পিয়াংকী : কবিতা

 

গুচ্ছ কবিতা

অজগর ও অন্যান্য 

 

১

এই যে এত নির্জনতা, জেঁকে বসেছে ? নাকি নকল ছোবল কাটিয়ে উঠে গেছ পৃথিবীর উত্তর মেরুপ্রান্তে। দু-দশটা কালো পিঁপড়ে ঘোরাফেরা করে বলে বুঝি,এখনো মিইয়ে যায়নি ধামার মুড়ি। অথবা দিয়ে যে বাক্য শুরু করছি, সেখানে এই মুহূর্তেও লেগে আছে প্রাচীন কথোপকথন। বিহানবেলা পার করে যারা এপারের ঘাটে বসে আছে, ওদের গলায় যেন জ্যান্ত মহাদেব। কড়ির মালা। গন্তব্যে ঈগলের চোখ।

 

শুনেছি ওনারা স্বপ্ন দেখেন, শরীরবিহীন একটি হাত ক্রমশ খেয়ে নিচ্ছে... 

 

২

সাপের লেজ খসে গিয়েছে বলেই খালের পাড়ে অজস্র বক। ওড়া আর ভাসার মাঝবরাবর যেটুকু জন্ম তাকে জেলিফিশ বলেই ভুল করেছি বারবার। বক আসছে। সাথে লম্বা ঠোঁট।  এখন প্রশ্ন, সাপ কিসের পরিমার্জিত রূপ ?  যতজনকে জিজ্ঞেস করেছি সকলেই বিনামূল্যে আমায় দেখিয়ে দিয়েছে শ্রাবণসংক্রান্তি। মা-মনসা ধুনোর গন্ধ আর কাঁটাবন দেখে  অবসন্ন হবার পর স্বপ্নে আসে বহু প্রতীক্ষিত পদ্মবন। 

 

নিকটজনেরা জানে পদ্ম আমার অবসেশন। 

 

৩

পূর্বের মতো সূর্য ওঠা । অতিক্রান্ত দূরত্ব মেপে দাঁড়িয়েছি  সম্বলটুকুর পাশে। সম্বল বলতে নিজস্ব ফেরীঘাট। ঘাসের ওপর ছড়িয়ে থাকা খুচরো নৌকা। এখানে শেয়াল ডাকা জঙ্গলে গোপনীয় চুম্বন । এই আত্মপথ একান্তই স্ব-উপার্জন। কলমিশাক হয়ে সজনেফুল -- রহস্য। এই গণ্ডিতে অংক নেই, নেই কবিতাও। দারিদ্র্যই এ'পথে বসন্ত। ধান পেকে এল।এবার  কুলোয় চাল চেলে একদিন সরে যাব ছাতিমের অন্ধকারে। নক্ষত্র পতনের মতো জরুরি বিষয় লিখে রাখবে কেউ। কামিনীর গন্ধে সাপ এলে বাড়িয়ে দেব খোলা পিঠ।

 

গন্ধ শুঁকে যেভাবে ঝাঁপাও তাতে তোমাকেই অজগর মনে হয়েছে বারবার... 

 

পিয়াংকী