কার হাতে আজ
প্রলয় রাখি? প্রলয়
রাখি? আমার শুধু প্রলয় নিয়ে খেলা। দাবানলের মতোই পুড়ছি।
পুড়তে পুড়তে সহে যাচ্ছি তোমার অবহেলা। আমাকে আজ লেখাও তুমি, লেখাও আরও…আমার যত অতৃপ্তি, আমার
যত শূন্যতার বিপুল বহ্নিজ্বালা।
সে তো যা হই আমি হই—নিজের ভেতর খুঁজতে থাকি নিজেরই অপূর্ণতা।
এভাবেই তো বাঁধ ভাঙে আর বেরিয়ে আসি—শিয়াল, কুকুর, বেড়াল, ইঁদুর অথবা শিংওয়ালা— কোনও প্রাণী কিংবা নেহাৎ আদিম ঘোড়া। এভাবেই লিখতে থাকি। আয়নার সামনে
দাঁড়াই। দেখি, মাথা থেকে ধড় ছাড়া। দেখি লেজ গজানো,
হাত-পায়ে খুর, অথবা আদিম অসৌন্দর্যে ভরা। আর
এই চারিপাশ আমার মতোই সহযাত্রী—অস্পষ্ট আলোয় এসে খেলা পাতে
কবি বন্ধুরা। খেলা তো কবিতা! আদিম অভ্যাস। খেলা তবু আমাদের সবারই প্রেরণা।
সমস্ত সৃষ্টিই আদিম অভ্যাস। সমস্ত সৃষ্টির
মধ্যেই মিশে থাকে অতৃপ্তি, অথবা
সমস্ত সৃষ্টিই হয় অতৃপ্তি থেকে। তবুও এই অতৃপ্তির মধ্যে স্রষ্টা খুঁজে পান কোনও
তৃপ্তি— যা অতৃপ্ত হয়েও শিল্পীকে নতুনের প্রেরণা যোগায়।
কবিতা রচনা সেরকমই এক শিল্প—হৃদয়ে অতৃপ্তির শূন্যতা নিয়ে
এর যাত্রা। যে অতৃপ্তি আমাদের জীবনযাপন, স্বপ্ন, প্রেম আর সৃষ্টিতত্ত্ব। কখনোই আমরা পূর্ণ নই। আকাশের একপিঠ শুধু আমাদের
সামনে। চাঁদের একপিঠের আলো এসে আমাদের ওপর পড়ছে। আলো আর গুঞ্জনে আমরা পথ হাঁটছি।
হেঁটেই যাচ্ছি। পথের শেষ কোথায়? কখনো আমরা শেষ পৌঁছাতে পারি
না। প্রেমিকা চলে যায় অন্য বাড়ি অন্য পুরুষের কাছে। বয়ঃসন্ধির গোধূলির মাঠ
অন্ধকার হয়। তখন লিখি—
“সঙ্গম-পিয়াসী
মেঘ একা একা মুখচোরা মেয়েটির মতো
জানালায় কাঁদে.…
তার বুকের
ঔদার্য থেকে মিহি মেহগনি সুর,
বুকের গভীর
থেকে করাত-কলের ক্লান্ত যুবকের কান্না…”
(নিরুচ্চর মেঘ:মধু মঙ্গল বিশ্বাস)
এই নিরুচ্চার
মেঘ আবহমান কালের পিয়াসী সওগাত। কালিদাসের কালেও যক্ষের পিয়াস নিবৃত্তির বাহন
হয়ে কাব্য রচনার প্রেরণা যুগিয়েছে। মেঘের সঙ্গে কখনো চাঁদও এসেছে। বুকের ভেতর
শোনা গেছে অযুত অশ্বের ছটফটানি। ‘বাৎসায়নই হেঁটে গেছেন পাহাড় পেরিয়ে’। সেই নিরন্তর
যুবক-কন্ঠ অতৃপ্তির মেদুর ঘ্রাণে সত্তার চিরন্তন পিয়াসকেই রূপ দেয় যুগে যুগে—
“I bring fresh showers
for the thirsting flowers,
from the seas and
streams;
I bear light shade for
the leaves when laid
In their noon-day
dreams.”
(The cloud: PB Shelley)
মেঘ বৃষ্টি
দিয়ে পিপাসা দূর করে, কিন্তু
মেঘেরও যে পিপাসা পায়, মেঘও তৃষ্ণার্ত—এরকম
antithesis কবিদের দার্শনিক প্রত্যয়ে সংলগ্ন হয়ে রয়েছে।
সুতরাং আপাত প্রকাশের আড়ালে অপ্রকাশ মাধুর্যে মননের নিগূঢ় তাৎপর্য অনুভবের
একান্ত অভিনিবেশ দাবি করে। যেখানে—
“প্রত্যাশার
বাতাসে নাড়ায় পাতা
আর স্বপ্নের
রঙে সে সবুজ হয়ে
এখনও ঘাসের
মতো নিশ্চেতনায়
সারাদিন জেগে
থাকে”
(অপেক্ষা ও একটি নাম: তৈমুর খান)
জেগে থাকার
মধ্যে দিয়েই অতৃপ্তির অনিবার্যতা ধরা পড়ে। যেখানে সমস্ত ভাষা হারিয়ে যায়।
অনুভূতি স্তব্ধতার ধ্যানে বসে। শিল্প তখন একান্ত আত্মমুখী, বাহির বিমুখ সাধনা।
এই সাধনার ভেতরই অন্ধকার জমা হয়। আর এই অন্ধকারই পোস্টম্যান হয়ে
আমাদের চিঠি বিলি করে। কখনো আমাদের চিঠি নিয়ে যায়—
“আমাদের
পোস্টম্যানগুলির মতো নয় ওরা
যাদের হাত
হতে অবিরাম বিলাসী ভালোবাসার চিঠি আমাদের হারিয়ে যেতে থাকে।”
(হেমন্তের
অরণ্যে আমি পোস্টম্যান: শক্তি চট্টোপাধ্যায়)
ঘরে
ঘরে পৌঁছে যায় চিঠি। প্রদীপ নিভে ধুলোয় মিশে যায়। রামধনু আঁকা মেঘ ভেঙে যায়।
প্রেম বিষাদের হাওয়ায় বাড়তে থাকে। যুগ যুগ ধরে চলতে থাকে প্রেমের এই
ক্রিয়া-বিক্রিয়া। মানুষের থেকে মানুষে ছড়িয়ে যায়। শেলি যা অনুভব করেন, আমরাও তখন তা-ই করি—
“When the lamp is
shattered,
The light in the dust his dead,—
When the cloud is
scattered,
The rainbow’s glory is shed.
When the lute is
broken,
Sweet tones are remembered not;
When the lips have
spoken,
Love accents are soon forgot.”
(The fight of Love).
চণ্ডীদাস যা
লিখলেন, সারাজীবন আজকের প্রেমিকও তাই
পেলেন— “দুঁহু কোরে দুঁহু কাঁদে বিচ্ছেদ ভাবিয়া”। এই বিচ্ছেদই তো কবিতা লেখায় বিশ্বের তাবৎ প্রেমিককে তথা কবিকে। তাঁরা
অতৃপ্তি কুড়িয়ে নেন আর ভিখিরির মতো, পাগলের মতো, তপস্বীর মতো জীবনের পর্ব-পর্বান্তরে পাড়ি দেন। সবাই-ই যেন পূর্ণতার পানে
ধাবিত হতে চান। প্রকৃতি নিসর্গ-বনমর্মরের শূন্যতা কিংবা দিগন্তের নীলেও আশ্রয়
খোঁজেন। রবীন্দ্রনাথ ‘স্ফুলিঙ্গে’র
শাশ্বত বাণীতে তাকেই রূপ দেন—
“কল্লোলমুখর
দিন
ধায় রাত্রি
পানে।
উচ্ছল নির্ঝর
চলে
সিন্ধুর
সন্ধানে।
বসন্তে
অশান্ত ফুল
পেতে চায় ফল।
স্তব্ধ
পূর্ণতার পানে
চলিছে
চঞ্চল।।”
তখনই
অতৃপ্তির ব্যাপক যজ্ঞে দিনের রাত্রি পানে,
নদী-ঝরনার সমুদ্র পানে, ফুলের ফল হবার সাধনায়
ছুটে যেতে দেখি। শূন্যতার চিরন্তন স্তব্ধতাও পূর্ণতা চায়। সুতরাং জীবনও মৃত্যুর
পানে ছোটে। মৃত্যুকে প্রিয়ার মতন ডাকে।
কিন্তু এই অতৃপ্তি যখন থেমে নেই, তার সর্বগ্রাসী বাঁধনে আমাদের বেঁধে রেখেছে,
পৃথিবীর যাত্রী হয়ে আমরা প্রতিনিয়ত তার শিকার—কী প্রেমে, কী প্রাপ্তিতে, কী
ভোগে, কী চরিতার্থতায় এক অনির্বাণ আগুন-উৎসব চলছে। তাতে
আমরা পতঙ্গ হয়ে চারপাশ থেকে উড়ে উড়ে আসছি। নিজেকে ছাই করে দিচ্ছি। নিরুপায় না
পাওয়াকেই তখন পাওয়ার বিকল্পে চালান করে দিয়ে তৃপ্তির সুখদ বার্তায় বলে দিতে
পারছি—
“এই করেছ
ভালো নিঠুর হে,এই করেছ ভালো–
এমনি করে
হৃদয়ে মোর তীব্র দহন জ্বালো।”
নিত্যনতুন
আঘাত আসুক। আঘাত পেয়েও অবিচল থাকতে পারব। যেমন করে অভাবের দিনগুলিতে চুমু খেয়ে
থেকে যেতে পারি। যেমন নিঃসঙ্গ দিন-রাত আকাশের তারা গুনে কাটে। যেমন ঘুরে ঘুরে কথা
বলে একলা রাতের জোনাকি। গরম ভাতে ঘি না পেয়েও আমরা প্রার্থনা করি—
“আমাদের
ঠান্ডা ভাতে লবণের ব্যবস্থা হোক।”
(নুন: জয় গোস্বামী)
তখন চণ্ডীদাস
আবার উঠে এসে বসেন। আমাদের ভাঙা প্রেম জোড়া লাগে। সমাজ-শাসনের চোখ রাঙানি উপেক্ষা
করে আমরা লিখি—
“কলঙ্কী
বলিয়া ডাকে সব
লোকে
তাহাতে নাহিক’ দুখ।
তোমার
লাগিয়া কলঙ্কের হার
গলায় পরিতে সুখ।।”
এই সুখ তো
তৃপ্তিই। এই পৃথিবীর কলুষ বীভৎস রূপ গ্লানি ও ভয়ঙ্করতায় আমাদের তিষ্ঠোতে দেয়নি।
এতোটুকু স্থান নেই শান্তির কিংবা বিশ্রামের। বারবার পলায়নী সত্তা জেগে উঠেছে।
অসুখ, নষ্ট শশা কিংবা পচা চালকুমড়োর
ছাঁচে জীবন ফলেছে। আমাদের সভ্যতার জানালায় এসে দাঁড়িয়েছে উটের গ্রীবার মতো
অন্ধকার। তখন এখানে আর স্বপ্ন বুনে কে বাঁচতে চায়?—যন্ত্রণা,
হাহাকার, রক্তাক্ত পৃথিবীর মূর্খ উচ্ছ্বাস
কিছুই কবিকে বাঁচার আশ্বাস দিতে পারে না। তাই সিদ্ধান্ত নেন—
“ধানসিঁড়ি নদীর কিনারে আমি শুয়ে থাকবো—
পউষের রাতে—
কোনোদিন আর জাগবো না জেনে
কোনোদিন জাগবো না আমি— কোনোদিন জাগবো না আর—”
(অন্ধকার)
জীবনানন্দ
দাশের এই অঙ্গীকার যে শেষ কথা নয় তা সকলেরই জানা। জীবনের তিক্ত হলাহল পান করে
অতৃপ্তির বেদনায় কবি ক্লান্ত, বিষণ্ণ। আমরাও জানি বিষাদের নিরন্তর সমুদ্র আমাদের সামনে প্রবাহিত হয়েছে,
ঠিক তার পাশাপাশি আশাদ্বীপও। তা দারুচিনির না হোক, ইন্দ্রের প্রমোদ উদ্যান না হোক,— একটু নিঃশ্বাস
ফেলার ঠাঁই অবশ্যই। তা কাঁটাবন হলেও তৃপ্তির স্বর্গের মতন। আমাদের
ক্লান্ত-ঘর্মাক্ত শরীরের নুন চেটেও জীবনের ঘ্রাণ পাই। জীবনানন্দ দাশ সেই
মুহূর্তটিকেও লেখেন—
“সকল
ভুলের মাঝে যায় নাই কেউ ভুলে-চুকে
হে প্রেম
তোমারে!—মৃতেরা আবার জাগিয়াছে!—
যে ব্যথা
মুছিতে এসে পৃথিবীর মানুষের মুখে
আরো ব্যথা—বিহ্বলতা তুমি এসে দিয়ে গেলে তারে,—
ওগো প্রেম,—সেইসব ভুলে গিয়ে কে ঘুমাতে পারে!”
(প্রেম)
সুতরাং প্রেম
যখন আমরা ভুলতে পারি না, তখন
পিপাসার গান আমাদের গাইতেই হয়। আর সেই গান বেয়েই আমরা জীবনের সিঁড়ি ডিঙোই।
আমাদের গোধূলিলগ্ন সমাগত হলেও বৃন্দাবনকে তাচ্ছিল্য করতে পারি না। তখন আবার শেলিকে
মনে পড়ে। কিটসের ব্যর্থ প্রেমের প্রদীপ যাঁর সামনে নিভে গেছে। যে কবি দেখেছেন
সৌন্দর্যের মৃত্যু। সেই কবিই যথার্থ হাহাকার আর অতৃপ্তিকে অনুভব করেই বলতে
পেরেছিলেন:
“We look before and
after,
And pine for what is
not:
Our sincerest laughter
With some pain is
fraught;
Our sweetest songs are
those that tell
Of saddest thought.”
(To A Skylark)
সুতরাং
দুঃখের উৎস থেকেই আসে আনন্দের গান। যে অতৃপ্তি মৃত্যু লেখে, সেই অতৃপ্তি স্বপ্নও লেখে। যে অতৃপ্তি বিচ্ছেদ
লেখে, সেই অতৃপ্তি মিলনও লেখে। যে অতৃপ্তি পরাজয় লেখে,
সেই অতৃপ্তি বিজয়ও লেখে। দিন যেমন রাতের পাশাপাশি হাঁটে, শূন্য আর পূর্ণও তেমনি পাশাপাশি বিরাজ করে। কেউ কাউকে ছুঁতে পারে না। সেই
কারণে দিনেও রাতের বাঁশি বাজে। পূর্ণতায়ও শূন্যের ভজন শোনা যায়।এ এক বৈরাগ্যের
লীলা—আমাদের সৃষ্টিসত্তাকে লীলাময় করে তোলে। পূর্ণ কলসি
কখনোই বাজে না। নিরেট মানুষ বোধশূন্য। কখনোই লেখে না। মনন-ই প্রকৃত স্রষ্টাকে
চিনিয়ে দেয়। তাঁর জগৎ-জীবনের ওপর ভাবনার নিরন্তর পর্যায় চলে। দিনযাপনের গ্লানি
তাকে সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করতে পারে না। অনাহারক্লিষ্ট হলেও তিনি যে দার্শনিকতায়
আত্মধূপের মতো নিজস্ব অন্বেষণে ব্যাপৃত থাকেন তা তাঁর কোনও না কোনও সৃষ্টিতে ধরা
পড়ে।
মৃত্যুর দিন গুনতে গুনতে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে কবি
ভাস্কর চক্রবর্তী জীবনকে যেভাবে দেখেছিলেন—তা ছিল একজন দার্শনিকেরই প্রকৃত নির্মোহ দৃষ্টি। পার্থিব আসক্তি সে সময়
না থাকারই কথা। ছিলও না। কিন্তু কোনও কালেই কি ছিল? সারাজীবন
কবিতাগত প্রাণ উৎসর্গ করেছেন আত্মমগ্ন যাত্রায়। যে যাত্রায় অবসাদই তাঁর সঙ্গী।
মৃত্যুকে জন্মের পাশাপাশি হেঁটে যেতে দেখেছেন। বেঁচে থাকার প্রতিক্ষণে মৃত্যু চেনা
হয়ে গেছে। তবু চলেছে সিগারেট ধরানো। প্রেম ও মৃত্যু দুই-ই তাঁর কাছে সমান। শীতকাল
এলে তিনি দীর্ঘ ঘুম দিতে চান। সুসংবাদকে আহবান করেন। ‘নীলরঙের
গ্রহ’ কাব্যে লেখেন—
“মৃত্যুর
কথা ভাবতে ভাবতেও আমি বেঁচে আছি বটে।
কোথায়
বেটোফেনের চিঠিপত্র
আমি আরেকবার
ওইসব পড়ে দেখতে চাই।
আমার পুরোনো
জীবন আমি
ভাঁজ করে
রেখে দিতে চাই সুটকেসে।
ভাবতেই পারি
না
কী শান্ত আর
সুন্দর আর পবিত্র থাকি
আমি যখন
তোমার কাছে যাই।”
(হাতবোমা নয়)
এই বেঁচে
থাকা অতৃপ্তিকে ছাপিয়ে গেছে। নবান্নের ক্ষেতে কাক হয়ে ফিরে আসার সান্ত্বনা নেই।
কিংবা জ্যোৎস্নার প্রান্তরে ঘোড়া হয়ে ঘাস খাওয়ার। রাত্রির অন্ধকারে শেয়াল হয়ে
বেরিয়ে পড়ারও চিত্রকল্প সৃষ্টি হয়নি। নিজেরই লাশ বয়ে আয়ুটুকুর সীমানায়
মৃত্যুর কাঁটাতারে বন্দী হয়ে যথাসম্ভব নিজের সঙ্গেই জীবনযাপন। একমাত্র ভাস্কর
চক্রবর্তীই পেরেছিলেন অতৃপ্তি অপূর্ণতার কফিনে ঢাকা জীবনের এই স্বাদ গভীর-গভীরতর
করে তুলতে। আমরা জানি—
“আজো
শুনি আগমনী গাহিছে সানাই,
ও যেন
কাঁদিছে শুধু—নাই,
কিছু নাই।”
(দারিদ্র্য: নজরুল ইসলাম)
কিন্তু এই ‘নাই’-এর ভেতরেই ‘আছে’-এর সাধনা। বিদ্রোহ, প্রতিবাদ,
শেষে প্রত্যাশা—
“প্রতিজ্ঞা
কঠিন হাতে
একে একে তারা
সব
চোখের
শোকাশ্রু মুছে ভাবে—
ঘরে ঘরে
নবান্ন পাঠাবে।”
(স্বাগত: সুভাষ মুখোপাধ্যায়)
কবিতা
অতৃপ্তি আর তৃপ্তির মাঝখানে দাঁড়িয়েই কবিদের ইঙ্গিত দেয়। সব সৃষ্টিই অপূর্ণ থেকে
পূর্ণের দিকে, অসম্পূর্ণ
থেকে সম্পূর্ণের দিকে ধাবিত হয়। সেই ক্রিয়াটি কিন্তু কখনোই সফলতায় পৌঁছায় না।
কবিতা সেই উৎসের ধারাটিতেই প্রবহমান একটি শিল্প। আমার কাছে তারই রহস্য চিরকাল
অতৃপ্তি এবং তৃপ্তির সেতুতে নির্মাণ চায়।
তখন কবিতার হাতেই সমূহ প্রলয় রাখতে হয়।
0 মন্তব্যসমূহ