দুটি কবিতা
এসো তবে উন্মাদের রোগ আর
মন নিয়ে কথা বলি
স্বাভাবিকের ক্ষুধা, তৃষ্ণা, ব্যাধি যা কিছু আছে
তা নিয়ে আরও গল্প লেখা হোক
আধুনিক-অনাধুনিক-- এসো আমরা মানুষকে
যৌনসুখ কিংবা ভোগলালসার
মাত্রা দিয়ে বিচার করি।
কবিতার শরীরে বেদনার নানা চিহ্ন আঁকা থাকে
কিছু কিছু অসুখের কথা লেখেন কবি ;
ওহে গঞ্জিকসেবী, মাতালের সান্নিধ্য পেলে
পূর্বযন্ত্রণার অভিঘাত কতটুকু সইতে পারো?
অভিব্যক্তি নেই, মানসিক বিকার আছে ...
এসো তবে আত্মকণ্ডূয়ন ভুলে বিবিধ বয়সের
মর্মপীড়াকে সহনীয় করে তুলি।
উন্মাদের আফশোশ নেই, সহ্যশক্তি আছে
ব্যতিক্রম মানার প্রবণতা উন্মাদেরই আছে
সূর্যাস্তের ঘোষণা শুনবে বলে উন্মাদের দল তাই
প্রতিদিন গোধূলিবেলায় সমবেত হয়,
পশ্চিমপানে কান পাতে ;
উন্মাদের শক্তি অর্জনে আগ্রহী হও যদি
চলো সকলে দলবেঁধে পাগলাগারদে যাই
পাগলদের সঙ্গে একটিবার রোগ-বিনিময় করি।
নক্ষত্রের মৃত্যু
দর্শনেন্দ্রিয় ব্যবহারের পর আকাশের বর্ণ, আলোর তীব্রতা এবং নক্ষত্রের অস্তিত্ব কিছুটা প্রতীয়মান হয়। অনুমান-নির্ভরতার ফলে জানা যায়, কোনো এক বিহ্বল রাতে এক বা একাধিক নক্ষত্র এক গৃহস্থের বাড়ির উঠোনে নেমে আসে। তাদের কেউ কেউ শিশুবয়সের বলে গাছে গাছে দোল খায়, গতিবিজ্ঞানের সূত্র মেনে কেউ কেউ কলোনিপাড়ার অন্দরে ছোটাছুটিতে মত্ত থাকে। পরিণত বয়সের যারা, তারা একটা ঘরের ভেতরের ছাদকে নীল আকাশ ভেবে ছাদের দেওয়ালের পলেস্তারায় সেঁটে থাকে। আমি, আমার ছায়া আর আমার বেশি বয়সের আত্মা-- সকলে মিলে নক্ষত্রদের জেন্ডার নিরূপণ করব ভেবে তাদের অবতরণের ঘটনা এবং অন্যান্য নানা বিষয়ে অনুসন্ধান চালিয়েছিলাম। তাতে জেনেছি যে নক্ষত্রদের কোনো মেল-ফিমেল আছে, অথবা নেই। মানলে আছে, না মানলে কেমন করে থাকে! নক্ষত্রদের জগতে ধর্ষণ নেই, নারীবাদী কেউ নেই। তবে তারা কিছুটা গ্ল্যামার-সচেতন হয়ে বাঁচতে চায়। জ্বালানির অভাব ঘটলে তাদের জীবন বিপন্ন হয় এবং সে কারণেই তাদের অনেককে মর্ত্যে নেমে আসতে দেখা যায়। মর্ত্যে আগমনকালে মাঝপথে তাদের কারো কারো মৃত্যুও ঘটে বলে জানা গেছে।
শিবাশিস দত্ত