বিহ্বল মুহূর্তগুলি। অনন্য উদ্ভাসনে তৈরি হয় আশ্চর্য সম্ভাবনার বহুমাত্রিক বিচ্ছুরণ। মুছে যায় প্রান্তিকায়িত ছায়াঞ্চল। সত্যের সন্ধানে কোথায় যেতে হয় একজন শব্দের যাদুকরকে ? ব্রহ্মকমল আনতে। ব্রহ্মবিদ ব্রহ্মের ভবতি। কায়ার ধারণা থেকে অতিকায়  সর্বব্যপ্তিতার প্রান্তদেশ  যেখান থেকে শুরু হয় অতিজাগরের মানচিত্র । অনির্দেশ্য ভগ্নাংশ থেকে পূর্ণতার অভিযাত্রা ।এক ধ্রুপদী মেটাফোরে এই এই পরিমার্জন সমূহ গেঁথে নিতে চান কবি। শৃঙ্খলিত তাৎক্ষনিকতা থেকে আবহমানের যোগসূত্র। তার নিরেট শুভ্রতা আবিস্কার করেন। চিরপ্রবাহিত কবিতাকল্পে  ডুবুরির মত ডুবে যান , তুলে আনেন অমুদ্রিত সাদা পাতাটি। যেখানে শব্দ চুরি গেছে। মন্ত্র নেই। শ্লোক নেই । নিথর সেই সুড়ঙ্গলোকের ভেতর আততায়ী ত্রাস। প্যারাবলিক শূন্যতা। প্রতিকারহীন যে দুঃখ আর অসুখগুলো রয়ে যায় প্রতিদিন। যারা উপশম প্রত্যাশী। আত্মেন্দ্রিয়ের ভেতর যারা নির্বাক অথচ বেদনাপ্রবন এবং নিরাময় সন্ধানী। মনোজগতের  সেই দুষ্প্রবেশ্য সত্য  যার অস্পষ্ট স্থানিকতা নিরূপণ করা সকলের সাধ্য নয়। শুধু কবি পারেন। কেবলমাত্র কবিই পারেন সমস্ত মন্ত্র চুরি গেলেও সেই অমোঘ অশ্রুত ধ্বনির সন্ধান আনতে । ব্রহ্মকমল ।      

 

 ব্রহ্মকমল

 

ব্রহ্মকমল আনতে সে গেছে কোথায় ?

 

সে কি তার ঠিকানা জেনেছে ?

 

এখানে দাঁড়িয়ে একা আদিভূতা সত্য সনাতনী

পুজা চায় , পুজার মন্ত্র নেই কোনও 

সব শব্দ চুরি হয়ে গেছে । 

 

পুজারি নিঃশব্দে কাঁদে তার

দুচোখের শুকনো জল মায়ের চরণে পড়ে

হয়ে গেল ব্রহ্মকমল । 

 

এভাবেই বুনিয়াদী হট্টগোল পেরিয়ে চোখের জলের মত নিঃশব্দে ঝরে পড়ে স্বাপ্নিক সেই স্বর। ব্রহ্ম। যা ইম্পসিবলের অরিজিনালিটি নিয়ে চিত্রিত আকাশ পেরিয়ে অন্তরের অন্তরীক্ষে বেজে ওঠে । আর অস্পষ্ট কপাটগুলো খুলে যায় এবং আবহমানের ভেতর এক একটি ফুল ফুটে ওঠে । পাথরে আগুন জ্বলছে যে আগুনে ফুটেছে গোলাপ। তৈরি হয় মাল্টিপল ইমপালস।  বোধরঙে আরক্তিম হয়ে ওঠে অনির্বচনীয় অসংজ্ঞাত এক স্তব্ধলোক।   


--------------------------------------

ছবি ঋণ: গুগল






একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ