১
জল খুঁজতে বেরিয়েছে কাগজনৌকা
আর তখনই আমি তাকে পোড়াচ্ছি আগুনপ্যাস্টেলে
ধরো আমি সেইসব মাস্তুলে খোঁপার রঙিন ক্লিপ
ধরো আমি সেইসব অন্ধকার টিপের ওপর জ্বলে ওঠা মোম
আয়নায় টুপ করে খসে পড়া ছায়া, পরাগমিলন
ইকোসিস্টেম জুড়ে গতকাল খুব ঝড়জল
প্রকৃত নদীরা কাল রাতভর উড়ে গেছে মিল্কিওয়ের দিকে
নৌকা তুমি ভুলে গেছ
তোমার নোঙর কীভাবে আটকে আছে আমার সিঁথিতে…
২
নৌকা, তুমি আমাকে
বলোনি
একতাল রক্ত পড়ে আছে ছইয়ের ভেতরে
সারি সারি বিছানারা ভেসে যাচ্ছে অদ্ভুত আলোয়
তুমি গান গাইছো আর গতর থেকে ঝরে পড়ছে শস্যবীজ
ফুটে উঠছে মর্গ, ফুটে উঠছে
পোস্টমর্টেম
জন্মদিন আঁচড়াতে আঁচড়াতে কেঁদে উঠছে চিরুনি
তোমার কাগজশরীরে কে যেন
গতকাল লিখে রেখেছে স্ট্রবেরিগন্ধের ডেডলেটার
৩
জ্বরে ভেসে যাচ্ছে কাগজনৌকাটি
টাচ স্ক্রিন ছুঁলেই তোমার ই-মেলের গন্ধ
এত এত চান্দ্রমাস, বিস্ফোরণ ভর্তি
সুটকেস
খুনের ভিডিও চলছে সারারাত মাথার ভেতর
কথার পরিখা পেরিয়ে আয়নাদের জ্বলে ওঠা
তুমি ভয় পেয়ো না গো
জল নয়, অচেনা
শহরে
এরপর মেট্রোর গর্ভ থেকে উঠে আসবে নষ্ট উইপোকারা
৪
আমি যা পছন্দ করি না
তা কক্ষনো লিখি না আয়নার ভূমিকায়
লিখি মিথ্যেকথা, লিখি সিঁদুরের
টিপ
লিখি ঠোঁট, লিখি রোমকূপ
নৌকা বয়ে নিয়ে যায় ঘাড় মুচড়ে পড়া মৃত পাখিদের
নৌকা বয়ে নিয়ে যায় খসে পড়া আদরের ঘ্রাণ
নৌকা বয়ে নিয়ে যায় আমাদের বসতিবৃতান্ত
বারোশো বছর ধরে ভাসতে ভাসতে
এভাবেই ফসিলেরা জমে উঠছে উজানগঙ্গায়…
৫
প্রতিটি নাবিক জানে
কোনো কোনো কোজাগরী রাতে
নৌকারা দেয়াল ফাটিয়ে আচমকা ঢুকে পড়ে ঘরের ভেতর
যৌন প্ররোচনায় ফুলে ওঠে আশৈশব বোবা নদী
দুহাজার বছর আগের জেলিফিস ও সুনামিদের শীৎকার
ক্রমাগত ঝরে পড়ে নক্ষত্রদের পাঁজর থেকে
আমাদের কামড়ে খায় ছত্রাক, ফেনা
ও শ্যাওলাদের প্রতিহিংসা
শুধুমাত্র সেইসব রাতে
জ্বলন্ত একতারা হয়ে আমি ভেসে যেতে পারি
কাগজনৌকাটির পাশে পাশে…