হাইফেন
অগত্যা অবিভক্ত প্রাচীন খড়ি মাটির বুকে সূক্ষ ফাঁক রয়ে যায়
মধ্যাহ্ন অভিসারে খুলে যায় যাচ্ছে পাটে পাটে আবছায়ার সমস্ত
দুয়ার
বর্ষণ বেলার নিভন্ত বিকেলের আলোয় ভাসে অর্গল মুক্ত হলুদ
চক্ররীতির নির্ভুল ছন্দ
শান্ত জলপরির বুকে পাঁপড়ি মেলে নিস্তব্ধতার ভিতরের অন্ধকারে
ঝরে যায় আবহমানের অনুচ্ছাস
যতদূর দেখি এখন শীতের ভাবময় প্রান্তরের মাঝে অবিরত উড়ছে
খাঁ খাঁ ধূসর তপ্ত হাওয়ায়
শিরশিরে শাশ্বত ছায়া রঙের ধুলোপ্রতিমার আঁচল
আত্মপক্ষে ছোট হয়ে আসে অবক্ষয়ের শান্ত ধ্বনির স্ফুলিঙ্গ
ক্রমে স্বর ভাঙছে বনমাটি পৃথিবীর
অতঃপর স্বদেশের সবুজ ক্লান্তিতে নিরন্তর ভেজে মাটি,
চলকে ওঠে শ্বেতচন্দনের তেলে ছন্দহীন শহরতলির সেসব হারানো
মানুষের সাম্যগান
বনের ওধারে বেগুনি জোছনার স্বরলিপি ছুঁয়ে চলে গেছে ঘাসের
শিকড় বোধের অতলে
রক্ত ,শ্রম,আর্তনাদে
জড়িয়ে ওঠে চোরা ঘুমের তপ্ত শঙ্খলতা
মেঘ ও কুয়াশার ক্ষুধার্ত আমন্ত্রণে বুকের কাছে সরে আসে
জীবনে থমকে থাকা বাকি বছরগুলো
নিরণ্ন মানুষের অস্থির উপরে ঝরে পড়ে ধীরে হেমন্তের নীল
শিশির
ক্রমে পুনরাবৃত্ত হচ্ছে নিবিড় আশ্রয়ের লাল কুহেলি দপদপে
শিখার শীর্ষে অদৃশ্য অতীত ছায়াছবি
সঘন নিদ্রার ফাঁক গলে ঝিঁঝিঁর শব্দহীন আকাশমেঘ জমে ওঠে
পুরু সাদা কাচের দেওয়াল জুড়ে প্রত্যাবর্তনে একটা বিরতিহীন অবসান শেষে দু'পায়ের
নিচের মাটি দেখি পাখি হয়ে উড়ে যায় গভীর রাতে সময়ের অগোচরে খসে যায় পাতা আবহের ভারী
কালো পর্দার পিছনে স্বপ্নপাঁজরে চাপা রেখে চলে যায় খুলে রেখে কেউ টুকরো ভাঙা আয়নার
রুপোলি মুকুট
অতলে মিশে যেতে যেতে চিরহরিৎ বনে হারিয়ে গেছে ধ্বনিবিহীন
কতো সন্ধ্যাবেলা
ঘুমের নিচে কম্পিত উচ্চারণ এ ডুবে আছি একলা শোকের
নিঃশ্বাসে
ফিরে দেখা নিজের সত্তার পাতলা ছায়া পড়ে জলে
পথে নামা গোধূলির ভিতরে বহু পথ হেঁটে ছুঁতে পারেনি এখনও
নিষ্পত্র জন্মের
শেষপ্রান্তে সমর্পিত সেই হাত
অদূরে ভাসছে ভেসে যায়
ভাসছে ভেসে যায়
সায়াহ্নের ঢেউয়ে ঢেউয়ে
অসম্পূর্ণ জীবন ।।