তিনটি কবিতা
বিরহ
মা দেখেছে তেচোখা মাছের চোখ থেকে তেল ঝরতে
সেই মাছ শিউলিবৃত্তে আঁচল পেতে শুইয়ে দেয়
একরত্তি মেয়ে
বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা গাছ-জন্ম নিরন্তর ঘানি টানে
ফোঁটা ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ে মাটির দেহে
তেল ও জলের স্বভাব ভিন্নধর্মী ; মায়ের চোখে চোখ রেখে
কেউই কথা বলতে পারেনি -- না মাটি না গাছ
মায়েরা যেমন দুঃখ দিতে পারে তেমন সইতেও পারে
পার্থক্য শুধু একটাই...বিয়ের প্রথম একমাস
একুরিয়ামের রঙিন মাছের দিকে চেয়েছিল বিয়ের ছবি
বাকি দিন গাছ পুঁততে এখন বৃক্ষছায়া
প্রেমিকার চোখ থেকে তাই ঘন ঘন শিশির ঝরে
প্রেম দীর্ঘতর হলে আমি মায়ের কোলে মুখ লুকাই
ফটোফ্রেম
ঘরে বসে থাকা মানুষের মুখে ছাপ ফেলে
পুরনো তৈলচিত্র
একপাশে টিকটিকি অন্যদিকে মাকড়সা
জাল বিস্তার করে মরমি মুখের ফাটল
ছায়ার সাথে লুকোচুরি খেলতে নৈঃশব্দ্য নেমে আসে
প্রশ্ন করে---
আমার মতো ঐ ফ্রেমে আবার কাউকে বসাবে বুঝি ?
মুহুর্তে সূর্যাস্তের আলোয় সমগ্র সংসার ফটোফ্রেমে
বন্দী হয়ে রইল
মেয়ে কাক
অন্ধ সময় বৌদ্ধগুহা ভেদ করে
ভেঙ্গে ফেলে মানবিক দেওয়াল
মাটির শব্দে চাপা পড়ে প্রতিমার চোখ
ঝড়ের বাসায় পালক উড়ে আসে
রঙের প্রলেপে ডানা ভারী হয়
সময়ের সাথে মায়ায় আবিষ্ট সূর্যদেব
রাত্রি ভেবে শিস দেয় একে অপরকে
মায়া কাক ও মেয়ে কাক
অরিন্দম প্রধান