চিয়ার্স
ডিকেন্টারে হাত বোলাতেই ভিজে গেল। ফোঁটা
ফোঁটা কান্না। উদাস চোখ চলে যায় জানালা পেরিয়ে। আসছে শিরীষের ঝিরঝিরে হাওয়া। অধীর
আগ্রহে তাকায় নদীর দিকে। অন্ধকারে শুধু একফালি চাঁদ ভেসে আছে জলে। বড়ও বিষণ্ণ, বড়ও
মায়াবী! অতীত ধেয়ে আসার আগেই মাথা ঝাঁকিয়ে ব্যালকনিতে এসে দাঁড়ায় অচিন্ত্য। নদীর
ওপাশে ধোঁয়া উড়ছে। কোন লাশ পোড়ার অজানা গন্ধ ভেসে আসতেই মনে এসে যায় চেনা মুখের
মিছিল। ক্রমশ দৃশ্যমান শৈশব যৌবন।
ডিকেন্টারে নিজের মুখ দেখার
চেষ্টা করে অচিন্ত্য। একরাশ উদ্গত সিগারেটের ধোঁয়ার মাঝে নিজের ঝাপসা মুখ হারিয়ে
যেতে থাকে স্মৃতির বেড়াজালে। খেলার মাঠ বন্ধু দেশের বাড়ি বাবা মা , সব দূরে আরও
দূরে বিক্ষিপ্ত কলেবরে উদ্ভাসিত। এক এক খোপে এক এক জীবন।
এত হিসেব কষা জীবন কোথায় এসে
থামল! সেই তো বিশাল ফ্ল্যাটে একার জীবন! ডিকেন্টার হাতে তুলে ভাবতে থাকে সঙ্গিনীর
কথা। কী ভীষণ উজ্জ্বল সে সব স্মৃতি! একরাশ অভিমানভরা সে মুখ চোখের সামনে আসতেই হাত
ফসকে পড়ে যায় সুদৃশ্য ডিকেন্টার।
একাকী চিয়ার্স কেঁদে মরে
জীবন উপান্তে।
0 মন্তব্যসমূহ