৪৩.
স্ফুলিঙ্গের ঝড়ে মাত্র একবার ফেঁপে উঠেছিল বেড়ালের নখ
যখন চাকা ঘুরিয়ে বহুদূরের কেউ ছুরিতে শান দিচ্ছে
নিরাময়হীন বেড়াল খুব পরিচ্ছন্ন বাদক। থাবার পিয়ানো
থেকে লেজে তার যৌনবিস্তার
রাত যাঁতা খুলে, ঘণ্টা ও ঘানি, কী যেন আছড়ে দিচ্ছে
ডুবোনগরীর ঝিলে
এই গ্রহ, এই জল, দেশের গলিত সব আলেয়াসরল
বেড়াল অবর্ণনীয় শোকের সুদূর
ধাতুর পুনরাবৃত্তে পড়ে আধখাওয়া চাঁদের আরক
৪৪.
তার সুরের কাঠামো চিরুনির ফাঁকে ফাঁকে হাড়ের বিদ্যুৎ
রাত্রির চুল খুলে আঁচড়ে দিচ্ছে বেড়ালের লক্ষবছরের তাপ
চওড়া হাসিও এক ক্রূর পরিতাপ। নিশিনাট্যের ভাঁড়
বেড়ালের থাবার আয়নায় নষ্টঅসীম এই গ্রহের সমাধি
রাত্রির পমেটম থেকে কোটিবছরের খিদে ধোঁয়ার প্রলাপ
৪৫.
জলশালিক ফিরলেই লোহার ঠান্ডা বল ঝিল থেকে মুণ্ড তুলবে
ক'লক্ষবছর পর সূর্যাস্ত হয়তো কোনো জাদুঝিল্লির দেবদূত
জাতিস্মর চেলো তুলে বেড়াল বাজাচ্ছে ফের মাংসের সুর
হয়তো বেড়ালই বাজাবে তার ঘিলুর অষ্টমতম কোণে
৪৯.
লাশের দু'টুকরো দুই ভিন্নমাত্রায় শীতকে বোঝাচ্ছে লাল ঘুম
চাকার দূরের ঝমঝম হয়তো বৃষ্টির ফুরোনো টকিজ
হাসির খুল্লাম। নখে চেরা গানের সবুজ
পাতালনৌকোর টঙে মুণ্ড হাসছে টানা লোহার জেল্লায়
বরফ হাসছে। কুঠুরির আনুনাসিক অব্দি সুরের আফিম
টিলার বর্জ্যে বেড়ালের হাসিও যেন খুনের অপেরা
৫০.
অসম্পূর্ণ আর গোল, কেউ নয়, বন্দুকের গলে যাওয়া স্মৃতি
নলের ভগ্নাংশ কাঁধে বেড়াল ঢুকছে আজ পুঁথির সুড়ঙ্গে
চৌকো চাওয়ার পথ চৌকো মুনিয়ার। প্রেত আলো মাটাম ফেলছে
ফুরোনো পৃষ্ঠার গান ফসফরাসের। গড়ানো বালির
জলের বাংলা গোলাপি দেখায় তার যোনির কটাক্ষে
গোলার আর অসম্পূর্ণ কোনো বারুদের দ্বীপ
তামার পোশাকে এসে লন্ঠন তুলছে
মাংসের সূর্যাস্তে দুই থাবার আর্তি দুই কোকিলের রেণু
গোল আর অনিঃশেষ গলে যাওয়া করাতকলের পাশে
ছোট্ট শেফালি
৫১.
সাড়ে চুয়াল্লিশ হাত এই যাওয়া অবিকল ঘোড়ার পায়ের দূর
থাবার সমীক্ষা আজ অস্তমিত তীরের দাবায়
অসম্ভব কালো কোনো গানের দরজা কারও তালুর খাঁচায়
নদীর বেগুনি সুতো টানে ক্ষীণ ভাটিয়ালি
সাড়ে চুয়াল্লিশ ক্রোশ এই জানলা ঘুরছে, ঘরেরই ক্লাউন
কুলুঙ্গির শীতে বোজা গেরস্থালির শ্বাস মোমের অর্কিড
ঘরের মেঘলা বন। বেড়ালও ভাসছে থাবার শেওলা