সবে মাত্র রঙের উৎসব শেষ হয়েছে। কেউ ভিতরের রঙে মেতেছে কেউ বাইরের রঙে মাতোয়ারা। সমস্ত উৎসবের একটা রঙ থাকে। ধরতাই থাকে। হক থকে। হক আর ধরতাই কতটা নিয়মতান্ত্রিকতা মেনে করা হয় স্বয়ং ব্রহ্মাও জানেন না। রোদ তো সাত রঙের সমাহার। যৌনতা বনাম অশ্লীলতাও দুই রঙ। এরা কি উভয়ের সতিন? কে কাকে সর্বজন সমক্ষে মান্যতা দেবে কে জানে। তবুও সবার রঙে রঙ মিলানোর খেলা চলতেই থাকে। সবাই নিজ নিজ কেতায় রঙ মেলায়। সে অন্যের সাথে মিলল কি মিলল না সবাই কি আত্মজিজ্ঞাসায় ব্যাপ্ত হয়। তা আর হল কই। অশ্লীল রঙা চাঁদ তাহলে এমন বাজার জমিয়ে আসর মাত করতো না। মেয়েরা খোলা পিঠে যেভাবে চাঁদ আর রবিকে নিয়ে টানা হ্যাঁচড়া শুরু করেছে তাতে যুক্ত হয় সর্ব রঙের বিদ্যেধরী রঙ রাজনীতি। কে কাকে থামায়। আর রবিকে কলুষিত করা এত সহজ! এত গেল গেল রব! তাদের পিছনে কি অন্যকিছু কাজ করছেনা! দেবা ন জানন্তি। তবু আমরা রসিককুল। এই ভেবে আত্মশ্লাঘার শেষ নেই। কে জানে সত্যি সংস্কৃতি আর মিথ্যে সংস্কৃতি আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে? আমরা লেখক পাঠক সহমর্মীরা দোলাচলে। আর যারা অভিভাবক তাদের হয়েছে মস্ত মাথা ব্যাথা। এই রঙের ঘূর্নীতে কে যে কোথায় ছিটকোবে আর আমাদের সাহিত্যের প্রসূতি সদনে কী যে দোলা লাগবে কে জানে।
রবীন্দ্রনাথের
গানের আগে কোনো গালি বসালে সেটি আদৌ রবীন্দ্রনাথকে ছোট করা হয় কিনা এই বিতর্কে যখন
বাঙালি মেতে উঠেছে তখন নোভেল করোনা ভাইরাস আতঙ্কে সারা পৃথিবী কাঁপছে । সারা বিশ্ব
জুড়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এটাকে অতিমারী বা প্যান্ডেমিক ঘোষণা করেছে। কিছু সাবধানতার জন্য নির্দেশিকা
জারি হয়েছে । মাস্ক কেনার জন্য লম্বা লাইন। কেউ কেউ আবার পোশাকের সঙ্গে রঙ মিলিয়ে
পরতে হবে বলে বিভিন্ন রঙের মাস্ক কিনছেন।
ওদিকে শেয়ার বাজারে ধস। আমাদের এখন আর এনআরসি/
সিএএ এইসব বিশেষ ভাবাচ্ছে না। মৃত্যুর ভয় এমনই একটা ব্যাপার শুধু সমগ্র দেশকে নয়
সমগ্র বিশ্বকে এক করে ফেলতে পারে।
করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী সরকারি ও
বেসরকারি হাসপাতালগুলির সঙ্গে বৈঠক করেছেন, রেশনে চাল ফ্রী করে
দিচ্ছেন। দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন ১৪ ঘণ্টার জনতা-কার্ফ্যু ঘোষণা করেছেন, তখন আমাদের আমলা পুত্র ও ব্যবসায়ী পুত্ররা বিদেশ থেকে করোনা নিয়ে
এসে কোয়ারান্টিনে না থেকে দিব্য পাব্লিক
প্লেসে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ কেউ আবার বিদেশ ভ্রমনের তথ্য গোপন করছেন। আমরা আর কবে দায়িত্বশীল হবো? অন্যদিকে এই
গরীব ঘন বসতিপূর্ণ দেশে স্যানিটাইজার ব্যবহার বা আইসোলেশানের কথা বললে তা মেনে চলা
কতটা সম্ভব সেটাও আমাদের ভাবাচ্ছে। জনতা-কার্ফ্যুর
মধ্যেই ঘোষিত হল লোকাল ট্রেন ও মেট্রো পরিষেবা আগামী ৩১শে মার্চ পর্যন্ত বন্ধ
থাকবে। নোবেল করোনা ভাইরাসের কমিউনিটি ট্রান্সমিশান রুখতে আগামী দিনগুলো নিজেদের গৃহবন্দি করতেই হবে। আতঙ্ক
নয় সচেতনাতাই এই সঙ্কট থেকে আমাদের মুক্ত করতে পারে। আসুন আমরা একটু বিজ্ঞান মনস্ক
হই।
এই মানব সভ্যতার সঙ্কট, এই বিশ্ব-মহামারী,
লকডাউন অবস্থা আমাদের এই প্রজন্মের কাছে প্রথম। এরকম সময়েই "এবং সইকথা" ওয়েবজিনের পঞ্চম সংখ্যাটি প্রকাশিত হল। দেখতে দেখতে এক
বছর পারও করে ফেললাম আমরা। এটি দ্বিতীয় বর্ষের প্রথম সংখ্যা। এই মুহূর্তে গুগল
জানাচ্ছে আমাদের এই ওয়েবজিনের পৃষ্ঠা দর্শন প্রায় উনিশ হাজার। আশা করি পাঠকের হাতে এখন পড়ার জন্য একটু বেশিই সময় রয়েছে। লেখক ও পাঠক
সকলকেই জানাই আমাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা। আপনারা পাশে থেকে এইভাবে উৎসাহিত করলে আমরা
এই কাজটি আগামী দিনেও সুষ্ঠু ভাবে করে যেতে পারব।
প্রচ্ছদ ঋণঃ গুগল
শীলা বিশ্বাস
সম্পাদক
শীলা বিশ্বাস
যোগাযোগ
ebongsoikotha@gmail.com
যোগাযোগ
ebongsoikotha@gmail.com