কালবেলা
আজও ওরা দলবেঁধে এসেছে। নিজেদের ভাষায় কথা চালাচালি করছে। করোনাকালীন বন্দীজীবনের বিষণ্ণতা ধুয়ে যাচ্ছে ওদের কলকাকলিতে। সত্যি একদঙ্গল পাখিই কেমন আনন্দের বার্তাবহ হয়ে
উঠেছে এই বিপন্ন সময়ে! যেন বেঁচেবর্তে থাকবার আনন্দরস পরিবেশন করে সবাইকে তরতাজা
করে তুলছে! রাই একা নয় ওদের বাড়ির আর আশপাশের বাড়ির লোকজন সবাই খুশি হয়ে উঠেছে বেশ
বোঝা যায়। মৃত্যুভয়ে কাতর, সন্দিগ্ধ, উদ্বিগ্ন ভীত মানুষক’টি ইদানিং যেন একটু
সাহসী হয়ে উঠেছে। জানালা খুলে রাখছে, জানালায় দাঁড়িয়ে বা ছাদে একটু আধটু কথা
হচ্ছে। আলোচনায় করোনা বা মৃতমানুষের তালিকা স্থান পাচ্ছেনা, প্রাণবন্ত পাখিগুলোকে
নিয়েই কথাবার্তা চলে।
টিটউ টিটউ সেইই পুরনো আর চেনা মিঠে ডাক, দোয়েল। তারসঙ্গে একদঙ্গল টিয়েপাখির ডাক … কতদিন
পরে রাইয়ের কানে মধু ঢেলে দিয়েছিল! প্রায় সপ্তাতিনেক আগে এক
ভোরে তার শ্রবণেন্দ্রিয় হঠাৎ সচকিত হল; মিঠেডাকের ম্যাজিকে
অনেকদিন পর শরীর আর মস্তিষ্কের পরতে পরতে জমে থাকা মরচের স্তূপ সরিয়ে একটা
ভালোলাগার তরঙ্গ ছড়িয়ে যেতে লাগলো। অভিশপ্ত এই করোনাকালে সবই যখন ধোঁয়াটে ধূসর তখন
পাখিদের মিঠে বোল কেমন ওষধির মতো কাজ করেছিল! রাইয়ের মনে হচ্ছিল, ‘আজই হঠাৎ করে
পাখিগুলো ডেকে উঠল নাকি আমিই বধির ছিলাম! এই রোগে স্বাদ গন্ধ চলে যায় জানা আছে
কিন্তু মানুষ বধির হয়েও যায় কিনা চিকিৎসকরা কী সে বিষয়ে কিছু বলেছেন?
দোতলার দক্ষিণের ঘরটাই রাইয়ের। বিয়ের আগেও
এ ঘরেই থাকত সে। দেওয়ালের ওধারে বিশ্বাসদের ছোট একটুকরো জমিতে হাত পা ছড়িয়ে একটা
বেশ ঝাপড়া কদমগাছ আছে। আরও অল্প কিছু গাছপালা আর তার পুবে মুন্ডহীন কবন্ধের মতো একটা
নারকেল গাছের মোটাসোটা কান্ড দাঁড়িয়ে, ওপরের দিকটা সামান্য হেলানো। বছর দুয়েক আগে
বৈশাখের এক বিকেলে ঝড় উঠল, জানালার কাচে চোখ লাগিয়ে রাই সে তান্ডব দেখছিল। আর ওর
চোখের সামনেই ডালপাতাসুদ্ধ ওই নারকেল
গাছের মাথাটা প্রচন্ড হাওয়ায় দুলতে দুলতে ভেঙ্গেচুরে সটান নিচে পড়ল! মনটা কেমন করে
উঠেছিল রাইয়ের! অমন ফলন্ত গাছের এই পরিণতি?
এখন মুন্ডহীন গাছটার সারাগায়ে বেশ ক’টা
খোদল। কাঠঠোকরা, টিয়ে আরও অন্য পাখিরা খোদলগুলো বানিয়েছে। ওরা ঢোকে-বেরোয়, খুঁটে
খুঁটে কি যেন খায়। ওপরের দিকের খোদলে টিয়েপাখিকে ঢুকতে বেরোতে দেখেছে রাই। পাখিটা
ডিম পেড়েছে ওখানে, তা দেয় দিনরাত। মাঝেমধ্যে বেরোলে তার মা টিয়েটির বাবা স্বামী
পিসি মাসির দল এসে হাজির হয় আর তারস্বরে গল্প করে। রাই ভাবে পাখিগুলো বড্ড বোকা;
বেড়াল, সাপ, চিল কত শত্রু চারধারে! এত চেঁচালে শত্রুপক্ষ সচেতন হয়ে যাবে না? বিশেষ
করে চিলগুলো সারাক্ষণ চক্কর কাটে শহরের আকাশে। ওদের যা ভয়ানক নজর!
চেনা
অচেনা পাখপাখালির কাকলিতে ভোরবেলাটা সুন্দর হয়ে ওঠে সেকি আর জানত না রাই। জানত,
কিন্তু কেমন যেন ভুলতে বসেছিল সব। পাখির ডাক, প্রজাপতির ওড়াউড়ি, বৃষ্টির সুরেলা
ধ্বনি, আকাশের রঙ ; যা কিছু মনকে আলোয় ভরিয়ে দেয় সবই কেমন বেভুল হয়ে যাচ্ছিল তার।
পাখিগুলো সত্যি দুখ-ভুলানিয়া। তাদের প্রতিবেশীদের মুখে হাসি আর কথা ফুটিয়েছে।
ভীতিও খানিক দূর করেছে। আজকাল ছাদে ছাদে গল্প
হচ্ছে। সুলক্ষ্মণ তো বটেই। এই অতিমারির ভয়ে সন্ত্রস্ত মানুষের কপাট আঁটা মনের দরজা
খুলে দিয়েছে পাখিরা!
পাশেরবাড়ির
সুনন্দা বৌদি সেদিন ছাদে দাঁড়িয়ে বলল,’ রাই দেখেছ টিয়ের বাচ্চা হয়েছে, তিনটে
বাচ্চা। খোদল থেকে মুখ বের করে আজকাল।‘ ‘হ্যাঁ গো দেখেছি। খুব সুন্দর! কিন্তু ওদের
মাসি পিসি কাকা কাকি বাবা জ্যাঠা সব মিলে যত গপ্প করে ওদের শত্রুরা না টের পেয়ে
যায়। এ পাড়ায় একটা মস্তান বেড়াল আছে না? সাপের ভয়ও তো আছে, তাইনা বল। ’ ‘মনে হয়না
অতটা উঁচুতে বেড়াল উঠবে।‘ ‘জন্মাতে না জন্মাতেই কেমন মৃত্যুর ফাঁদ চারিধারে।
তারমধ্যেই জন্মাচ্ছে, বড় হচ্ছে, বেঁচেও থাকছে। কি আশ্চর্য তাইনা?’ ‘কিন্তু ওরা
বড্ড আনন্দ দিল বল। আরেকটু বড় হলেই তো উড়ে যাবে রে।‘ ‘আরেকটু বড় হোক তো আগে। গায়ে
আরও পালক গজাক, ডানায় জোর আসুক। তবেইনা যাবে।‘
ঘুম ভাঙার পর চোখ বুজে শুয়ে
থাকত রাই। লকডাউনের পর থেকেই কি এক আনন্দহীন নির্লিপ্তির রোগ বাসা বেঁধেছিল মনে। আবদ্ধ
এই জীবনে তার যেন চোখ খুলতেও অনীহা! ভাবখানা ঘুমিয়ে থাকলেই বা কি আর জেগে থাকলেই বা
কি এমন ক্ষতিবৃদ্ধি এই জগতসংসারের? কার কি যায় আসে?
আর এক্কেবারে মরে গেলেও কোনও সমস্যা নেই কারুর। চারধারে মানুষজন দলে
দলে এতই মরছে যে মৃত্যু নিয়ে আর কোনও রোমান্টিকতা বা অবসেসন, দুঃখ বা আতংকের বোধটাও হারিয়ে যেতে বসেছে! আসলে মনটাই বুঝি জরাগ্রস্ত
হয়ে পড়েছে, যেকোনও ঘটনা বুঝে উঠতেই অনেকটা সময় লেগে যাচ্ছে ! শুকনো পাতার মতো
ঝুরঝুর করে ঝরে পড়ছে মানুষ! মৃত্যু এমন সহজ বিষয়? এ কেমন রোগ? এমন সব এলোমেলো চিন্তায়
একটু একটু করে বিবশ থাকতো মন।
ঠিক দুটো বাড়ির পরে মিমিদের বাড়িতে হানা দিয়ে
গেছে করোনা, নিয়ে গেছে মিমির আটত্রিশ বছর বয়সী বাবাকে। কেউ কিছু বুঝে উঠবার আগেই
এমন ঝট করে ঘটনাটা হল, পাড়াসুদ্ধ সবাই স্তম্ভিত! যা দূরের ছিল তা একেবারে দুয়োরে
এসে দাঁড়িয়েছ! সাত বছরের মিমিকে নিয়ে সোমা বৌদি মুহূর্তেই অকূলপাথারে! সামান্য
সর্দি কাশি জ্বর ছিল শুভেন্দুদার ক’দিন ধরেই। আগের সন্ধ্যেয় হঠাৎ একটু শ্বাসকষ্ট
মাঝরাতে ছোটাছুটি এ্যাম্বুলেন্স হসপিটাল নার্সিংহোম অক্সিজেনের ব্যবস্থা করতে
করতেই দুপুরবেলায় সব শেষ! এমন হৈচৈ করা মিশুকে মানুষটা মুহূর্তে একেবারে নেই হয়ে
গেল! মৃত্যু এমন সহজ!
ভার হয়ে ওঠা সময়! কেমন ভয়ের ছবি চারপাশে! চেনাজানা পরিবেশ,
প্রতিবেশ, মানুষই হঠাৎ এমন চটজলদি অচেনা হয়ে গেছে। সেই পুরনো ঘরবাড়ি, পথ ঘাট,
গাছপালা, মানুষজন আছে বটে কিন্তু সবই যেন অচেনা! সবাই সবাইকে আড়চোখেই দেখছে। কাশি
এলেও মুখে হাতচাপা দিয়ে চট করে ঘরে ঢুকে খুকখুক করে কাশে রাইদের বাড়ির সবাই। শুধু
ওদের বাড়ি কেন, আশেপাশের সব বাড়িতেই প্রায় একই ছবি। সর্দি, কাশি, জ্বর, পেটের
গন্ডগোল সবই পাড়াপ্রতিবেশির কাছে লুকোতে হচ্ছে। যেন এক লুকোচুরির খেলা! অতি সাধারণ
শারীরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াও যে এমন সুকঠিন বার্তাবহ হয়ে উঠবে কে জানত!
সামাজিক মেলামেশার জগত, অনুভবের জগত, ভালোলাগার জগত সব ছেঁটেকেটে একটা
ছোট্ট বাক্সে যেন বন্দী করে ফেলেছে। সপ্তাহে চারদিন অফিস যাওয়া ব্যাগে
স্যানিটাইজার, ফেসশিল্ড, ডাবল মাক্স, হেয়ার ক্যাপ
পরে, বিরক্তি চেপে, অদৃশ্য শত্রুটির বিরুদ্ধে যুদ্ধসাজ। আগের সেই আড্ডা
নেই, কথা নেই, টিফিন ভাগ করে খাওয়া নেই। জনা তিনেক কলিগ এরমধ্যেই বেশ ভুগে উঠেছে।
তারা হোম আইসোলেশনে থেকে সুস্থ হয়েছে। কিন্তু তাদের নিয়ে সবার মনেই শঙ্কা। একজন
এখনও আশংকাজনক অবস্থায় কোভিড হাসপাতালে। এভাবে বেঁচে থাকায় কোনও আনন্দ আছে? যেন
মরে মরে টিকে থাকা। আর অসুখ হলে ভয়, ব্রাত্য হওয়ার ভয়! সামাজিক বয়কটের ভয়।
কল্পনারও বাইরে ছিল এমন বিরাট সব ঝকমারির ভয়! ভয়ে ভয়ে গুটিয়ে যাচ্ছে মানুষের
ডানাওয়ালা মন! এখন কেমন এককেন্দ্রিক হয়ে উঠছে চিন্তার জগত, সেই কোভিড, সেই করোনা।
সারা বিশ্বসংসারের বুকের ভেতর মহাআতংক হয়ে সেঁধিয়ে গেছে অদৃশ্য এক মারণবীজ! টেস্ট
হবে, তার পজিটিভ বা নেগেটিভ রিপোর্টকার্ডটি আক্রান্ত দুর্ভাগার আগামীদিনগুলোর
ভবিষ্যত নির্ধারক। পজিটিভ হলে মুহুর্মুহু অক্সিমিটারে অক্সিজেন লেভেল মাপা;
পরিস্থিতি হাতের মধ্যে থাকলে হোম আইসোলেশন না থাকলে কোভিড হসপিটাল। রোগী চালান হবে
স্বাদ-গন্ধহীন অন্যজগতে। অক্সিজেন লেভেল কমতে থাকলে, শ্বাসকষ্ট!
জীবনদায়ী অক্সিজেনে ভরপুর যে বাতাসের ওপর জন্মগত অধিকার প্রাণীকুলের,
অদৃশ্য সে সুমধুর বাতাসের অভাবে ভয়ানক শ্বাসকষ্ট আর তারই জেরে মৃত্যু। জীবনের ওপর
নেমে আসা যবনিকা! মরে গিয়েই বাঁচলে কী? নাঃ, একদমই তা নয়। সে শরীর আর তার চেনা ঘরে
পরিজনের মাঝে ফিরবেনা। না তুলসিপাতা, গঙ্গাজল, গীতা না দোয়া দরুদ... পলিথিন
প্যাকেটে মুড়ে কোন সে নদীর ধারে বা তেপান্তরের মাঠের মাঝে করোনায় মৃতদের জন্যে
পৃথক শ্মশানে বা গোরস্থানে। মাটিতে মাটি হয়ে নয়ত ধোঁয়ায় ধোঁয়া হয়ে মিলিয়ে যাওয়া!
তবে পাখিদের
কলতানে রাইয়ের মনটা কেমন হাল্কা আর সুস্থ হয়ে উঠছে ধীরে ধীরে। আজ পৃথিবীতে আরেকটা
নতুন দিন এসেছে ওরা ডেকে ডেকে সেই আনন্দ বার্তাই তো দিচ্ছে। এমন ছোটছোট বিষয়গুলোই মনকে
ভারহীন রাখে, খুশি রাখে। ডিভোর্সের পর বয়স্ক মা বাবাকে নিয়ে রাইয়ের বেঁচে থাকা,
মনেমনে সে খানিক একা হয়েও তত একা নয়। মর্নিংওয়াকের বন্ধুরা, অফিস, শখের ছবি আঁকা
শেখার ক্লাস, বাজার-হাট, মা বাবার দেখভাল, বন্ধুদের গ্রুপের সঙ্গে মাঝেমধ্যে ছোটবড়
ট্যুর সবমিলিয়ে খারাপ কাটছিলনা জীবন তার।কিন্তু এই অতিমারি, এই অদৃশ্য জীবাণু কেমন
তছনছ করছে চিরাচরিত যাকিছু! মানুষের ভাগ্য নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠেছে এই মারণবীজ!
আজকাল বেশ
সাহসী হয়ে উঠেছে বাচ্চাগুলো; মা খাবার আনতে গেলে তিনটে বাচ্চা খোদলটার মুখে এসে উঁকিঝুঁকি
দেয়। মা আরও সব আত্মীয়রা এসে ওদের টুকটুকে লাল লাল ঠোঁটে খাবার গুঁজে দেয়। খেয়েই
আবার হাঁ করে। গায়ে সবুজপালক উঠেছে, চমৎকার দেখতে হচ্ছে। রাইয়ের অনেকটা সময় কাটে
ওদের কীর্তিকলাপ দেখে। বেশ সাহসী হয়ে উঠছে ওরা প্রতিদিন একটু একটু করে। দ্রুত
বাড়ছে! খোদল থেকে অনেকটা মাথা আর শরীর বের করে বাইরের দুনিয়াটাকে যেন বুঝে নিতে
চেষ্টা করে। আর দুচারদিনেই হয়ত উড়বে ওরা! অনেকটা বড় হয়েছে।
কালরাতে
একপশলা বৃষ্টি হয়েছে। গরম ছিলনা বরং মাঝরাতে একটা চাদর গায়ে টেনে নিয়েছিল রাই। আজ
ঘুম ভেঙেছে একটু দেরিতে তবু খানিকক্ষণ চোখ বন্ধ করে শুয়েছিল ও। পাখিরা আজও ডাকছে
কিন্তু কেমন যেন ছন্নছাড়া ডাক! তাতে আনন্দ
নেই কেন? আর্তনাদ আর বিলাপ যেন! কি হয়েছে? রাই বিছানায় উঠে বসে পর্দাটা টেনে সরিয়ে
দেয়। মেঘলা আকাশ, সকালের আলো ম্লান। ঝাপড়া কদমগাছটা কেমন ছায়ামেখে দাঁড়িয়ে! খোদলের
মুখে বাচ্চাগুলো নেইতো! কি হল? নীচে পড়ে গেছে, না উড়ে গেছে? টিয়ের দল কেমন অস্থির
হয়ে আশেপাশের গাছে, কদমের ডালে বসছে আবার উড়ে যাচ্ছে আর ডাকছে! হঠাৎ রাই নজর করে
কদমগাছের মোটা ডালটায় বড় মৌমাছির চাকের মতো একদলা অন্ধকার যেন! সেটা যেন একটু
নড়াচড়াও করল? কি ওটা? ওকে লক্ষ্য করেই টিয়াগুলো ওড়াউড়ি করছে নাকি? খানিক তাকিয়ে
থেকেই রাই নির্মম সত্যিটা বুঝে ফেলে। হ্যাঁ যা ভয় করেছিল তাই। চিলটা, কেমন তক্কে
তক্কে থেকেছে এতদিন ধরে! ওদের বড় হতে দিয়েছে; আজ ছদ্মবেশে খোদলের সামনে এসে ঠোঁট
বাড়িয়ে দিয়েছে আর বাচ্চারা মা খাবার এনেছে ভেবে এক্কেবারে ওর মুখের কাছে এগিয়ে
এসেছে তারপর যা হবার তাই হয়েছে। সব শেষ
করে শয়তানটা গাছের ডালে বিশ্রাম নিচ্ছে। হায়! এমনভাবে অপেক্ষা করে শমন? জীবন শুরু
হতে না হতেই মৃতের জগতে নির্বাসন!
সকালে
আজকাল আর উঠতে ইচ্ছে করেনা রাইয়ের। টিয়ারঝাঁক আর আসেনা। খাঁ খাঁ করে খোদলটা। ছাদে
ছাদে কথাও স্তিমিত হয়ে এসেছে আবার। কোভিড-১৯ এর প্রথম ঢেউয়ে টালমাটাল দুনিয়া খানিক
সামলে উঠতে না উঠতেই দ্বিতীয় ঢেউ এসে পড়েছে। দুরন্ত চিলের মতো যখন তখন নেমে আসছে,
ছোঁ মেরে তুলে নিচ্ছে প্রাণ। কিন্তু
মৃত্যুময় এ জগত যে বড় মায়ার। এই ঘাস মাটি নদী ফুল পাখির কূজনে কেমন প্রাণের সুর জড়িয়ে
থাকে; থাকে সম্পর্কের তীব্র মায়াবী টান! কেন অসময়ে জীবনের শেকড় থেকে প্রাণকে উপড়ে
নেয় মৃত্যুর ঝোড়ো হাওয়া ? কেন?
ছবি ঋণ: তাপস দাস
0 মন্তব্যসমূহ