গুচ্ছকবিতা
১)কাকে দেব কাকে দেব
কবিতার নামে জ্বর তপ্ত অক্ষরদল?
কাকে দেব কাকে দেব
নরকের যত গ্লানি ক্লেদ হলাহল?
কাকে দেব কাকে দেব
ভালোবাসা জীবনের সম্বল?
তুমি কি নেবে, পাঠক?
গরীব ও দাম্ভিক কবিতা নামের যা তা?
না নিলেও ক্ষতি নেই , ফিনিক্স এই কবিতার খাতা –
মহাকালের হাত ধরে
আবার বসবে এসে ধুলোর চাদরে
২) আমাকে ছুঁড়ে ফেলছ তুমি , দাঁড় করাচ্ছ রাস্তায়
আমিও সাধি না তেমন
একাই বয়ে যাচ্ছি জলের মতো, কিছুতেই আটকাতে পারবে না
বাঁধ দিলেও বাঁধ ভাঙব , ভাসিয়ে দেব গাঁ-গঞ্জ।
আমার চোখে খুঁচিয়েছ লোহার শিক, চোর ভেবেছিলে কি?
আমি তো তোমাদের দেখাতে যাইনি গার্হস্থ্য সিন্দুকের মাটি বা সোনা? তবু
কবিতা আর স্বভাব বিষয়ে ঠাট্টায় ঠাট্টায় গায়ে ঢেলে দিয়েছ তপ্ত মোবিল –
তারপর হিড়হিড় করে ফেলে দিয়েছ রাস্তায়
একা দাঁড়িয়ে আছি গাছের মতো
দাঁড়িয়ে আছি পাহাড়ের মতো – একা,
বয়ে চলেছি নদীর মতো
জানি, গাছ পাহাড় নদীর মতো যখন একা
আমাকে তো গাছ পাহাড় নদীর মতোই হতে হবে !
৩) শিলামুখ গুটিয়ে নিলে উৎস বাঁচে কীকরে?
পাথর খণ্ড ফেলে রাখো উঠোনের একপাশে ;
অতিথি পাথরখন্ডকে বসিয়ে রাখো – তাকে ভাত জল দিও না।
প্রাঙ্গনের এক পাশে যে শিব মন্দির,
বেমালুম ভুলে যাও তার কথা – দেখো তার জীর্নতার অসুখ সারাতে পারবে না
উপেক্ষায় পাথরও ক্ষয়ে যায়, আমি তো মানুষ !
৪) মেঘ করলে ময়ূর পেখম মেলে দেয়
পেখমে মেঘ ঘনালে
চিলের নিঃসঙ্গ ডানায় ছায়া ঘন হয় , খোয়াইএর সবুজের গায়ে বিকেলের উনুনের ধোঁয়া
চোখের জলের ভেতর দিয়ে যেমন দেখা যায় সেভাবেই
দূর দিগন্তে তাকালে
বাজে মালকোশ – চৌরাশিয়ায়
শুধু তোমার নাম – তোমারই নাম
৫) শব্দদের পুনর্নির্মাণ হয়।রাতের আঁত ছিঁড়ে যে শুধু বাতাস হাতরাচ্ছে
তার নাম হোক হরিষে বিষাদ ।
নিপাট সংসার কেচে পাট করে রাখে যে , সে হলো
তোমার লৌহকপাট।
একপেট খিদের ভেতর যে বাচ্চাটি চুপচাপ হেঁটে যাচ্ছে সে আসলে
ভিসুভিয়াস চেপে উড়ে যাচ্ছে
তোমার মুখশুদ্ধির দরজার বাইরে
৬) প্রতিদিন প্রতীক্ষা ফুটত সকালে
জানলায় সেই কচি আলোয় উড়ন্ত ধুলোপাখিরা
তোমার গাছপ্রেম ছুঁয়ে এসে এখানে হাতের দাঁড়ে দোল খেতো
বারান্দায় উথলে পড়ত এ বাড়ির গাছেদের ঝাড়বাতি
ঘুমচোখ সম্পূর্ণ নিষিক্ত হলে দেখি চরাচর জুড়ে
তুমিই ফুটে আছো
0 মন্তব্যসমূহ